পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ নেয়ার পথ সহজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর ফলে ঋণ নিয়মিত থাকলেই যে কেউ চামড়া কিনতে ঋণ নিতে পারবেন। ঋণ নিতে কোনো টাকা জমা দিতে হবে না। আর যাদের ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে, তারা ৩ শতাংশ টাকা জমা দিয়ে ঋণ নিয়মিত করতে পারবেন। ফলে ঈদের আগেই ঋণ নিয়মিত করে নতুন ঋণ নেয়ার সুযোগ পেলেন চামড়া খাতের ব্যবসায়ীরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত্র সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠোনো হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, ‘ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়া কেনার জন্য (কাঁচা চামড়া ক্রয়-বিক্রয়/ প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ট্যানারিশিল্পসহ চামড়া খাতের সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও শিল্প) প্রতিবছর তফসিলি ব্যাংকগুলো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ বিতরণ করে চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে। চামড়াশিল্পে বিরাজমান সমস্যাসহ কোভিড ১৯-এর নেতিবাচক প্রভাবের কারণে ২০২০ সালে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া কেনার উদ্দেশ্যে বিতরণ করা ঋণের কিছু অংশ অনাদায়ি রয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয়ের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় ঋণ সুবিধা দেয়া তফসিলি ব্যাংকগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে’।
‘পরিস্থিতি পর্যালোচনায়, ২০২০ সালে কোরবানীকৃত পশুর চামড়া ক্রয়ের উদ্দেশ্যে বিতরণকৃত ঋণের অপরিশোধিত অর্থের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের গোডাউনে স্টক বা সহায়ক জামানত থাকা সাপেক্ষে ওই অপরিশোধিত অর্থ ৩ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট গ্রহণ করে সর্বোচ্চ তিন বছর মেয়াদে পুনঃতফসিল করা যাবে। ওই পদ্ধতিতে পুনঃতফসিলীকরণের পর ব্যাংকিং নিয়মাচার অনুসরণপূর্বক তফসিলি ব্যাংকগুলো ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ২০২০ সালের ঈদুল আজহার জন্য পূর্বনির্ধারিত কোটার (বরাদ্দকৃত অর্থের) সমপরিমাণ ঋণ বিতরণ করতে পারবে’।
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, চামড়াশিল্পে ব্যবহৃত দেশীয় কাঁচামালের প্রায় অর্ধেক জোগান আসে প্রতি বছর কোরবানির পশুর চামড়া থেকে। এ সময় চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান নিশ্চিত করা গেলে একদিকে মূল্যবান কাঁচামাল সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে, অন্যদিকে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে উপকৃত হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ঋণগ্রহীতাদের অনুকূলে ২০২১ সালে কোরবানীকৃত পশুর চামড়া ক্রয়ের উদ্দেশ্যে নতুন ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কম্প্রোমাইজড অ্যামাউন্ট আদায় করা যাবে না। নতুন এ সুবিধা চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
কোরবানীকৃত পশুর কাঁচা চামড়া কেনার জন্য প্রতি বছরই ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো। যদিও কয়েক বছর ধরে বিশেষ এ ঋণের বড় অংশ আদায় হচ্ছে না। এ অবস্থায় বেশির ভাগ ব্যাংকই কাঁচা চামড়া ক্রয়ের ঋণ দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আগের ঋণ সমন্বয় সাপেক্ষে নতুন ঋণ দিয়ে আসছে ব্যাংকগুলো।
গত সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এক আলোচনায় চামড়া খাতের ব্যবসায়ীরা তাদের ঋণ ব্লক করার দাবি জানান। পাশাপাশি নতুন ঋণ দেয়ার প্রস্তাব দেন। এরপর অনাদায়ী ঋণ সমন্বয় ছাড়াই ৩ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে পুনঃতফসিল সুবিধা দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।