বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এবার এক কোটি বর্গফুট বেশি চামড়া পাওয়ার আশা

  •    
  • ২১ জুলাই, ২০২১ ১১:৫৭

দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ২০১৮ ও ২০১৯ কোরবানির মৌসুমে গড়ে ১৮ কোটি বর্গফুট চামড়া সংগ্রহ হয়েছিল। ২০২০ সালে কোরবানির চামড়া সংগ্রহ হয়েছিল ১৫ কোটি বর্গফুটের কাছাকাছি। এবার ১৬ কোটি বর্গফুট পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।

এবার পশু কোরবানি থেকে ১৬ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়ার আশা করছেন আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা। এই লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের চেয়ে প্রায় এক কোটি বর্গফুট বেশি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, গরু, ছাগল, খাসি, ভেড়া মিলে ৮০ লাখের কমবেশি পশু কোরবানি হতে পারে।

সারা বছর দেশে যে পরিমাণ পশু জবাই হয়, তার ৬০ শতাংশই হয় এই কোরবানির মৌসুমে।

সরকার বলছে, চলতি বছর পশু কোরবানি হতে পারে এক কোটির কমবেশি। আর এই চাহিদার বিপরীতে সারা দেশে কোরবানির হাটগুলোতে ১ কোটি ১৯ লাখের কিছু বেশি পশু সরবরাহ ছিল বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। সে হিসেবে এবার চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশুর সরবরাহ ছিল বেশি।

আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা দাবি করছেন, সরকার মূলত ঘাটতি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে পশুর সরবরাহ বাড়িয়ে থাকে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে-করোনার নেতিবাচক প্রভাবে গত বছরের মতো এ বছরও অনেক সক্ষম মানুষ কোরবানি দিতে পারছেন না। ফলে পশুর সরবরাহ বেশি হলেও কোরবানি হবে কম।

বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রবিউল আলম নিউজবাংলাকে জানান, দেশে গরুর আকৃতি ও ওজনভেদে চামড়া পাওয়ার পরিমাণও কমবেশি হয়ে থাকে। সাধারণত গরুর চামড়া সর্বনিম্ন ২২ থেকে সর্বোচ্চ ২৬ বর্গফুট পর্যন্ত হয়। তবে গরু থেকে চামড়া পাওয়ার গড় হার হচ্ছে ২৪ বর্গফুট। আর ছাগল-খাসির চামড়ার গড়হার হচ্ছে সাড়ে ৪ বর্গফুট।

চামড়াসংশ্লিষ্ট দুই সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) ও বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএইচএসএমএ) এর তথ্যমতে, দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ২০১৮ ও ২০১৯ কোরবানির মৌসুমে গড়ে ১৮ কোটি বর্গফুট চামড়া সংগ্রহ হয়েছিল। ২০২০ সালে কোরবানির চামড়া সংগ্রহ হয়েছিল ১৫ কোটি বর্গফুটের কাছাকাছি।

চামড়া সংগ্রহের সাধারণ নিয়ম হচ্ছে কোরবানি যারা দেন, তাদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন পাইকার বা আড়তদারদের কাছে।

আড়তদাররা সেই চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণের প্রাথমিক কাজটি সেরে বিক্রি করেন ট্যানারিতে। আর ট্যানারি কেমন দামে চামড়া কিনবে, তা নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

তবে নানা কারণে সৃষ্ট অসন্তোষের জেরে চামড়া সংগ্রহের এই চেইন সিস্টেম সব সময় বজায় থাকে না। ফলে যে পরিমাণ পশু কোরবানি হয়, প্রায় বছর তার থেকে প্রাপ্ত চামড়ার তুলনায় সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ হয় কম।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আশা করছি, এবার চামড়া সংগ্রহ পরিস্থিতির অবনতি ঘটার কোনো আশঙ্কা নেই। সরকার আগেভাগে যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছে। কাঁচা চামড়ার ব্যবসায়ী, ট্যানারি মালিকদেরও প্রস্তুতি ভালো।

‘এখন মাঠপর্যায়ের চামড়া সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা মসজিদ-মাদ্রাসা কমিটি, এতিমখানা কর্তৃপক্ষ, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা যদি সঠিক সময়ে চামড়াগুলো সংগ্রহ করে দ্রুত আড়তে নিয়ে আসতে পারে তাহলে চামড়ার গুণগতমান বজায় থাকবে এবং চামড়া প্রাপ্তিও বাড়বে।’

তবে চামড়া পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা গরম। দ্রুত নিয়ে আসতে না পারলে চামড়ার গুণগতমান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ জন্য দ্রুত চামড়ায় লবণ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সাখাওয়াত উল্লাহ।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সার্বিকভাবে এবার কোরবানি কম হবে। তবে গতবছরের তুলনায় কিছুটা বাড়বে। কিন্তু সেটি ৮০ লাখের বেশি হবে না। এর মধ্যে ৪৫-৪৮ লাখ পিস গরুর চামড়া সংগ্রহ হবে বলে আশা করছি। বাকি চামড়া আসবে ছাগল, খাসি ও ভেড়া থেকে।’

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সভাপতি আফতাব খান বলেন, ‘শহরের চামড়া সন্ধ্যা ৬টা এবং শহরের বাইরের চামড়া যদি রাত ১০টার মধ্যে পোস্তায় আনা যায় তাহলে পচন রোধ করা সম্ভব হবে। ভালো দামও পাবে। আর যারা পারবে না তারা যে যেখানে রয়েছে, সেখানেই চামড়ায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। নতুবা গরমের কারণে চামড়া নষ্ট হতে পারে।’

তিনি জানান, পোস্তার আড়তদার চামড়া কেনা ও লবণজাতে প্রস্তুত। ট্যানারি মালিকরা তাদের বকেয়া কেউ কেউ শতভাগ এবং অনেকে আংশিক পরিশোধও করেছে। ফলে চামড়ার দাম নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না বলেও আশ্বস্ত করেন আফতাব খান।

এ বিভাগের আরো খবর