বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সুতা নিয়ে তৈরি পোশাক-বস্ত্রকল মালিকদের সমঝোতা

  •    
  • ১১ আগস্ট, ২০২১ ১৯:১৭

সুতার দাম নির্ধারণে চার ব্যবসায়িক সংগঠন বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিটিএলএমই-এর সমন্বয়ে কমিটি হবে। এর আগে দাম এক সেন্টও বাড়ানো হবে না।

সুতার দাম নিয়ে তৈরি পোশাক ও বস্ত্রকলমালিকদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। আপাতত আর দাম বাড়ানো হবে না বলে অঙ্গীকার করেছেন বস্ত্রকলমালিকরা।

বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ, তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ এবং বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল অ্যান্ড লিনেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড অ্যাক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিটিএলএমইএ) নেতাদের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে এক জরুরি বৈঠকে এ সমঝোতা হয়।

বিষয়টি বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় বিজিএমইএ। এতে বলা হয়, আপাতত সুতার দাম এক সেন্টও বাড়বে না, যত দিন না সুতার সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণে কমিটি হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চার ব্যবসায়িক সংগঠন বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিটিএলএমই-এর নেতাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি হবে। তারা বিশ্ববাজারে তুলার মূল্য বাড়লে সুতার সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করবে।

সুতার বাড়তি দাম নিয়ে হঠাৎ পোশাক ও বস্ত্র খাতের মালিকেরা মুখোমুখি অবস্থান নিলে সমস্যা নিরসনে শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় এ বিষয়ে বৈঠক হয়। রাজধানীর বনানীর একটি রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত বৈঠকে চার সংগঠনের নেতারাই উপস্থিত ছিলেন।

তাদের মধ্যে ছিলেন বৈঠকে স্কয়ার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান বিটিএমএর সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী, নিউ এশিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিন চৌধুরী, এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ, হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ, বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সহসভাপতি ফজলুল হক, বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, পরিচালক তানভীর আহমেদ, বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান, সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিটিএলএমইএর চেয়ারম্যান এম শাহদাৎ হোসেনসহ আরও অনেকে।

বিজিএমইএ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানির ইতিবাচক ধারা ধরে রাখতে স্থানীয় বাজারে সুতার দাম আর না বাড়ানোর হবে না। ১০ অগাস্ট মঙ্গলবার সুতার দাম যা ছিল, পরবর্তী বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত সেই দামেই সুতা সরবরাহ করা হবে।

বিটিএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন পোশাক শিল্পের নেতাদের আশ্বস্ত করে বলেন, বিটিএমইএর সদস্যভূক্ত মিলগুলো এলসি ওপেনসহ ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের জন্য নূন্যতম ১৫ দিনের মেয়াদ উল্লেখ করে পি-আই ইস্যু করবে। যা সাম্প্রতিক সময়ে খুব স্বল্প সময়ের মেয়াদ দিয়ে ইস্যু করা হচ্ছিল।

পি-আই হচ্ছে জাহাজীকরণের পূর্বে সরবরাহকারী কর্তৃক ক্রেতার কাছে পাঠানো আনুমানিক চালানপত্র।

সুতার দাম কমানো নিয়ে আগামী সোমবার আরও একটি বৈঠক হবে বলে বিজিএমইএর বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

সুতার দাম নিয়ে অস্তিরতা নিরসনে বৈঠকে বসেন বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিটিএলএমই-এর নেতারা

সভায় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান করোনাভাইরাস মহামারির এই কঠিন সময়ে পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে ৩০এস সুতার (30s yarn) দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণের দাবি জানান।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পি-আই সংক্রান্ত ইস্যুসহ অন্যান্য ইস্যুগুলো সমাধান করতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিটিএলএমইএ ও বিটিএমএ প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি আরবিট্রেশন সেল গঠন করা হবে এবং এই সেল পাক্ষিকভাবে (১৫ দিন পর পর) বৈঠকে বসবে।

এর আগে গত ৯ আগস্ট পোশাক রপ্তানিকারকদের তিন সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং বিটিটিএলএমইএ নেতারা এক বৈঠকে স্থানীয় বাজারে সুতার অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

বৈঠকের পর বিজিএমইএর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, সুতার অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে; যে শিল্পটি কিনা ইতোমধ্যে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও পণ্যের দরপতনের কারনে একটি কঠিন সময় অতিক্রম করছে।

ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে গণহারে টিকাদান কর্মসূচীর কারণে ওই সব দেশে দোকাপাট খুলছে, সেইসঙ্গে দেশগুলোতে খুচরা বিক্রি দ্রুত হারে বাড়ছে। ফলে বাংলাদেশে প্রচুর অর্ডার আসছে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে সুতার অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে রপ্তানিকারকরা সব অর্ডার নিতে পারছেন না। আর বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা যদি অর্ডারগুলো নিতে না পারেন, তাহলে সেগুলো নিশ্চিতভাবেই অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলোতে চলে যাবে।

বুধবারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা আরও বলা হয়, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে সুতা বা তুলা। মোট রপ্তানি পোশাক পণ্যের ৭৫ শতাংশই তুলা দ্বারা প্রস্তত। বাংলাদেশ বিশ্বে তুলা আমদানিতে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। কোনো কারণে যদি এই শিল্পের কাঁচামাল (তুলা বা সুতা) সরবরাহ বা মূল্য প্রভাবিত হয়, তবে সেটি পোশাক শিল্পের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে।

‘কোভিড-১৯ এর কারণে ইতোমধ্যে অনেক পোশাক কারখানা ক্ষতির মুখে পড়েছে। অর্ডার বাতিল, মুল্য না পাওয়া, ডিসকাউন্ট, ফোর্স লোন ইত্যাদি কারণে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারছে না। আবার ব্যবসা থেকে প্রস্থানও করতে পারছে না। কিন্তু দায় দেনা প্রতিদিনই বাড়ছে। এ অবস্থার মধ্যেই কারখানাগুলো আপ্রাণ চেষ্টা করছে ক্ষতি সামলে নিয়ে টিকে থাকতে।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা পরিচালনা করতে গিয়ে খরচ বেড়েছে। অথচ, পণ্যের দর কমেছে ৪ শতাংশের মতো। পরিবহন খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। মজুরি, বিদ্যুৎ, ব্যাংক চার্জ-সব মিলিয়ে গত ৮ বছরে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ৩০ দশমিক ১১ শতাংশ।

‘এমতাবস্থায় পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখা ও শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য সুতার দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি পোশাক শিল্পের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক ও তাৎপর্যপূর্ণ।’

এ বিভাগের আরো খবর