বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আবার ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দাবি, বিএসইসির ‘না’

  •    
  • ১৮ এপ্রিল, ২০২২ ১৯:৪৩

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে এভাবে ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। পরে পুঁজিবাজার চাঙা হলে সেই ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হয় ধাপে ধাপে।

পুঁজিবাজারে ধসের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আবার প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

রোজার প্রথম কর্মদিবস থেকে টানা দরপতনের মধ্যে সোমবার বিকেলে বিনিয়োগকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ যায় বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের কাছে।

তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো আশ্বাস দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে কমিশন আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানানো হয়েছে।

তবে কমিশনের দুজন শীর্ষ কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেছেন, এ বিষয়ে তারা এখন কিছু ভাবছেন না।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে এভাবে ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। পরে পুঁজিবাজার চাঙা হলে সেই ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হয় ধীরে ধীরে।

মন্দা পুঁজিবাজার রোজার শুরু থেকে বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কের মধ্যে রাখছে। ১১ কর্মদিবসে প্রায় ৩০০ পয়েন্ট সূচক পড়েছে। লেনদেন নেমে এসেছে ৪০০ কোটি টাকার নিচে। বাজার যখন চাঙা ছিল, তখন আধা ঘণ্টাতেই এই পরিমাণ লেনদেন হতো।

এক দিনে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়ার পর থেকে বাজারে শেয়ারের ক্রেতাই পাওয়া যাচ্ছে না। এই পরিমাণ দর কমার পর ক্রেতা উধাও হয়ে যাচ্ছে। দাম আরও কমে যায় কি না, এ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে চাইছে বিনিয়োগকারীরা, ফলে পরের দিনও একই ঘটনা ঘটছে। আর ক্রেতা না থাকা দরপতনকে আরও ত্বরান্বিত করছে।

নতুন করে ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দাবিতে বিএসইসির কার্যালয়ে যাওয়া বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতারা

রোজা শুরুর আগের সপ্তাহে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বসে বিএসইসি তাদের বিনিয়োগে উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করলেও রোজার শুরু থেকে তাদের ভূমিকা একেবারেই পর্যবেক্ষকের। কোনো উদ্যোগ, বক্তব্য- কিছুই আসছে না বিএসইসি থেকে।

এই পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক পেজে আবার ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দাবি উঠতে থাকে। পরে সেই দাবি নিয়ে বিএসইসিতে যায় দেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।

বৈঠকে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন, নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান ও অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকাররা শেয়ার কিনছেন না। প্রতিদিনই ২ শতাংশ করে দর হারিয়ে শেয়ারের ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। আজকে যে দামে শেয়ার লেনদেন হয়েছে এর নিচে যেন নামতে না পারে, তার জন্য আমরা ফ্লোর প্রাইসের দাবি জানিয়েছি।’

বিএসইসি কী বলেছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,‘বিষয়টি কমিশন বিবেচনা করবে বলে বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, এটা তো আমার একার বিষয় না, চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

তবে এই বৈঠকের আগে কমিশনার শামসুদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলার এক প্রশ্নের উত্তরে এসএমএসে বলেছেন, ‘ফ্লোর প্রাইস দেয়ার কোনো ইচ্ছা নেই এই মুহূর্তে। বাজার ভালো আছে। আমি বিনিয়োগকারীদের বলব, তারা যেন গুজবে কান না দেয় আর তারা যেন আতঙ্কিত না হয়।’

গত ১৩ এপ্রিল বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামও নিউজবাংলাকে জানান, ফ্লোর প্রাইস দেয়ার বিষয়ে তারা ভাবছেন না।

বিনিয়োগকারীদের দিনের পর দিন লোকসান হতে থাকা এবং ফ্লোর প্রাইসের দাবি ওঠার বিষয়ে এসএমএসে প্রশ্ন রাখলে সেদিন তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে এ নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। এ নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এই মুহূর্তে আতঙ্কেরও কোনো কারণ নেই। কিছু মানুষ আতঙ্ক ছড়িয়ে ফায়দা লুটতে চাইছে।

নতুন আইপিও বন্ধের দাবি

ফ্লোর প্রাইসের ইস্যু ছাড়াও পুঁজিবাজারে মন্দাভাবের মধ্যে নতুন আইপিও ও রাইট শেয়ার অনুমোদন না দেয়ারও দাবি জানিয়ে এসেছে বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি রাইট শেয়ার ইস্যু ও আইপি অনুমোদন দেয়া উচিত নয়। তাই আপাতত তা বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছি। বাজার ভালো, স্থিতিশীল হলে আবার সেগুলোর অনুমোদন দেয়া হোক।’

পাশাপাশি কোনো মহল ইচ্ছাকৃতভাবে তারল্য সংকট তৈরি করছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি জানানো হয়েছে।

বিএসইসির পক্ষ থেকে বিষয়টি দেখা হবে বলে আশ্বাস পেয়েছেন বলেও জানান রাজ্জাক।

লভ্যাংশের ওপর দ্বৈত কর বাতিলেরও দাবি জানানো হয়েছে।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণার আগে কর কেটে রাখা হয়, আবার লভ্যাংশ ঘোষণার পর বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে কর কেটে নেয়া হয়। দ্বৈত কর প্রত্যাহার করে একবার কর ধার্য করার দাবি জানিয়েছি।’

বিএসইসি কী বলেছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বিএসইসি এটা নিয়ে আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে বৈঠক করবে বলে কমিশনার স্যার জানিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘কমিশনের পক্ষ থেকে আমাদের আরও জানানো হয়েছে যে কিছু ব্রোকার হাউস ইচ্ছাকৃত সেল প্রেসার সৃষ্টি করার লক্ষ্যে ট্রেড শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কম মূল্যে শেয়ার বিক্রির আদেশ দিয়ে থাকে, যা সার্ভেইল্যান্সের মাধ্যমে নজরে এসেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার। এমন ১৫ জন ট্রেডারের সাসপেন্ড করা হয়েছে, পরবর্তী সময়ে জরিমানাও হতে পারে।’

রাজ্জাক বলেন, ‘যারা বাজারে প্যানিক সৃষ্টির লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃত সেল প্রেসার তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আগামীতে আরও কঠোর হবেন বলে জানান কমিশনার।’

এ বিভাগের আরো খবর