দেশের বৃহত্তম পাইকারি ভোগপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে কোরবানির ঈদের আগে সাধারণত মসলার দাম বৃদ্ধি পায়। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। এবার প্রায় সব ধরনের মসলার দাম কমছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনার প্রভাবে পণ্যের চাহিদা ও বিকিকিনি কমেছে। উল্টো বাড়তি সরবরাহের কারণে পাইকারি বাজারে কমছে কাঁচা মসলা পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম।
আড়তগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের আগে সবচেয়ে বেশি কমেছে আদার দাম। বর্তমানে খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা দামে। যা গত দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা।
এ ছাড়া প্রতি কেজি মিয়ানমারের আদা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। যা দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল ৯০ টাকায়।
অন্যদিকে, ১৫ দিনের ব্যবধানে কেজিতে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে রসুনের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা দামে। যা আগে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে বাজারে প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দামে। যা বর্তমানে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
ভারতীয় নাসিক জাতের প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে।
দুই সপ্তাহ আগে পাইকারিতে প্রতি কেজি মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৭ থেকে ৩৮ টাকা দামে। যা বর্তমানে ২৮ থেকে ৩২ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের কাঁচা মসলা পণ্যের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইদ্রিছ বলেন, ‘আর দুইদিন পরেই ঈদ। প্রতিবছর এ সময় খাতুনগঞ্জে ব্যস্ততার সীমা থাকে না। কিন্তু এবারের অবস্থা খুবই নাজুক। কোরবানির ঈদকে ঘিরে আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা কাঁচা মসলার আমদানি বাড়ালেও সেই অনুপাতে বিক্রি না হওয়ায় প্রধান তিন কাঁচা মসলার দাম কমেছে।’
খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাবেক সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘গত বছরও করোনার মধ্যে ঈদুল আজহা হলেও এই বছরের তুলনায় বিকিকিনি ভালো ছিল। প্রতিবছর ঈদুল আজহাকে ঘিরে কাঁচা মসলার ভালো ব্যবসা হয়। ঈদের আগ মুহুর্তেও লোকসান দিয়ে কাঁচা মসলা বিক্রি করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।’
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ছিদ্দিক ট্রেডার্সের মালিক ওমর ফারুক ছিদ্দিকী বলেন, ‘শিপমেন্টসহ সব খরচ যোগ করে চীন থেকে প্রতি কেজি রসুন ১৪৫ টাকা ও প্রতি কেজি আদা আমদানিতে খরচ হয়েছে ১৫৫ টাকা। কিন্তু প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা লোকসানে বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য মতে, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার টন মসলা আমদানি হয়। যার আমদানি মূল্য ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা। মসলার মধ্যে ধনিয়া ছাড়া বাকি সবই কম-বেশি বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।