কনটেইনার ও ভেসেল (সমুদ্রগামী বড় জাহাজ) সংকটের কারণে সময় মতো পণ্য রপ্তানি করা যাচ্ছে না। এতে অনেকের রপ্তানি আদেশ বাতিল হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। দ্রুত এ সংকট নিরসনে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছে রপ্তানিকারক, শিপিং লাইনস এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারা।
মঙ্গলবার রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সভায় সরকারের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। সভায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের সভাপতিত্বে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বিটিটিএলএমইএ, বিজিএপিএমইএ, এলএফএমইএবি, বিকডা, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শিপিং লাইন, বাংলাদেশ কনটেইনার শিপিং অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফএ) নেতারা উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
সভায় বলা হয়, রপ্তানি পণ্য পরিবহনে কনটেইনার সংকট এবং যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রগামী বড় জাহাজে চাহিদা অনুযায়ী বুকিং না মেলায় তৈরি পোশাক পণ্য সময়মতো জাহাজীকরণ করা যাচ্ছে না। ফলে বেসরকারী কনটেইনার ডিপোগুলোতে ( আইসিডি) কনটেইনারের জট লাগছে। অন্যদিকে যথাসময়ে রপ্তানি পণ্য পাঠাতে না পেরে অনেকের রপ্তানি আদেশ বাতিল হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, সংকটের কারণে বিজিএমইএ’র অনেক সদস্য প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি পণ্যের চালান আইসিডিতে ১ সপ্তাহ থেকে ১ মাস পর্যন্ত পড়ে থাকায় তারা রপ্তানি আয় পাননি। বিদেশী ক্রেতার কাছে পণ্য পাঠাতে এখন ২ থেকে ৪ সপ্তাহ অতিরিক্ত সময় লাগছে। এ পরিস্থিতি চলমান থাকলে বিশেষ ছাড় দিতে হতে পারে। এতে করে উদ্যোক্তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
তিনি বলেন, কোভিড পরিস্থিতির কারণে পোশাক শিল্প এমনিতেই কঠিন সংকটের মুখে রয়েছে। সময়মতো পণ্য পৌঁছাতে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হওয়ায় উদ্যোক্তারা নতুন করে বিপাকে পড়েছেন। এ সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের সহায়তা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সংগঠনগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সভায় সংকট সমাধানে কিছু প্রস্তাবনাও উঠে আসে। এগুলো হচ্ছে খালি কনটেইনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিক পদ্ধতি অনুসরন করা। জাহাজ ও কনটেইনারের স্বল্পতার সমস্যা সমাধানে বন্দর কর্তৃপক্ষ কনটেইনার ফিডার ভেসেল বার্থিং সংখ্যা বাড়ানো এবং অস্থায়ী ভিত্তিতে হলেও নতুন জাহাজ কোম্পানিকে নতুন কনটেইনার জাহাজ পোর্টে বার্থিংয়ের সুযোগ দেয়া। ক্রেতার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যদি নির্ধারিত কোন ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার/শিপিং লাইন রপ্তানি কার্য সম্পাদন করতে সমস্যার সম্মুখীন হয়, তাহলে অন্য ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার/শিপিং লাইনকে কাজে সহযোগিতা করার জন্য সুযোগ দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া। অস্থায়ী ভিত্তিতে এক্সপোর্ট ইয়ার্ডেও ব্যবস্থা করা।
বিভিন্ন পক্ষের এ সভায় শিপিং এজেন্ট ও ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার কর্তৃক বিভিন্ন নামে বে-আইনী চার্জ ও বর্ধিত হারে চার্জ আদায় বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। রপ্তানী পণ্য চালান হ্যান্ডলিং প্রক্রিয়াকে আরও সময়সাশ্রয়ী করার জন্য বিএফএফএ’কে অনুরোধ জানানো হয়।
বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি (অর্থ) খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন, বিএফএফএ’র সভাপতি কবির আহমেদ, বিকডা’র প্রথম সহ-সভাপতি জওহর রিজভী, বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিটিএলএমইএর সভাপতি এম শাহাদাৎ হোসেন, বিজিএপিএমইএর সভাপতি মো. আব্দুল কাদের, বিটিএমএর পরিচালক সৈয়দ নুরুল ইসলাম, এলএফএমইএবির পরিচালক জিয়াউর রহমান, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ইকবাল আলী শিমুলসহ অনেকে আলোচনায় অংশ নেন।