করোনা মহামারির মধ্যেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ হওয়াকে বড় অর্জন হিসেবে দেখেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার অর্থনৈতিকবিষয়ক ও ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ অভিমত দেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো গত ৫ আগস্ট ২০১৯-২০ অর্থবছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধির চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ওই বছর দেশে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ, যদিও সরকারের পূর্বাভাস ছিল ওই বছর প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ।
ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে বুধবার এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা ছিল আরেকটু বেশি হবে। তবে ওই বছর করোনার প্রাদুর্ভাবে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয় দেশে। শুধু আমাদের নয়, সারা বিশ্বে একই অবস্থা দেখা গেছে।
‘নানা প্রতিকূলতার পরেও প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৫১ হয়েছে, এটিকে আমি বড় অর্জন বলব।’
এর কারণ ব্যাখ্যা করে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘করোনার অভিঘাতে ওই সময় প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ এশিয়ার প্রায় সব দেশে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়েছে। এমনকি ভিয়েতনামেও প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়েছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে এশিয়ার দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি যখন ঋণাত্মক, তখন আমরা পজিটিভ। আমি মনে করি, এটি আমাদের জন্য বড় অর্জন।’
২০১৯-২০ অর্থবছরের পাশাপাশি গত অর্থবছরের নয় মাসের (২০২০ সালের ১ জুলাই-২০২১ সালের ৩০ মার্চ) হিসাব কষে বিবিএস বলেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যদিও বাজেটে বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, গেল অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ শতাংশের বেশি।
নতুন অর্থবছরে জিডিপির প্রবদ্ধি প্রাক্কলণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। এটি সংশোধন করা হবে কিনা, এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটি নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির উপর। তবে এখন পর্যন্ত অর্থনীতি যেভাবে চলছে তাতে, আমি আশাবাদী, নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবো।’
করোনার প্রভাবে বাংলাদেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশে নেমে আসার পূর্বাভাস দিয়েছিল বহুজাতিক সংস্থা বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। তবে দুটি সংস্থার অনুমানই প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।
অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, বিবিএসের হিসাব সঠিক এবং বাস্তবতা অনুধাবন করেই তা প্রকাশ করা হয়েছে।