বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী এবং তার স্ত্রী সুপর্না সুর চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) থেকে এ বিষয়ে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত তাদের অর্থ উত্তোলন ও স্থানান্তর বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে এনবিআর।
বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান দখল করে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত বিদেশ পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে হালদার) সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে সুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
এনবিআরের চিঠি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশনা কার্যকর করতে বলা হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।
একই সঙ্গে আগামী সাত দিনে একটি প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআর গোয়েন্দা সেলের এক কর্মককর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, এস কে সুরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুনীর্তির তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে সুর বাবু এবং তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হলো।
এর আগে এস কে সুর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক বর্তমানে নিবার্হী পরিচালক মো. শাহ আলমের ব্যাংক হিসাব তলব করেছিল এনবিআর।
পি কে হালদারের অনিয়মের সহযোগী হিসেবে আটক ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক এমডি রাশেদুল হক ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জল কুমার নন্দি আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ করেন।
রাশেদুল হক জবানবন্দিতে বলেন, পি কে হালদারের ক্ষমতার অন্যতম উৎস ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।
তার মাধ্যমেই পি কে হালদার বিভিন্ন অনিয়ম চাপা দিতেন। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক ও বর্তমানে নির্বাহী পরিচালক মো. শাহ আলমকে প্রতি মাসে দেয়া হতো মোটা অঙ্কের ঘুষ।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগের সহকারী পরিচালক থেকে যুগ্ম পরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তারা বছরে দুইবার পরিদর্শনে আসতেন।
অনিয়ম না ধরার জন্য প্রতিবার তাদের পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা দেয়া হতো। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ফেব্রুয়ারিতে তাদের ও পরিবারের সদস্যদের হিসাব তলব করে এনবিআর।
আদালতে জবানবন্দির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতোমধ্যে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আর শাহ আলমকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে পরিদর্শন বিভাগের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখন পযন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।