বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মহামারির বছরে ঋণপ্রবাহ দ্বিগুণ বাড়ানোর লক্ষ্য

  •    
  • ২৯ জুলাই, ২০২১ ১৫:০৮

২০২০ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্তও একই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল। তবে করোনার বছরে গত মে পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে এর অর্ধেকের মতো, ৭.৫৫ শতাংশ। তবে আগামী এক বছরে এই প্রবৃদ্ধি ১৪.৮ শতাংশে নিতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত এক বছরে মে পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ যত হয়েছে, আগামী এক বছরে তার প্রায় দ্বিগুণ লক্ষ্যমাত্রা ধরে ঘোষণা হলো মুদ্রানীতি।

বেসরকারি খাতে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ঋণ ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০২০ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্তও একই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল। তবে করোনার বছরে গত জুন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে এর অর্ধেকের মতো, ৮.৪ শতাংশ।

প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের সমান রাখার পরেও অর্জিত পৃবদ্ধির তুলনায় লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ করার পর এই মুদ্রানীতিতে ‘সম্প্রসারণমূলক’ বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হলেও গতবাবের মতো এবারও মহামারির কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করা হয়। এর সংক্ষিপ্তসার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারেও প্রকাশ করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক অর্থবছরে দুটি মুদ্রানীতি (জুলাই-ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি-জুন) ঘোষণা করে আসছিল। কিন্তু ‘বিশেষ তাৎপর্য’ নেই বলে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে একটি মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হচ্ছে।

নতুন মুদ্রানীতিতে যা যা আছে

ব্যাপক অর্থ সরবরাহ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ শতাংশ। গতবারও এটা একই ছিল।

মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭.৮ শতাংশ।

সরকারের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংক ব্যবস্থা হতে নিট ৩৬.৬ শতাংশ ঋণের লক্ষ্য দেয়া হয়েছে।

বেসরকারি খাতে ১৪.৮ শতাংশ ঋণ বৃদ্ধির সংকুলান রাখা হয়েছে।

ফলে ব্যাংকিং খাতে নিট অভ্যন্তরীণ সম্পদ ও নিট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১৬.৫ শতাংশ ও ১০.৪ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপিত হয়েছে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে তেলসহ অধিকাংশ পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে লেনদেন ভারসাম্যের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে নিট বৈদেশিক সম্পদের প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছরের তুলনায় অনেকটা কম হবে বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয়, আমদানি ব্যয় ও রেমিটেন্স অন্তঃপ্রবাহের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১৩, ১৩.৫ ও ২০ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। ফলে, চলতি হিসাবে ২৫৭০ মিলিয়ন ডলার ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও আর্থিক হিসাবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উদ্বৃত্তের কারণে সার্বিক লেনদেন ভারসাম্যে উদ্বৃত্ত ৫১০০ মিলিয়ন ডলার হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৫২ হাজার মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে, যা বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী দেশের ৭.১ মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে সক্ষম।

‘সম্প্রসারণমূলক ও সংকুলানমুখী’

গভর্নর ফজলে কবির লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘সম্প্রসারণমূলক রাজস্ব ও মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত নীতি সহায়তার ফলে ব্যাংকিং খাতে উদ্বৃত্ত তারল্য ও তরল সম্পদের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেলেও করোনা মহামারির প্রভাবে সামষ্টিক অর্থনীতি এখনো প্রয়োজনীয় মাত্রায় ঘুরে দাঁড়ায়নি।

এ পরিস্থিতিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.২ শতাংশ ও মূল্যস্ফীতি ৫.৩ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখার লক্ষ্যকে সামনে রেখে মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মহামারির ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে দেশীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি মানসম্মত নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করতে অত্যন্ত সতর্কতার সাথেই সম্প্রসারণমূলক ও সংকুলানমুখী দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে এই মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।’

ব্যাংককে দেয়া নীতি সহায়তা চালু থাকবে

করোনার প্রথম বছরে ব্যাংকিং খাতকে যেসব সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে, তা বহাল থাকবে বলেও জানান গভর্নর। বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখনও অর্থনীতিতে অনেকটা অনিশ্চয়তাময় পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। এ পরিস্থিতিতে সিআরআর হ্রাসসহ মুদ্রানীতিতে ইতোপূর্বে যেসব শিথিলতা আনয়ন করা হয়েছিল তা পর্যায়ক্রমে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার সময় এখনও আসেনি বলে আমাদের বিবেচনায় প্রতিভাত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এ প্রেক্ষিতে, আমরা তারল্যের মাত্রিক সম্প্রসারণ না ঘটিয়ে সরকারের সম্প্রসারণমূলক রাজস্বনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সতর্কতার সঙ্গে একটি সম্প্রসারণমূলক ও সংকুলানমুখী মুদ্রানীতি প্রণয়ন করেছি। প্রণীত মুদ্রানীতিতে অনুৎপাদনশীল খাতে ঋণের প্রসার না ঘটিয়ে অধিক উৎপাদনশীল ও কর্মসংস্থানসহায়ক খাত ও উদ্যোগসমূহে প্রয়োজনীয় অর্থায়নের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।’

প্রণোদনার ঋণে জোরদার

মুদ্রানীতিতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের উপর বিশেষভাবে জোর দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

করোনার প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ইতোমধ্যে গৃহীত প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর সফল বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নজরদারি জোরদারকরণ।

অর্থনীতির অগ্রাধিকারভিত্তিক খাত হিসেবে কৃষি, সিএমএসএমই, বৃহৎ শিল্প, রপ্তানিমুখী শিল্প ও সেবা খাতের জন্য ইতোমধ্যে নেয়া পুনঃঅর্থায়ন স্কিম বর্ধিতকরণ করা হবে।

অধিকতর ক্ষতিগ্রস্ত অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতসমূহ যেমন- ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পরিবহণ শ্রমিক, হোটেল ও রেস্টুরেন্টের কর্মচারী এবং বেসরকারি পর্যায়ের শিক্ষাখাতের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গের জন্য বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

নতুন উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গঠিত ৫০০ কোটি টাকার এবং তফসিলি ব্যাংকগুলো পরিচালন মুনাফার ১ শতাংশ নিয়ে গঠিত স্টার্ট আপ ফান্ডের আকার পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।

সিএমএসএমই খাতসমূহ, বিশেষ করে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, ক্লাস্টার অ্যান্ড ভ্যালু চেইন এবং নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে ব্যাংকের অর্থায়ন বৃদ্ধিকল্পে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম কার্যকরভাবে চালুকরণ করা হবে।

অর্থনীতিতে মানসম্মত কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর লক্ষ্যে গ্রামাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যাংকগুলোর ন্যূনতম সংখ্যক নিজস্ব জনবল দ্বারা প্রযুক্তি নির্ভর উপ-শাখা খোলার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে মুদ্রানীতিতে।

এ বিভাগের আরো খবর