পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের পাশাপাশি বাজারে নতুন বিনিয়োগ করতে রাষ্ট্রায়ত্ত চার বাণিজ্যিক ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসি।
মঙ্গলবার সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয় বিএসইসির উপপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারিসুল হাসান রিফাতের সই করা চিঠি।
এতে বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ (সংশোধনী ২০১৩) অনুসারে, এককভাবে একটি ব্যাংক তার ইকুইটির ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বর্তমানে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমার নিচে রয়েছে। ফলে বিদ্যমান আইনি সীমার মধ্যেই এ ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে আরো বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ৮০ শতাংশ ব্যক্তিশ্রেণির। এটিকে স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের একটি বাধা হিসেবে মনে করে বিএসইসি। চিঠিতে বলা হয়, স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের জন্য লেনদেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আধিপত্য থাকা প্রয়োজন।
এতে আরো বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত এই চার ব্যাংক এখনো বাংলাদেশ ব্যাংক ঘোষিত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করে নি। ফলে প্রচলিত সুযোগের পাশাপাশি বিশেষ তহবিলের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক তারল্য সংকটের সময় তাই এই ব্যাংকগুলোকে নির্ধারিত সীমার মধ্যে থেকেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে বিএসইসি।
২০২০ সালের শুরুর দিকে পুঁজিবাজারের বড় পতন হলে বাজারের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ছয় দফা নির্দেশনার আলোকে প্রতিটি ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকার ‘বিশেষ তহবিল’ গঠন করার নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, বিশেষ তহবিলের আওতায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা অর্থ ব্যাংকের এক্সপোজার হিসেবে গণ্য করা হবে না। ব্যাংকগুলো নিজস্ব অর্থে এই তহবিল গঠন করতে পারবে। একই সঙ্গে ট্রেজারি বিল/ট্রেজারি বন্ড রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তহবিল গঠন করতে পারবে যে কোনো ব্যাংক।
ইচ্ছে করলে প্রথমে নিজেদের অর্থে তহবিল গঠন করে পরবর্তীতেও ট্রেজারি বিল/ট্রেজারি বন্ড রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ওই পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করা যাবে।
কিন্তু রাষ্টায়ত্ত এই চার বাণিজ্যিক ব্যাংক এখন পর্যন্ত ওই ‘বিশেষ তহবিল’ গঠন করেনি। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারে তাদের নতুন বিনিয়োগও সন্তোষজনক নয় বলে বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।