বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনার মধ্যেও রাজস্ব আদায়ে চমক

  •    
  • ৪ জুলাই, ২০২১ ২১:৪০

আগের অর্থবছরে আদায়ের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ছিল। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, এটি আশাব্যঞ্জক। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে অর্থনীতি আরও বেগবান হবে।

করোনা মহামারির মধ্যেও সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে রাজস্ব আদায় ভালো হয়েছে। এর আগের বছরে যেখানে রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক। সেই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এক বছরের মাথায় প্রায় ১৫ শতাংশ আয় বেড়েছে।

এটিকে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হিসেবে আখ্যায়িত করে অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, এবার যে পরিমাণ আদায় হয়েছে, তা অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। তবে যে ঘাটতি হয়েছে, তা কাম্য নয়।

অর্থনীতিবিদদের মতে, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে অর্থনীতি আরও বেগবান হবে। তাই ঘাটতি আরও কমিয়ে আনার লক্ষ্যে আগামীতে রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা জোরদার করতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, জুনে শেষ হওয়া ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আহরণ হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা।

আগের অর্থবছর ২০১৯-২০ এ মোট আদায় হয়েছিল ‍২ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক।

অর্থনীতির সুস্বাস্থ্যের সঙ্গে রাজস্ব আয়ের একটি সম্পর্ক আছে। অর্থনীতির আকার যত বাড়ে, অর্থাৎ যত বেশি জিডিপিরি প্রবৃদ্ধি হবে, তত বেশি রাজস্ব আয় হওয়ার কথা।

কিন্তু বাংলাদেশে অর্থনীতির সঙ্গে রাজস্ব আয়ের কোনো সামাঞ্জস্য নেই। অর্থনীতির বড় একটি অংশ হিসাবের বাইরে থাকায় (আন্ডারগ্রাউন্ড ইকোনমি) প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি হয়। যে কারণে দেশে রাজস্ব ও জিডিপির ব্যবধান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি।

২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের গতি মোটামুটি ভালো ছিল। ওই বছর দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকে রাজস্ব আয়ে বড় ধরনের ধস নামে।

দেশের আমদানি-রপ্তানি কর্মকাণ্ডে বিঘ্ন ঘটায় আলোচ্য অর্থবছর শেষে তলানিতে পৌঁছায় রাজস্ব আয়। করোনা পরিস্থিতি উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়ায়।

এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে রাজস্ব আহরণে। এর ফলে বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আদায় ইতিবাচক হয়েছে বলে জানান রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারা।

আয়কর, মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট এবং আমদানি শুল্ক-এই তিন উৎস থেকে রাজস্ব আহরণ করে সরকার।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আসে ভ্যাট থেকে (৩৯ শতাংশের বেশি)। ৩৫ শতাংশ আসে আয়কর বা প্রত্যক্ষ কর থেকে। বাকি রাজস্ব আসে আমদানি শুল্ক থেকে। জাতীয় বাজেটের প্রায় ৮৫ শতাংশ অর্থ যোগান দেয় এনবিআর। বাকি অংশ আসে এনবিআর বহির্ভূত খাত থেকে।

রাজস্ব বোর্ডের সবশেষ সাময়িক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সদ্যসমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরে আয়কর থেকে আদায় হয়েছে ৮৫ হাজার কোটি টাকা। লক্ষ্য ছিল ৯৭ হাজার কোটি টাকা। ফলে আয়করে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে আয়করে প্রবৃদ্ধি হয় ১৪ শতাংশ।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের অন্যতম উৎস ভ্যাটে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয় প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা। ফলে ভ্যাটে ঘাটতি ১৬ হাজার কোটি টাকা। আর প্রবৃদ্ধি প্রায় ১১ শতাংশ।

অপরদিকে, আমদানি শুল্ক খাতে আদায় হয়েছে ৭৭ হাজার কোটি টাকা। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯৪ হাজার কোটি টাকা। ফলে আমদানি পর্যায়ে ঘাটতি দাঁড়ায় ১৬ হাজার কোটি টাকা।

ফলে সামগ্রিকভাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আদায় বা ঘাটতি হয়েছে ৪৪ হাজার কোটি টাকা।

সমাপ্ত অর্থবছরে সংশোধিত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ছিল মোট ৩ লাখ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, এটি সাময়িক হিসাব। চূড়ান্ত হিসাবে আদায় আরও বাড়বে।

নতুন ২০২১-২২ অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আয়ের মোট লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে এবার মোট রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি হতে হবে প্রায় ২৩ শতাংশ।

যোগাযোগ করা হলে সরকারি গবেষণা সংস্থা বিআইডিএসের সাবেক উর্ধ্বতন পরিচালক বর্তমানে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনাকালীন ২০২০-২১ অর্থবছরে যে পরিমাণ রাজস্ব আহরণ হয়েছে, তাকে আমি আশাব্যঞ্জক বলব। তবে প্রবৃদ্ধি ভালো হলেও যে ঘাটতি হয়েছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা, আমাদের রাজস্ব আহরণের যথেষ্ট সুযোগ আছে। করোনায় সংকটের মধ্যে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর প্রচেষ্টা আরও জোরদার করতে হবে।’

নতুন অর্থবছরে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদরা একে উচ্চাভিলাষী বলে অভিহিত করলেও বাজেটপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনযোগ্য।’

এ বিভাগের আরো খবর