বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঈদের পর শাটডাউনে গার্মেন্টস খোলা রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি

  •    
  • ১৫ জুলাই, ২০২১ ১৯:৩৭

‘যদি পোশাক কারখানা লকডাউনে খোলা রাখা না হয়, তাহলে বায়াররা অর্ডার বাতিল করে অন্য দেশের প্রতি ঝুঁকে যাবে। এতে দেশের পোশাকশিল্প খাত হুমকির মুখে পড়বে।’

শাটডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া কঠোর বিধিনিষেধে ঈদের পরও পোশাক কারখানা খোলা রাখতে চান শিল্পমালিকরা। তাদের দাবি, কারখানা বন্ধ থাকলে বায়াররা তাদের অর্ডার বাতিল করে দেবে।

গত ১ জুলাই থেকে চলমান শাটডাউনে জরুরি সেবা হিসেবে পোশাক কারখানা খোলা রাখা হলেও ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে সব শিল্প ৫ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে সরকার।

তবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করে কারখানা খোলার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছে পোশাকশিল্প মালিকদের বেশ কয়েকটি সংগঠন।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের ওই সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন তৈরি পোশাকশিল্পসংশ্লিষ্ট সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বিটিটিএলএমইএ এবং বিজিএপিএমইএর নেতারা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে দেখা করে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা শিল্পকারখানা খোলা রাখার দাবি জানিয়েছি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আমাদের জানিয়েছেন, শনিবার তারা বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করবেন। বৈঠকের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

দাবিটি সরকার বিবেচনা করে কারখানা খোলা রাখার অনুমতি দেবে বলেও আশা তাদের।

ফারুক হাসান বলেন, ‘যদি পোশাক কারখানা লকডাউনে খোলা রাখা না হয়, তাহলে বায়াররা অর্ডার বাতিল করে অন্য দেশের প্রতি ঝুঁকে যাবে। এতে দেশের পোশাকশিল্প খাত হুমকির মুখে পড়বে।’

যা আছে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে

প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে পোশাকশিল্প মালিকরা বলেছেন, ‘ঈদের ছুটি সংক্ষিপ্ত করে দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানাগুলো যত দ্রুত সম্ভব ঈদের পরে খুলে দিলে দেশের রপ্তানি খাত বহুমুখী বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকে রক্ষা পাবে।’

চিঠিতে করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করে তারা বলেন, ‘গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল এক মাস শিল্পকারখানা বন্ধ থাকার পর ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ তিন মাসে রপ্তানিতে ধস নেমেছিল। ওই সময়ে আপনার ঘোষিত প্রথমে ৫ হাজার কোটি টাকা, পরে দুইবারে আরও সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকাসহ মোট সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার শ্রমিকদের বেতনভাতা বাবদ ঋণ প্রণোদনা এবং ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঋণসুবিধা দেয়ায় দেশের রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানাগুলো টিকে থাকার একটি অবলম্বন খুঁজে পেয়েছিল।’

দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৪ দশমিক ১৭ শতাংশ অর্থ পোশাক খাত থেকে আসে জানিয়ে তারা বলেন, ‘করোনায় বিগত ১৫ মাসে বিশ্ব বাজারের ক্রেতাগোষ্ঠী অনৈতিকভাবে উৎপাদন খরচের চেয়ে কম মূল্যে পণ্যের মূল্য দিলেও টিকে থেকে বাজার ধরে রাখা এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতনভাতা চালিয়ে রাখার স্বার্থে আমরা লোকসান দিয়েও কারখানা চালিয়েছি। এ সময় অনেকেই এ ধাক্কা সামাল দিতে না পেরে কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।’

ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের সকল বাজারই খুলতে শুরু করায় ঘুরে দাঁড়াবার সময় এসেছে বলেও মনে করেন পোশাকশিল্প মালিকরা।

প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে তারা বলেন, ‘এমনিতেই সুতার মূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং কন্টেইনার ও জাহাজ সংকটে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত, আবার এ সময় ঈদের ছুটিসহ প্রায় ১৮-২০ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে এক অনিশ্চয়তার মাঝে লেইট সামার, ক্রিসমাস ও বড়দিন এবং আগামী শীতের কার্যাদেশসমূহ হাতছাড়া হয়ে যাবে। কারণ এক মাসের রপ্তানি শিডিউল গড়বড় হলেই পরের ছয় মাসের রপ্তানি শিডিউলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

পোশাকশিল্প মালিকরা বলছেন এই সুযোগ লুফে নেয়ার চেষ্টা করতে পারে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো। চিঠিতে তারা লিখছেন, ‘এমন অবস্থায় এক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে দেশের রপ্তানি খাত, দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেক উদ্যোক্তা।’

কারখানায় শ্রমিকদের জন্য করোনায় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে জানিয়ে তারা বলেন, ‘দিনের অধিকাংশ সময়ই কর্মক্ষেত্রে সুশৃঙ্খল ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে সময় অতিবাহিত করে তারা রাতে বাসায় ফিরে আবার সকালে কর্মক্ষেত্রে আসছে। যতক্ষণ কর্মক্ষেত্রে থাকছে ততক্ষণ একটি নিরাপদ পরিবেশে থাকছে। অযথা মুভমেন্টের সময় ও সুযোগ নেই।’

ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জে একটি পোশাকশিল্প কারখানা। ছবি: সাইফুল ইসলাম/নিউজবাংলা

রোজার ঈদে কাজের চাপ কম থাকায় ছুটিও কিছুটা শিথিল ছিল। কিন্তু আগামী দিনগুলোতে এই সুযোগ নেই বলে দাবি করছেন পোশাকশিল্প মালিকরা।

তারা লিখেছেন, ‘এখন কাজের প্রচুর চাপ থাকায় ঈদে লম্বা ছুটির সুযোগ নেই। কিন্তু ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সরকার ঘোষিত ১৪ দিন, ঈদের ছুটি ৩ দিন, ফিরে আসতে ২ বা ৩ দিন, সব মিলিয়ে মোট ১৯ বা ২০ দিনের বন্ধ পেলে কোনো অবস্থাতেই শ্রমিকদের কর্মস্থলে ধরে রাখা সম্ভব হবে না। তারা ছুটে যাবে উত্তরাঞ্চল দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে করোনার রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত। ফলে এই বিশালসংখ্যক শ্রমিক জনগোষ্ঠী ওই সকল অঞ্চল থেকে কর্মস্থলে ফিরে আসলে কোভিড সংক্রমণের মাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

২০ দিন বন্ধের পর কারখানা খোলার সঙ্গে সঙ্গে জুলাই মাসের বেতন পরিশোধের বিষয়টি সামনে এলেও সেটি কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা তাদের।

এ বিভাগের আরো খবর