বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারত থেকে দ্রুত কাঁচামাল পেতে বিজিএমইএর চিঠি

  •    
  • ৫ আগস্ট, ২০২১ ২৩:২৮

বিপুল পরিমাণে কার্যাদেশ পেয়েছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প খাত। কিন্তু ভারত থেকে কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে বিলম্ব তৈরি করছে বাড়তি চাপ। বিষয়টির দ্রুত সমাধান চেয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বিজিএমইএ।

ভারত থেকে আমদানি করা রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের কাঁচামাল পেতে সময় বেশি লাগবে। এতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। সময়মতো ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছানো যাচ্ছে না।

বিষয়টির দ্রুত সমাধান চেয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ।

সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান ভারতীয় হাইকমিশনারকে চিঠি দিয়ে এই সহায়তা চেয়েছেন।

চিঠি দেওয়ার বিষয়ে ফারুক হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারত থেকে রপ্তানিমুখী পোশাক খাতের কাঁচামাল দ্রুত সময়ের মধ্যে পেতে ভারতীয় হাইকমিশনারের সহযোগিতা চেয়ে বুধবার আমি তাকে একটি চিঠি দিয়েছি। চিঠিতে সার্বিক অবস্থা তুলে ধরেছি। আশা করছি, তিনি তার সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।’

বাংলাদেশ ভারত থেকে বছরে ৭ বিলিয়ন ডলারের মতো বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে থাকে। এর মধ্যে অর্ধেকেরই বেশি তৈরি পোশাক শিল্প ও বস্ত্র শিল্পের জন্য ব্যবহৃত তুলা। দেশের মোট চাহিদার ৫৫ শতাংশের মতো তুলা ভারত থেকে আমদানি করে বাংলাদেশ। এছাড়া পোশাক শিল্পের ওভেন পোশাকের জন্য কাপড়ও ভারত থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে।

বিজিএমইএ সভাপতি চিঠিতে লিখেছেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও লকডাউনের কারণে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা লিড টাইম (ক্রয়াদেশ প্রাপ্তি থেকে পণ্য জাহাজীকরণ পর্যন্ত সময়) মেনে পোশাক রপ্তানির চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছেন। বিদেশি ক্রেতারা লিড টাইম সংক্ষিপ্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পণ্য চাচ্ছেন। তবে সরবরাহকারী দেশ থেকে স্বল্প সময়ে কাঁচামাল পাওয়ার ওপরই সেটি অনেকাংশে নির্ভর করছে।

‘বাংলাদেশের পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা তাদের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ভারত থেকে আমদানি করে থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে কাঁচামাল আনতে সময় বেশি লাগছে। বেনাপোলে আমাদের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্টদের কাছে শুনতে পাচ্ছি, নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যু ও প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে ভারতের বনগাঁ কাস্টমস পয়েন্টে আমদানি করা কাঁচামাল ছাড় করতে বেশি সময় লাগছে। সে কারণে পোশাকশিল্পের কাঁচামালবাহী প্রচুর পরিমাণ ট্রাক আটকে আছে। তাতে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।’

হাইকমিশনারকে ভারতীয় অংশের কাস্টমসে পোশাকশিল্পের কাঁচামাল দ্রুত ছাড় করানোর জন্য ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, আমদানি-রপ্তানি মসৃণ করা গেলে উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়বে।

বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে দ্রুততর সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠিতে হাইকমিশনারকে বিশেষ অনুরোধ করেছেন ফারুক হাসান।

বিজিএমইএ সভাপতি নিউজবাংলাকে বলেন, করোনার চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে আগামী গ্রীষ্ম ও বসন্ত মৌসুমের পোশাকের প্রচুর ক্রয়াদেশ আসতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই অনেক প্রতিষ্ঠান আগামী মার্চ পর্যন্ত তাদের কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা অনুযায়ী ক্রয়াদেশের বুকিং পেয়ে গেছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্রয়াদেশ সক্ষমতার চেয়েও বেশি।

বিপুলসংখ্যক মানুষকে করোনার টিকা দেওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে। ফলে ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী গ্রীষ্ম ও বসন্ত মৌসুমে ভালো বিক্রির প্রত্যাশা করছে। সে জন্যই প্রচুর ক্রয়াদেশ আসছে। তা ছাড়া মিয়ানমারে সেনা শাসন ও ভারতে করোনার ভয়াবহতার জন্য কিছু ক্রয়াদেশ স্থানান্তরিত হয়েছে এ দেশে। তার আগ থেকেই চীনের ক্রয়াদেশও বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে আসছিল। সব মিলিয়ে ২০১৯ সালে যখন করোনা ছিল না, তার তুলনায় বর্তমানে ৫-১০ শতাংশ বেশি ক্রয়াদেশ আসছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘বিদেশি ক্রেতারা পণ্য উৎপাদনে আগের মতো আর বাড়তি সময় দিচ্ছে না। সে কারণে কাঁচামাল সময়মতো পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নানা জটিলতায় সেটি হচ্ছে না। আবার চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার জট ও দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন রপ্তানিকারকেরা।’

মহামারির মধ্যেও রপ্তানি আয়ে বড় উল্লম্ফন নিয়ে শেষ হয় ২০২০-২১ অর্থবছর। ৩০ জুন শেষ হওয়া ওই অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ (৩৮.৭৬ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে; যা ছিল আগের ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

তবে ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সার্বিক রপ্তানি আয় কমেছে ১১ দশমিক ১৯ শতাংশ কম। পোশাক রপ্তানি কমেছে ১১ দশমিক ০২ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে ফারুক হাসান বলেন, ‘কোরবানির ঈদের ছুটি এবং লকডাউনের কারণে ১০-১১ দিন পোশাক কারখানা বন্ধ থাকায় জুলাই মাসে রপ্তানি আয় কম এসেছে। ১ আগস্ট থেকে কারখানা খুলেছে। এখন যদি আর কোনো সমস্যা না হয় তাহলে আগামী দিনগুলোতে পোশাকসহ অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বাড়বে বলে আশা করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর