ফাঁকি দেয়া ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকার মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে পপুলার গ্রুপ।
বুধবার দুই চালানে সরকারের পাওনা রাজস্ব পরিশোধ করেছে বলে বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ভ্যাট গোয়েন্দা ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।
এর আগে পুপলার গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে উল্লিখিত টাকার ভ্যাট ফাঁকির প্রমান পেয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দারা।
প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেড এবং পপুলার মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল লিমিটেড।
আলোচ্য প্রতিষ্ঠানটি দুটি লেনদেনের প্রকৃত তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে গোয়েন্দারা।
জরিমানাসহ ফাঁকি দেয়া পুরো টাকাই সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না বলে জানান ভ্যাট গোয়েন্দা অফিস কর্তৃপক্ষ।
ভ্যাট গোয়েন্দা ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, তদন্তকালে প্রতিষ্ঠানের সি এ ফার্ম কর্তৃক প্রত্যায়িত বার্ষিক প্রতিবেদন ও ভ্যাট বিষয়ক অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে এই ফাঁকি উদঘাটন করা হয়।
আমাদের দাবি মেনে নিয়ে পপুলার গ্রুপ ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, ভ্যাট গোয়েন্দার উপপরিচালক নাজমুন নাহার কায়সারের নেতৃত্বে একটি দল পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিমিটেডে ২০১৫ সালের জুলাই হতে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত তদন্ত করেন।
তদন্তে, এই সময়ে বিভিন্ন সেবার বিপরীতে উৎসে ভ্যাট ফাঁকি বাবদ ২ কোটি ৪২ লাখ ৮৯ হাজার ৭৭০ টাকা উদঘাটন করা হয়।
যথাসময়ে এই ভ্যাট পরিশোধ না করায় আইন অনুযায়ী ২ শতাংশ জরিমানা করা হয়। ফলে জরিমানা বাবদ ভ্যাট আসে ১ কোটি ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫৬ টাকা।
অপরদিকে, ভ্যাট গোয়েন্দার উপপরিচালক ফেরদৌসী মাহবুবের নেতৃত্বে আরেকটি দল পপুলার মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল লিমিটেডে তদন্ত করেন।
আলোচ্য প্রতিষ্ঠানটির ২০১৫ সালের জুলাই হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত লেনদেনের তথ্য পর্যালোচনা করে তদন্ত টিম দেখতে পায় এই সময়ে বিভিন্ন সেবার বিপরীতে উৎসে ভ্যাট বাবদ প্রায় ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ফাঁকি দেয়া হয়।
সরকারের পাওনা ভ্যাট যথাসময়ে না দেয়ায় নিয়ম মোতাবেক ২ শতাংশ অতিরিক্ত জরিমানা করা হয়। ফলে এখানে ভ্যাট আসে ৯৬ লাখ ২৬ হাজার ৬০৩ টাকা।
সবমিলে প্রতিষ্ঠান দুটি বিভিন্ন সেবার বিপরীতে মোট ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।
গোয়েন্দা অফিস কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভ্যাট ও জরিমানা বাবদ উদঘাটিত সমুদয় রাজস্ব স্বপ্রণোদিত ও স্বেচ্ছায় সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে পপুলার গ্রুপ কর্তৃপক্ষ।