বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খোলার আহ্বান বিজিএমইএ সভাপতির

  •    
  • ৩১ জুলাই, ২০২১ ০০:৫৫

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির স্বার্থে সরকার আমাদের অনুরোধে ১ আগস্ট থেকে কারখানা খোলার অনুমতি দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমি বিজিএমইএর সব সদস্যকে চিঠি দিয়ে বলেছি, আগের মতোই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারাখানায় উৎপাদন কর্মকাণ্ড চালাবেন।’

আগের মতো যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খুলতে অনুরোধ জানিয়েছেন তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।

শুক্রবার রাতে গার্মেন্টস মালিকদের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে তিনি এই অনুরোধ জানান।

এ প্রসঙ্গে ফারুক হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির স্বার্থে সরকার আমাদের অনুরোধে ১ আগস্ট থেকে কারখানা খোলার অনুমতি দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমি বিজিএমইএর সব সদস্যকে চিঠি দিয়ে বলেছি, আগের মতোই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারাখানায় উৎপাদন কর্মকাণ্ড চালাবেন।’

চিঠিতে ফারুক হাসান লিখেছেন, ‘আমরা অবগত আছি যে, দেশে করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সরকারি সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশে সর্বাত্মক লকডাউন রাখার নির্দেশনা জারি রয়েছে। আমি ১৯ জুলাই সম্মানিত সব সদস্যদের জানাই যে, ১ আগস্ট থেকে পোশাক কারখানা পরিচালনার প্রস্তুতি রাখার আশা রাখি।

‘আমি অতি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, পোশাক শিল্পের সার্বিক দিক বিবেচনা করে সরকার আগামী ১ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে পোশাক শিল্পসহ সব রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খোলা রাখার জন্য আজকে একটি নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।’

চিঠিতে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ যে, এই করোনা ক্রান্তিকালে পোশাক শিল্পের প্রয়োজনীয়তা এবং রপ্তানিমুখী শিল্পসমূহ অর্থনীতির উন্নয়নের স্বার্থে খুলে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এই সিদ্ধান্তে আমরা শ্রদ্ধাশীল থেকে পূর্বের মতো সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খোলা রাখার জন্য সদস্যগণকে অনুরোধ করছি। এছাড়া পোশাক শিল্পে কর্মরত সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের জন্য করোনা টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু করার জন্য আবারও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি এবং এই কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে বলে আশাবাদী।’

ফারুক হাসান বলেন, ‘পোশাক শিল্পের সম্মানিত সব সদস্য আমার এবং বর্তমান পর্ষদের ওপর এই ক্রান্তিলগ্নে আস্থা ও ধৈর্য নিয়ে সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।’

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে শাটডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও রোববার থেকে খুলে দেয়া হয়েছে গার্মেন্টসহ রপ্তানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা।

৫ আগস্ট পর্যন্ত কলকারাখানা বন্ধ রাখার কথা জানালেও, ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে পিছু হটেছে সরকার।

শুক্রবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে রপ্তানিমুখী সব শিল্প প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে রোববার অর্থাৎ ১ আগস্ট ভোর ৬টা থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা আরোপিত বিধিনিষেধের আওতা বহির্ভূত রাখা হলো।

ঈদের আগে অপর এক প্রজ্ঞাপনে খাদ্য, চামড়া ও ওষুধ শিল্পকে বিধিনিষেধের আওতা বহির্ভূত রাখার কথা জানায় সরকার।

করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের গতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় চলমান শাটডাউনের সময়সীমা আবারও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

১৫ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে পোশাক কারখানা খুলে দেয়ার অনুরোধ জানান ব্যবসায়ীরা। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে করে চিঠিও দেন তারা।

চিঠিতে পোশাকশিল্প মালিকরা বলেছিলেন, ‘ঈদের ছুটি সংক্ষিপ্ত করে দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানাগুলো যত দ্রুত সম্ভব ঈদের পরে খুলে দিলে দেশের রপ্তানি খাত বহুমুখী বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকে রক্ষা পাবে।’

কিন্তু করোনার তীব্র সংক্রমণের মধ্যে তাদের আবেদনে সাড়া দেয়নি সরকার। গত মঙ্গলবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে করোনাবিষয়ক এক সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন, ‘আমাদের যে লকডাউন চলছে এটা চলতেই থাকবে। আমাদের যে টার্গেট ৫ আগস্ট পর্যন্ত সেই ৫ তারিখ পর্যন্ত লকডাউন চলবে। যদিও আমাদের শিল্পপতিরা এবং আরও অনেকে রিকোয়েস্ট করেছিলেন, আমরা সেই রিকোয়েস্ট বোধহয় গ্রহণ করতে পারছি না।’

তার দুইদিন পর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার আবারও গার্মেন্টসসহ সব ধরনের শিল্পকারখানা খুলে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানায় ব্যবসায়ী নেতারা। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর অনুরোধ জানান তারা।

এ সময় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘আমরা ক্যাবিনেট সচিবের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম সমস্ত বিজনেস পাইপ থেকে। এই যে লকডাউনটা আছে, এটা থেকে যেন সব ধরনের শিল্পকে কাজ করতে সুযোগ দেয়া হয়। এটাই আমরা ওনার কাছে অনুরোধ করতে আসছি।’

‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে ওনার মাধ্যমে এই অনুরোধটা আমরা করেছি। তিনি বলেছেন, উনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। কথা বলে এই ডিসিশনটা খুব তাড়াতাড়ি দেবেন।’

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি, সংক্রমণ, মৃত্যু সবকিছু মাথায় নিয়ে সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সরকার এটা বিবেচনা করবে বলে আমরা আশা করি।’

এসময় দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আমাদের কনসার্নটা বলেছি, ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ থাকলে কী প্রবলেম হচ্ছে। কারণ সাপ্লাই চেইনটা ভেঙে যাচ্ছে। পোর্টে জটের কথা আপনারা সবাই জানেন। আন্তর্জাতিক বাজার হারানোর আশঙ্কা আছে আমাদের। লাস্ট, আমাদের লোকাল ইন্ডাস্ট্রিগুলোতেও সাপ্লাই চেইনে প্রবলেম হচ্ছে।’

তার পরদিনই ব্যবসায়ীদের আবেদনে সাড়া দিয়ে রপ্তানিমুখী শিল্প খুলে দেয়ার ঘোষণা দিল সরকার।

এ বিভাগের আরো খবর