এক দশক আগেও চীনা গাড়ির প্রতি একদমই অবজ্ঞা ছিল সৌদি আরবের নাগরিকদের। চীনা গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে তাদের সেই বিমুখতা অবশ্য এখন কেটেছে।
সৌদি আরবে এখন চীনা গাড়ির ব্র্যান্ডগুলো চালক ও ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করতে পেরেছে। ফলে দেশটির অন্যতম বড় বাজার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে সৌদি।
আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের সর্ববৃহৎ গাড়ি বিক্রির বাজার চীনের। যেখানে প্রতিবছর বাজার হ্রাস পাচ্ছে ৩ শতাংশ বা মে মাসে সেটা ছিল ২১ লাখ ৩০ হাজার কম। ১৩ মাসের প্রবৃদ্ধির পর এটাই ছিল বড় কোনো পতন।
অবশ্য এই বাজার পতনের কারণ ছিল বিশ্ববাজারে চিপের সংকট এবং কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি।
গত বছরের তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই গাড়ির বিক্রি বেড়েছে। ২০২০ সালের শেষের দিকে চাংগানের শেয়ারদর বেড়ে যায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
সৌদি আরবের কিং ফাহদ ইউনিভার্সিটি অফ পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেলের ফিন্যান্স অ্যান্ড ইকোনমিক বিভাগের অধ্যাপক এবং স্বাধীন অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ রামাদি মনে করেন, চীনের গাড়ি মধ্যম ও কম আয়সম্পন্ন মানুষের মধ্যে চাহিদা তৈরি করতে পেরেছে। সে জন্য খুব জনপ্রিয়তাও পেয়েছে সৌদিতে।
গত বছরের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গত বছর চীনে তৈরি হওয়া ১০টি গাড়ির একটি সৌদি আরব এসেছে।’
এর উদাহরণ তিনি তুলে ধরেন এক চাংগান ব্র্যান্ড দিয়েই। সৌদিতে সম্প্রতি ব্র্যান্ডটির ব্যাপক জনপ্রিয়তা বাড়ার কথা জানান তিনি।
বেস্টসেলিংকারব্লগ ডটকমের বিপণনের তথ্য থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালে সৌদি আরবে চাংগান ব্র্যান্ডের শেয়ার ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ। এর মাধ্যমেই সৌদি আরবের জনপ্রিয় ১০ ব্র্যান্ডের একটি হয় চাংগান।
এর মাত্র দুই বছরের মাথায় গাড়ি নির্মাতা চীনা প্রতিষ্ঠানটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫০ শতাংশ করে। আর জানুয়ারিতেই ব্র্যান্ডটি রিয়াদে তাদের বিশাল এক সার্ভিস সেন্টার খুলে বসে।
রিয়াদভিত্তিক বিপণন ও যোগাযোগ প্রতিষ্ঠান আলমাজদোয়ি চাংগানের পরিবেশক ওয়াফি আল গানিম আরব নিউজকে বলেন, ‘সৌদি আরবে চাংগানের জনপ্রিয় ও সফল হওয়ার কারণ তিনটি। দাম, মান এবং ওয়ারেন্টির মেয়াদ।’
আল-গানিম বলেন, ‘আপনি যদি গাড়ির মান এবং দামের সঙ্গে এর স্পেসিফিকেশন দেখতে যান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে চীনের গাড়ির দিকেই যেতে হবে। সেখানে সাধারণত জাপানি কিংবা কোরিয়ান গাড়ির দিকে আপনি যেতেই পারবেন না।’
তিনি জানান, বর্তমানে চীনের গাড়ির যে বাজার প্রবৃদ্ধি, এটি অব্যাহত রাখতে পারলে ২০২২ সালে সৌদি আরবের গাড়ির বাজারের ১৫ শতাংশ দখল করে নেবে চীন।
এটাকে অন্যতম ইতিবাচক হিসেবেই দেখবে চীন।
আরবে নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের মে পর্যন্ত অর্থাৎ মাত্র ৫ মাসে সৌদি আরবে চীনের চাংগান ব্র্যান্ডের গাড়ি বিক্রি হয়েছে ৫৫ হাজার।