বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যাত্রী পাচ্ছে না অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট

  •    
  • ৪ জুলাই, ২০২১ ১৯:১৫

ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস জানায়, প্রতিটি ফ্লাইটে গড় লোড যাত্রী ৫০ ভাগেরও কম। ফ্লাইট পরিচালনা করে তাদের খরচ উঠে আসছে না।

বিদেশিগামী যাত্রী পরিবহনের জন্য দেশে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয়া হলেও সংকট কাটছে না দেশি এয়ারলাইনসগুলোর। দেশি সংস্থাগুলো বলছে, অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের আসনের তুলনায় তারা ৫০ ভাগ যাত্রীও পাচ্ছে না।

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রুখতে গত ১ জুলাই থেকে সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। বন্ধ করে দেয়া হয় অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের সব মাধ্যম, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অবশ্য এর একদিন পরেই কেবল বিদেশগামী যাত্রী বহনের জন্য সীমিত পরিসরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

অনুমতি পাওয়ার পরপরই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালানোর ঘোষণা দেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। আর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর ও কক্সবাজারে ফ্লাইট ঘোষণা করে বেসরকারি ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস। তবে অভ্যন্তরীণ রুটে আপাতত কোনো ফ্লাইট না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরেক বেসরকারি এয়ারলাইনস নভো এয়ার।

করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি রুখতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ফ্লাইট চলাচলে গত দেড় বছর ধরে রয়েছে নানা বিধিনিষেধ। আন্তর্জাতিক গন্তব্যে সক্ষমতার দুই-তৃতীয়াংশই ব্যবহার করতে পারছিল না দেশি এয়ারলাইনসগুলো। এ পরিস্থিতিতে তাদের ভরসা ছিল অভ্যন্তরীণ রুট। ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞার কারণে টিকে থাকা নিয়ে সংশয় জানিয়ে আসছে দেশি এয়ারলাইনসগুলো।

২১ এপ্রিলের পর থেকে দেশে গণপরিবহন চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হলেও সে সময় আওতামুক্ত রাখা হয়েছিল আকাশপথকে। প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে আবারও অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে, তার হিসাব মেলাতে পারছে না তারা। এ পরিস্থিতিতে কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়েও বড় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিদেশগামীদের জন্য অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের অনুমতি দেয়া হলেও কাটছে না এ সংকট।

দেশীয় অপারেটরদের সংগঠন এভিয়েশন অপারেটস অ্যাসোসিয়েশনের (এওএবি) মহাসচিব মফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন যে সুযোগটা দেয়া হয়েছে, সেটা শুধু বিদেশগামীদের বহনের জন্য। সরকার এ সুযোগ দিলেও সার্বিকভাবে এভিয়েশন খাতের পরিস্থিতি খুব একটা বদলাবে না।’

গত মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকেই ভুগতে হচ্ছে এভিয়েশন খাতকে। এর মধ্যে গত বছরের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত বন্ধ ছিল অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট। জুলাইয়ে সীমিত আকারে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয়া হলে বেঁচে থাকার অক্সিজেন পায় দেশি এয়ারলাইনসগুলো।

গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতেও শুরু করে তারা। এ অবস্থা চলছিল এ বছরের মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু এপ্রিলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শঙ্কা তৈরি করলে আবারও তৈরি হয় অনিশ্চয়তা। গত ৫ এপ্রিল থেকে দেশে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। সে সময় আন্তঃজেলা পরিবহনগুলোর মতো বন্ধ করা হয় অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচলও। অবশ্য ২১ এপ্রিল থেকে আবারও সীমিত পরিসরে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দেয় বেবিচক।

বেসরকারি ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের জনসংযোগ ও বিপণন বিভাগের মহাপরিচালক কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন প্রতিটি ফ্লাইটে গড় লোড ফ্যাক্টর ৫০ ভাগেরও কম। যাওয়া ও আসা মিলিয়ে যদি ধরা হয়, তাহলে এটা ৪০ ভাগের নিচে নেমে আসবে।’

‘আমরা এর জন্য ভাড়াও বৃদ্ধি করিনি। আমাদের নিয়মিত যে ভাড়া, সেটাই আপতত যাত্রীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু এতে সেবা হয়তো আমরা নিশ্চিত করতে পারছি, কিন্তু একটি ফ্লাইট চালাতে যে খরচ, তা উঠে আসছে না।’

এদিকে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনটি গন্তব্যে তারা যে যাত্রী পাচ্ছেন, তাতে তারা সন্তুষ্ট।

সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রোববার সকালে লন্ডন ফ্লাইটের জন্য আমরা সিলেট থেকে ঢাকায় একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছি, এতে ৬০ জনের মতো যাত্রী আমরা পেয়েছি। ঢাকা থেকে গন্তব্যে যাওয়ার ক্ষেত্রে যাত্রী কম পাওয়া যাচ্ছে। কারণ তারা হয়তো বিভিন্নভাবে চলে যাচ্ছেন, তবে ঢাকায় আসার যাত্রী তুলনামূলক বেশি।’

তিনি জানান, অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আপাতত ৭৮ আসনের ড্যাশ এইট উড়োজাহাজ ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে যদি যাত্রী সংখ্যা বেশি হয়, সেক্ষেত্রে বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন উড়োজাহাজ চালানোর প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।

আকাশপথই নিরাপদ

সড়ক, রেল বা নৌপথের চেয়ে আকাশপথে তুলনামুলক করোনা ঝুঁকি কম বলে দাবি করছেন আকাশপথ সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (আইকাও) নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশের বিমানবন্দরগুলোতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিকল্প নেই।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার বলেন, ‘এক্ষেত্রে আমরা কিছুটা নিশ্চিন্ত থাকতে পারি। যেহেতু এখন শুধু আন্তর্জাতিক যাত্রীরাই ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন, তাই তাদের ক্ষেত্রে পিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ পিসিআর টেস্ট ছাড়া কেউই বিদেশে যেতে পারছেন না।

‘আমরা যখন কোনো যাত্রীকে বোর্ডিং পাস ইস্যু করি, তখন আগেই তার পিসিআর টেস্ট রিপোর্ট নিশ্চিত হয়ে নেই। এ কারণে কিছুটা নিশ্চিন্ত থাকা যায়। এর বাইরেও প্রতিটি ফ্লাইটের আগে উড়োজাহাজ জীবাণুমুক্ত করা হয়। যাত্রীদের স্যানিটাইজার ব্যবহার, মাস্ক নিশ্চিত করা, যন্ত্রের সাহায্যে তাপমাত্রা মাপা এগুলোও কঠোরভাবে প্রতিপালন করা হয়।’

ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের বিপণন ও জনসংযোগ বিভাগের মহাপরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালন করেই একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের অনুমতি পায়। এ ক্ষেত্রে হেলাফেলার সুযোগ নেই।’

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক তৌহিদ উল আহসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এয়ারলাইনস ও যাত্রীরা যেন কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন এ জন্য আমরা কঠোর নজরদারি অব্যাহত রেখেছি।

‘যাত্রীদের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে, বিমানবন্দরে জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে, উড়োজাহাজগুলো জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। কোভিড নিয়ন্ত্রণে যে স্বাস্থ্যবিধিগুলো মানার কথা, সবগুলোই আমরা নিশ্চিত করছি।’

এ বিভাগের আরো খবর