নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দুটি স্টার্টআপ তহবিল তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর মধ্যে একটি হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব অর্থায়নে, ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল। এখান থেকে উদ্যোক্তাদের ৪ শতাংশ সুদে জামানতবিহীন ঋণ দেয়া হবে।
অপরটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো দিয়ে করাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তাদের বার্ষিক নিট মুনাফা থেকে ১ শতাংশ নিয়ে স্টার্ট আপ তহবিল গঠন করতে।
বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে ব্যাংকার্স সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
গত বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক রপ্তানি খাতে সহজ শর্তে ঋণ দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট স্কিমের আওতায় একটি তহবিল গঠন করে। এর সুদের হার কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। তবে এর ব্যবহার খুবই কম। এজন্য ব্যাংকগুলোকে এ তহবিল থেকে ঋণ বিতরণ বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে ঘোষিত মুদ্রানীতি নিয়েও আলোচনা হয়। গত অর্থবছরে মুদ্রানীতির লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জিত হয়নি। চলতি অর্থবছরে যাতে অর্জিত হয়, সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
গত অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। গত জুন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাংকগুলোকে ঋণ প্রবাহ বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
করোনার এই সময়ে ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার বাড়ায় এ খাতে ঋণ বিতরণের নীতিমালা শিথিল করতেও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার. ট্যাবসহ অন্যান্য ডিজিটাল সামগ্রী কিনতে ৭০ শতাংশ ঋণ দেয়া হয়। বাকি ৩০ শতাংশ দিচ্ছে গ্রাহক। এ হার আরও বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে সামাজিক দায়বদ্ধতার খাতে ব্যয় বাড়ানোর জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট খাতে ঘোষিত পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিয়েও আলোচনা হয়। এখন পর্যন্ত এই তহবিলের ঋণ বিতরণেই সবচেয়ে পিছিয়ে আছে ব্যাংকগুলো। এরই মধ্যে এ তহবিলের আওতায় বিতরণ করা ঋণের সুদের হার ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
সভায় প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট খাতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের সুদের হারসহ অন্যান্য বিষয়াদি অথরাইজড ডিলার (এডি) শাখায় সহজে দৃষ্টিগোচর হয় এমন স্থানে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রদর্শন করা, রপ্তানিকারকদের এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ, রপ্তানি কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অ্যাসোসিয়েশনকে এ বিষয়ে সম্পৃক্ত করে এ স্কিমের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে শাখা ও প্রধান কার্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দেয়া হয়।