রেমিট্যান্সের জাদু শেষ হয়ে আসছে বলে সম্প্রতি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য যে মন্তব্য করেছেন, তার কড়া জবাব দিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বললেন, রেমিট্যান্স কখনও ফুরাবে না।
বুধবার অর্থনৈতিক বিষয়ক এবং ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। রেমিট্যান্স বাড়ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
দেবপ্রিয়কে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রেমিট্যান্স কি জাদু নাকি? রেমিট্যান্স যদি জাদু হয়, তবে জাদু ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু রেমিট্যান্স তো জাদু নয়। সুতরাং রেমিট্যান্স কখনও শেষ হবে না। রেমিট্যান্স যে জায়গায় রয়েছে তা থেকে আরও বাড়বে।’
'২০১৯ সালে যখন আমরা রেমিট্যান্সের বিষয়ে প্রণোদনা দেয়া শুরু করি, তখন থেকেই একটি গোষ্ঠী এর সমালোচনা করে বিরোধিতা করে আসছিল'- যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।
আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, প্রণোদনা দেয়ার বিরোধিতা করে তারা বলেছিলেন, প্রণোদনা দিয়ে রেমিট্যান্স বাড়ানো যাবে না এবং এটা কখনও বাড়বে না। যেটা বাড়ছে তা সাময়িক এবং তা টেকসই হবে না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আগে আমাদের রেমিট্যান্স ছিল ১৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়ার পর প্রথম বছরই প্রবাসীদের পাঠানো আয় ১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। দ্বিতীয় বছরে রেমিট্যান্স প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়, যেটা ছিল অবিশ্বাস্য ধরনের সফলতা।
'এখন সমালোচকরা কী বলবে? বলবে আরও বেশি আসা উচিত ছিল।'
রেমিট্যান্স নিয়ে সংশয় প্রকাশকারীদের দেশপ্রেম কতটা আছে, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন মুস্তফা কামাল।
করোনার প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন, অনেকেই আবার যেতে পারছেন না। তাদের জন্য সরকার কী করছে?
সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রেমিট্যান্সের সঙ্গে এটার কোনো সম্পর্ক নেই। আমার কাছে এমন কোনো অভিযোগ নেই যে, বিদেশে ফেরত যেতে পারছে না প্রবাসীরা। সবচেয়ে বড় কথা যেখানে তাদের যাওয়ার কথা, সেখানে তারা যাচ্ছে। সেটা বন্ধ হয়নি, এটি চলমান প্রক্রিয়া। যখন স্বাভাবিক হবে, তখন আরও বেশি যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার বিষয়টি হলো রেমিট্যান্স প্রবাহে সমস্যা ছিল, সেটি এখন ভালো হচ্ছে। বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা আছে। তাদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থাই আছে।’
তথ্য উপস্থাপন করে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি মাসের ৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৬৭ মিলিয়ন ডলার। একই সময় গত বছর ৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছিল ৪৫০ মিলিয়ন ডলার।
অর্থমন্ত্রী বলেন, 'এরপরও এটা সুবাতাস দেবে না, এমন কথা তারা কেমনে বলেন? যারা এসব সমালোচনা করেন, তারা দেশকে ভালোবাসেন না।'
অর্থনৈতিক ও ক্রয় কমিটির বৈঠকে বুধবার ১১টি দর প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।