৬৫ বছর পর নীলফামারীর চিলাহাটি ও ভারতের কোচবিহারের হলদিবাড়ি রুটে চলাচল শুরু করেছে পণ্যবাহী ট্রেন।
রোববার পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে এ রুটে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আবারও চালু হয়।চিলাহাটি স্টেশন মাস্টার আশরাফুল ইসলাম জানান, ভারতের ডামডিম স্টেশন থেকে ছেড়ে হলদিবাড়ি সীমান্ত হয়ে পাথরবোঝাই ৪০টি ওয়াগনের একটি পণ্যবাহী ট্রেন চিলাহাটি এসে পৌঁছে বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে।ভারত থেকে এ রেলপথে পণ্য আমদানির এমন চিত্র এক নজর দেখতে চিলাহাটি ও হলদিবাড়ি সীমান্ত এলাকায় শ শ মানুষের ঢল নামে।
পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে আসেন ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের এসআর গুডস গার্ড নির্মল গোরামি, নরদ পোদ্দার, বিনোদ কুমার, মুকেশ কুমার সিং, এলপি বিবেকানন্দ চৌধুরী, মনোজিৎ পাল চৌধুরী, রাবিশ পাটেল, রাকেশ কুমার, এএলপি অরিজিৎ রায়, ঋতু রাজ, অর্ক দাস ও গৌরভ কুমার।
ভারতীয় প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান রেলের পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ ও প্রকল্প পরিচালক (চিলাহাটি সীমান্ত রেল সংযোগ) আব্দুর রহিম, বিভাগীয় রেলের বাণিজ্য কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন, বিভাগীয় লোকমোটিভ প্রকৌশলী আশিষ কুমার, পিডাবলু আই সুলতান মৃধা, আইডি ডাবলু শফিকুল আজিম, চিলাহাটি স্টেশন মাস্টার আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
স্টেশন মাস্টার আশরাফুল বলেন, ভারত থেকে ২ হাজার ২৮৫ টন পাথর নিয়ে ট্রেনটি চিলাহাটি এসেছে। প্রতি ওয়াগনে গড়ে ৫৯ টন করে পাথর রয়েছে।
পাথর বোঝাই ৪০টি ওয়াগনের মালামাল থেকে ভাড়া বাবদ বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৫ লাখের বেশি টাকা আয় করবে। ভারত থেকে নিয়মিত পণ্য এলে চিলাহাটি স্থলবন্দর থেকে বাংলাদেশ রেল প্রতিদিন ৬ থেকে ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবে।
নীলফামারী সদর সার্কেলের (কাস্টমস) রাজস্ব কর্মকর্তা তুষার কান্তি বলেন, দিনাজপুরের চায়না সেভেন ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাক্টশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান এসব পাথর আমদানি করেছে।
তিনি আরও জানান, ব্যবসায়ীরা চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথে আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
রেলওয়ের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর লুৎফর রহমান জানান, পাথরবোঝাই ট্রেনটি সৈয়দপুর স্টেশনে নিয়ে ২০টি ওয়াগন রেখে বাকিগুলো যশোরের নওয়াপাড়া স্টেশনে খালাশ করা হবে। পরে ইঞ্জিনটি ভারতে ফিরে যাবে।
২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ি পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন উদ্বোধন করা হয়েছিল। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তা উদ্বোধন করেছিলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
উদ্বোধনের সাত মাস পর এ পথে পণ্য পরিবহনে উভয় দেশ সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যিক সম্পর্কের আরও একটি নতুন দিগন্ত উম্মোচন হলো। এখন থেকে এ পথে ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে পন্য আমদানি-রপ্তানি করা সম্ভব হবে।