যশোরে গ্রাহকদের ৪১ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পরিচালকের নামে মামলা করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের রিলেশনশিপ কর্মকর্তা লিকো আহম্মেদ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে এই মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, আনোয়ার জাহিদ ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর চতুরবাড়িয়া এজেন্ট ব্যাংকিং পরিচালনার অনুমতি পান। অনুমতি পাওয়ার তিন বছর পর ২০২০ সালে জাহিদ চতুরবাড়িয়া বাজারে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট আউটলেট চালু করেন।
তখন থেকে তিনি চতুরবাড়িয়া বাজার ও আশপাশের এলাকার প্রায় দেড় হাজার গ্রাহককে ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছিলেন। সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন মেয়াদি আমানতের গ্রাহক। এই শাখার মাধ্যমে দুই হাজারের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল দিতেন।
গত ২০ জুন থেকে জাহিদকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে প্রায় ৩৪ জন গ্রাহক ব্যাংকের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করে। তাদের অভিযোগ, জাহিদসহ আরও বেশ কয়েকজন তাদের ৪১ লাখ ৬০০ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে।
ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের কর্মকর্তারা অনুসন্ধান করে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পান। এরপর তারা মামলার সিদ্ধান্ত নেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে বাঘারপাড়া উপজেলার চতুরবাড়িয়া এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের পরিচালক আনোয়ার জাহিদ, তার স্ত্রী বুলবুলি খাতুন, ভাই মাজেদ মোল্লা ও আব্দুল আজিজ মোল্লা, বেতালপাড়া গ্রামের আমিনুর রহমান, মাগুরার শালিখা উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের মুশফিকুর রহমান রতন ও ছান্দড়া গ্রামের রাজু ভূঁইয়া এবং ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পান্তাডাঙ্গা গ্রামের আমজাদ আলী মোল্লাকে।
এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪-৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সেবাগ্রহীতারা জানান, এই অঞ্চলের অধিকাংশ পরিবারের সদস্য প্রবাসী হওয়ায় তাদের স্বজনদের টার্গেট করেন জাহিদ হাসান। ব্যাংকিং নীতিমালা উপেক্ষা করে উচ্চ হারে লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তার মাধ্যমে টাকা জমা রাখতে প্রলুব্ধ করেন।
তাদের অভিযোগ, জাহিদ ভুয়া রশিদ দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিতেন। সম্প্রতি কিছু গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আসতে শুরু করায় তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বিলের টাকা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জমা হয়নি। সেখান থেকে বের হয়ে আসে আমানতের টাকাও জমা পড়েনি।
বিষয়টি ধরা পড়ার পর থেকেই জাহিদ পলাতক।
চতুরবাড়িয়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আমির হোসেন আমু বলেন, ‘কেউ ৪ লাখ, কেউ ৭ লাখ টাকা জমা দিয়েছে। আবার কেউ দিয়েছে ১০ লাখ টাকা। জাহিদ গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে বোকা বানিয়ে ভুয়া রশিদ দিয়ে টাকা সংগ্রহ করেছে। এখন সে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, মামলাটি ডিবি পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে। তারা অনুসন্ধান চালাচ্ছে।