বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ভাই, জুতা লাগবে? ভেতরে আছে দেখাই?’

  •    
  • ৮ আগস্ট, ২০২১ ১২:২৮

শাটার খুলে দোকানের ভেতরে ক্রেতাদের নিয়ে ফের শাটার বন্ধ করে দেয়া হয়। পছন্দ হওয়ার পর দরদামে মিললে ক্রেতা জুতা নিয়ে বেরিয়ে আসেন। পুলিশ বা ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি এলেই তারা দলবেঁধে দৌড় দেন।

অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাটের মতো করোনায় বন্ধ বরগুনা শহরের জুতাপট্টিও। সারা বছর যেখানে জমজমাট কেনাবেচা চলত, সেখানে এখন শাটার নামানো দোকানগুলোর সামনে অলস বসে থাকতে দেখা যায় কর্মীদের।

তবে বন্ধ দোকানের সামনে তারা বসে থাকেন কেন?

জানা গেল, শাটার নামানো থাকলেও ভেতরে টুকটাক বেচাকেনা চলে। ক্রেতা ডেকে দোকানের ভেতর ঢুকিয়ে নেয়া হয়। বাইরে থেকে তা বোঝা যায় না।

ক্রেতারা কীভাবে বোঝেন কোন দোকান খোলা? জুতাপট্টি ঘুরে দেখা গেল, প্রায় প্রতিটি দোকানের সামনেই দুয়েকজন টুল পেতে বসা। কেউ আবার দোকানের সামনের সড়কে দাঁড়িয়ে থাকেন।

গলি ধরে কোনো পথচারী হেঁটে গেলেই তারা জিজ্ঞাসা করছেন, ‘ভাই, জুতো লাগবে? ভেতরে আছে দেখাই?’

শাটার খুলে দোকানের ভেতরে ক্রেতাদের নিয়ে ফের শাটার বন্ধ করে দেয়া হয়। পছন্দ হওয়ার পর দরদামে মিললে ক্রেতা জুতা নিয়ে বেরিয়ে আসেন। পুলিশ বা ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি এলেই তারা দল বেঁধে দৌড়ে পালান। টহল শেষ হলে তারা আবার দোকানে ফিরে আসেন।

দোকানের সামনে ক্রেতাদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় জুতা ব্যবসায়ীদের। ছবি: নিউজবাংলা

জুতা কিনতে আসা ক্রেতাদের বেশির ভাগই প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারী। একজোড়া জুতা কিনতে দলবেঁধে চার থেকে পাঁচজন দোকানে আসেন। বক্তব্য নিতে গেলে তারা দ্রুত সেখান থেকে সরে পড়েন।

মাঝে মাঝে কিছু দোকানি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ধরাও পড়েন। ভ্রাম্যমাণ আদালত বেশ কয়েকজনকে জরিমানা করেছেন, শাস্তিও দিয়েছেন।

তারপরও শাটারের ভেতর দোকান চালিয়ে রাখছেন বেশির ভাগ জুতা ব্যবসায়ী।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্ষায় প্লাস্টিকের জুতা বেশ বিক্রি হয়। এবারও বর্ষার জন্য তারা এ ধরনের জুতা দোকানে তুলেছেন। লকডাউনের কারণে সেগুলো বিক্রি হচ্ছে না। আবার মৌসুম চলে গেলে এর চাহিদাও থাকবে না।

ভাই ভাই সু-এর মালিক সুমন খান বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমের জন্য প্রায় প্রত্যেক ব্যবসায়ী লাখ লাখ টাকার প্লাস্টিক আইটেমের জুতো এনেছেন। বর্ষা চলে গেলে এসব জুতা আর বিক্রি হবে না। লোকসান গুনতে হবে।’

আরেক ব্যবসায়ী লিমন রায় বলেন, ‘আমরা দোকান বন্ধ রেখেছি। কিছু ক্রেতা এসে আমাদের কাছে অনুরোধ করেন। তখন আমরা তাদের কাছে জুতা বিক্রি করি।’

খান সু হাউসের স্বত্বাধিকারী মিরাজ খান বলেন, ‘করোনার শুরু থেকেই আমরা ব্যবসা নিয়ে বিপাকে আছি। প্রতিমাসে দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়।

‘এ ছাড়া পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন এই ব্যবসা। এ অবস্থায় আমাদের বিক্রি বন্ধ থাকলে না খেয়ে মরা ছাড়া উপায় নেই। তাই হয়তো কেউ কেউ বাধ্য হয়েই এভাবে বিক্রি করছেন।’

জুতা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রায় সুজের মালিক নিমাই রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘লকডাউনের নিয়ম মেনে ব্যবসা বন্ধ রাখা হয়েছে। কেউ বিকল্প উপায়ে জুতা বিক্রি করলে সে দায় আমাদের না। আমরা সরকারের বিধিনিষেধ মানতে বাধ্য।’

জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জুতাপট্টিতে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছি। কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জরিমানাও করেছি। এ ছাড়া সেখানে আমাদের নিয়মিত টহল রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর