বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রেমিট্যান্স আয়ে বিরাট লাফ, এক বছরে ২৪.৮ বিলিয়ন ডলার

  •    
  • ৫ জুলাই, ২০২১ ১৮:২৫

# বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে এত বেশি রেমিট্যান্স কখনই আসেনি। টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ২ লাখ ১০ হাজার ১১৫ কোটি টাকা, যা নতুন অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের এক-তৃতীয়াংশের বেশি।

মহামারি করোনাভাইরাসের মধ্যেও অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪.৮ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক আগের বছরের চেয়ে ৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বা ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।

টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ২ লাখ ১০ হাজার ১১৫ কোটি টাকা, যা নতুন অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের এক-তৃতীয়াংশের বেশি।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছর বা অর্থবছরে এত বেশি রেমিট্যান্স কখনই আসেনি।

অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচকের এই উল্লম্ফন মহামারি মোকাবিলা করতে সরকারকে ‘সাহস জুগিয়েছে’ বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রা আয়ের আরেকটি খাত রপ্তানি আয় থেকে গত অর্থবছরে এসেছে ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে; কল্পনারও বাইরে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা এই কঠিন সময়ে বেশি বেশি অর্থ দেশে পাঠিয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন। আমি আবারও এই ভাই-বোনদের কৃতজ্ঞতা জানাই; ধন্যবাদ জানাই।’

বাংলাদেশ ব্যাংক সোমবার যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা ২৪.৮ বিলিয়ন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

শুধু গত জুন মাসেই তারা পাঠিয়েছেন ১৯৪ কোটি ৮ লাখ ডলার। অর্থবছরের প্রতি মাসেই আগের বছরের একই মাসের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। বছরের ১২ মাসের মধ্যে ৭ মাসেই ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। গড় হিসাবে প্রতি মাসে ২ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার করে এসেছে।

মহামারির এই বছরে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বছরের প্রথম মাস গত বছরের জুলাইয়ে; ওই মাসে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা এক মাসের হিসাবে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে মে মাসে, ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার।

২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ হাজার ৮২০ কোটি ৫০ লাখ (১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা ছিল এক অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স।

মহামারির কারণে রেমিট্যান্স কমার আশঙ্কা করা হলেও বাস্তবে তা ঘটেনি। গত বছরের মার্চে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্সপ্রবাহে ভাটা পড়ে। ওই মাসে ১০৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এরপর আর রেমিট্যান্স কমেনি; প্রতি মাসেই বেড়ে চলেছে। রেকর্ডের পর রেকর্ড হয়েছে।

বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছিল, কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কায় ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার রেমিট্যান্স ২২ শতাংশ কমবে। বাংলাদেশে কমবে ২০ শতাংশ।

তবে ২০২০ সাল শেষে দেখা যায়, পাশের দেশ ভারতে ৩২ শতাংশ হ্রাস পেলেও বাংলাদেশে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

আর অর্থবছরের হিসাবে রেমিট্যান্স বাড়ল আরও বেশি: ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ।

দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন দেশে থাকা সোয়া কোটি বাংলাদেশির পাঠানো এই অর্থ। দেশের জিডিপিতে সব মিলিয়ে রেমিট্যান্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো।

রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটেও এই প্রণোদনা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়াতে ২ শতাংশ প্রণোদনা অবদান রেখেছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী কামাল বলেন, ‘১২ বছর আগে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। আমাদের সরকারের সময়ে তা ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে এখন ২৫ বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই করছে।’

‘এই অর্জন নিঃসন্দেহে আর একটি অনন্য ঐতিহাসিক রেকর্ড।’

রিজার্ভ ৪৬.৪৩ বিলিয়ন ডলার

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ভর করে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েই চলেছে। সোমবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৬ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার।

গত ২৮ এপ্রিল অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। তবে ৪ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।

এক মাসেরও কম সময়ে ১ জুন তা ফের ৪৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এক মাসেরও কম সময়ে ২৯ জুন তা আরও বেড়ে ৪৬ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। এক সপ্তাহে অর্থনীতির এই সূচক আরও বেড়ে ৪৬ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে।

২০২১ সালের মধ্যেই রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল।

এ বিভাগের আরো খবর