জাপানি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা বৈশ্বিক চিপ স্বল্পতায় তাদের উৎপাদন কমিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠানটি ৪০ শতাংশ গাড়ি তৈরি কমিয়ে দেবে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠানটির পরিকল্পনা ছিল সেপ্টেম্বরে ৯ লাখ গাড়ি বাজারে ছাড়বে। তবে চিপ সংকটের কারণে তাদের পরিকল্পনা কাটছাঁট করে ৫ লাখ ৪০ হাজার গাড়ি তৈরি করবে বলে জানিয়েছে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠান ভক্সওয়াগন জানিয়েছে, তারাও একই সমস্যায় পড়ে উৎপাদন কমাতে বাধ্য হচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারির সময় বিশ্বে চিপের চাহিদা বেড়ে যায়। বিশেষ করে স্মার্টফোন, স্মার্ট টিভি, গেইমিং কনসোলে এ সময় আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি চিপ সরবরাহ শুরু হয়।
জার্মান প্রতিষ্ঠান ভক্সওয়াগন বৃহস্পতিবার জানায়, তারা চলতি বছরের শুরুতেও চিপ স্বল্পতায় উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছিল।
রয়টার্সকে প্রতিষ্ঠানটি বলে, ‘আমরা মনে করছি তৃতীয় প্রান্তিকে চিপের সরবরাহ অস্থিতিশীল ও কঠিন হবে। আমরা উৎপাদনে পরিবর্তন অস্বীকার করতে পারব না।’
গাড়ির বাজার এমন অস্থিতিশীল হওয়ায় ও সরবরাহ কমে যাওয়ায় এর দাম বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চিপ সংকটে এরই মধ্যে টয়োটার মতো জেনারেল মটরস, ফোর্ড, নিশান, ডেইমলার, বিএমডব্লিউ এবং রেঁনো তাদের গাড়ির উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে।
এখন পর্যন্ত টয়োটা ফ্রান্স, চেক প্রজাতন্ত্র ও তুরস্কে আরও এক সপ্তাহ লকডাউন বাড়িয়ে দেয়ায় সংকট কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। তবে এসব দেশে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গাড়ি সরবরাহ করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে।
টয়োটা অবশ্য কিছু চিপ আগেই মজুত করে রেখেছিল বলে এখন পর্যন্ত গাড়ির উৎপাদন স্বাভাবিকভাবেই চালিয়ে যেতে পারছে।
এর আগে টয়োটা গাড়ির উৎপাদনে সবচেয়ে বাধাগ্রস্ত হয়েছিল এক দশক আগে জাপানের ফুকোশিমায় ভূমিকম্প ও সুনামি হলে।
গাড়ি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এর প্রভাব এশিয়ার বাজারে পড়বে বলে জানায় টয়োটা।
সেপ্টেম্বরে এশিয়া অঞ্চলেই টয়োটা গাড়ির উৎপাদন কমিয়ে দেবে ৩ লাখ ৬০ হাজার।
যুক্তরাষ্ট্রে চিপের উৎপাদন বাড়াতে এরই মধ্যে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি এই খাতে ৩৭ বিলিয়ন ডলার প্রণোদনা সহায়তা দেয়ার কথা জানান।
বৃহস্পতিবার টয়োটার শেয়ার ২০১৮ সালের পর সবচেয়ে কমে গেছে। এদিন শেয়ারের দাম ৪ দশমিক ৪ শতাংশ কমে যায়।