বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাভারের চামড়া শিল্পনগরী বন্ধের সুপারিশ

  •    
  • ২৩ আগস্ট, ২০২১ ২০:৫৫

কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন বলেন, ‘তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা রয়েছে সাভারে। হেভি মেটাল এবং ক্রোমিয়াম বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো ব্যবস্থাই নেই। দূষণ কমানোর জন্যই হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি আনা হলো। দূষণ তো কমল না। তাহলে আমরা এটা করতে গেলাম কেন?’

পরিবেশ রক্ষায় ব্যর্থতা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে সাভারের চামড়া শিল্পনগরী বন্ধের সুপারিশ করেছে জাতীয় সংসদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি।

সংসদ ভবনে সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ আসে।

কমিটির পক্ষ থেকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনকে (বিসিক) চিঠি দিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

পরিবেশ দূষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারলে আবারও এই শিল্পনগরী খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে মত দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।

কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে সাভারের ট্যানারি শিল্পনগরী পরিদর্শন করেছিলাম। এ ছাড়া, পরিবেশ অধিদপ্তর একাধিকবার পরিদর্শনে গিয়েছে।

‘যেটা দেখা গেছে তা হলো, যে পরিমাণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রয়েছে, উৎপাদন হয় তার চেয়ে অনেক বেশি। জরিমানা বিভিন্ন সময় করা হয়, কিন্তু সেটা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এ জন্য আমরা বন্ধ করে দিতে বলেছি।’

কমিটি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে, সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে দৈনিক ৪০ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য উৎপাদন হয়। সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রয়েছে ২৫ হাজার ঘনমিটারের, অর্থাৎ দৈনিক ১৫ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য পরিবেশে মিশছে। গত তিন বছরে ১ কোটি ৬৪ লাখ ঘনমিটার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বাইরে থেকে গেছে।

সাবের হোসেন বলেন, ‘তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা রয়েছে সাভারে। হেভি মেটাল এবং ক্রোমিয়াম বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো ব্যবস্থাই নেই। দূষণ কমানোর জন্যই হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি আনা হলো। দূষণ তো কমল না। তাহলে আমরা এটা করতে গেলাম কেন?’

তিনি বলেন, ‘ট্যানারি পরিচালনার জন্য প্রতিবছর যে পরিবেশ ছাড়পত্র নিতে হয় তা নবায়ন না করতেও কমিটি সুপারিশ করেছে।’

চামড়াশিল্পকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পরিবেশে উন্নীত করতে ২০০৩ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্পনগরী গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয় বিসিক। হাজারীবাগের ট্যানারিমালিকদের অনীহার পরও ২০১৭ সালের এপ্রিলে সেখানে যেতে বাধ্য হয় তারা।

শুরুতে শর্ত ছিল শিল্পনগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ট্যানারিগুলো নিজেরাই ইটিপি স্থাপন করবে। ট্যানারিগুলো তা না করায় শিল্প মন্ত্রণালয় প্রকল্পের আওতায় সিইটিপি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ২০১০ সালে প্রকল্প সংশোধন করা হয়। তখন প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ৫৪৫ কোটি টাকা।

এর মধ্যে শিল্পনগরীর কোনো সুবিধাই নিশ্চিত না করে ট্যানারিগুলোকে বারবার স্থানান্তরের সময়সীমা বেঁধে দিতে থাকে শিল্প মন্ত্রণালয়। তাতেও কাজ না হওয়ায় উচ্চ আদালত হাজারীবাগের কারখানাগুলোর গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আদেশ দেয়। এরপর ২০১৭ সালের এপ্রিলে কারখানাগুলো একযোগে স্থানান্তরিত হয়।

সিইটিপির বিভিন্ন কম্পোনেন্টের কাজ সমাপ্ত হওয়ার আগেই ১৩০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদন শুরু করে। আগে হাজারীবাগের বর্জ্য ও দূষিত কেমিক্যাল বুড়িগঙ্গা নদীর পানিতে মিশ্রিত হতো, এখন সাভারের চামড়াশিল্পের দূষণ ধলেশ্বরী নদীর পানিতে মিশে যাচ্ছে।

সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিবেশনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাফর আলম, মো. রেজাউল করিম বাবলু, খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন ও শাহীন চাকলাদার বৈঠকে অংশ নেন।

এ বিভাগের আরো খবর