নাটোরের চামড়া বাজারে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানিয়েছেন দুই ধরনের কথা।
বিক্রেতাদের অভিযোগ, তারা চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। তবে চামড়া আড়তদারদের দাবি, সরকারের বেঁধে দেয়া দামেই চামড়া কেনা হচ্ছে।
নাটোর শহরের চকবৈদ্যনাথ এলাকায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজারটি অবস্থিত। ছোট-বড় মিলিয়ে দুই শতাধিক চামড়ার আড়ত রয়েছে এই বাজারে। উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের ৩০টি থেকে ৩৫টি জেলার চামড়া আসে এই বাজারে।
চামড়া ব্যবসায়ীদের আশা, এবারের কোরবানি ঈদে ১৫ থেকে ১৬ লাখ পশুর চামড়া বেচাকেনা হবে এখানে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।
শহরের বড়হরিশপুর বাইপাস এলাকার ওহায়েদ মোল্লা জানান, সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। গরুর চামড়া প্রতিটি ২০০ টাকা ও খাসির চামড়া প্রতিটি ১০ টাকা দাম বলছেন আড়তদাররা।
জেলার রামাইগাছি এলাকার কাশেম মিয়া জানান, তিনি সরকার নির্ধারিত মূল্য ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা বর্গফুট হিসাবে চামড়া কিনেছেন। তবে সে অনুযায়ী, চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না।
পরিবহন খরচ যোগ করে চামড়া বিক্রি করে লোকসান হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
নাটোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ জানান, ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে ৬৫ কোটি ঢাকা বকেয়া পড়ে থাকায় পুঁজি সংকটে রয়েছেন নাটোরের চামড়া ব্যাবসায়ীরা। চলতি বছর তিন লাখ গরুর চামড়া আর ১০ থেকে ১২ লাখ খাসির চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলোর বাজার মূল্য প্রায় ৫০০ কেটি টাকা।
সরকারের বেঁধে দেয়া দামেই চামড়া কেনাবেচা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল জানান, সিন্ডিকেট তৈরি করে কেউ যেন কম দামে চামড়া কিনতে না পারে, সেজন্য ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, চামড়া পাচার রোধ এবং করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউনে যেন চামড়া পরিবহন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্থ না হয় সেদিকে নজর রাখছে পুলিশ।
এরই মধ্যে সাদা পোষাকে নজরদারি করছে পুলিশ। সেই সঙ্গে চামড়া আড়তের পাশে পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।