করোনা ও লকডাউনের ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কারণ দেখিয়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাইছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই।
সংগঠনটি বলছে, সক্ষমতা কমে যাওয়ায় বেশিরভাগ শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সচল রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা। এর ফলে অনেকেই ঋণের কিস্তি সময়মত পরিশোধ করতে পারছেন না।
গত বছর দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে কিস্তি পরিশোধ না করেও ঋণখেলাপি না হওয়ার সুবিধা দেয়া হয়। প্রথমে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সুবিধা দেয়া হয়। পরে তা বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত করা হয়। এরপর কিস্তির ২০ শতাংশ পরিশোধ করে আগামী আগস্ট পর্যন্ত সুবিধাটি বাড়ানো হয়েছে।
তবে এতেও সন্তুষ্ট নয় এফবিসিসিআই। আর তারা ২০ শতাংশ ঋণ পরিশোধের শর্তও তুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছে।
বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির এর সঙ্গে বৈঠকে সংগঠনের সভাপতি জসিম উদ্দিন এই আহ্বান জানান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গভর্নর কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমেও ব্যাপক বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে বিধ্বস্ত অর্থনৈতিক কার্যক্রমের অনিশ্চিত পুনরুদ্ধারের এই পটভূমিতে ঋণগ্রহীতারা ব্যাংক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার সক্ষমতা হারাচ্ছেন। বেশিরভাগ শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সচল রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন। এর ফলে তারা ঋণের কিস্তি সময়মত পরিশোধ করতে পারছেন না।
‘বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত সুবিধাসমূহের মেয়াদ করোনা পরিস্থিতির উন্নতি এবং ব্যবসায়কি কার্যক্রম স্বাভাবকি না হওয়া পর্যন্ত বৃদ্ধি করা না হলে বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনিচ্ছাকৃত খেলাপি গ্রাহকে পরিণত হবে। এতে উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম ভীষণভাবে ব্যাহত হবে।’
অনিচ্ছাকৃত খেলাপির পরিমাণ বাড়লে ব্যাংকিং খাতসহ পুরো অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কাও প্রকাশ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
ঋণ পরিশোধের সময় সীমা আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোয় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ধন্যবাদও জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। বলেন, ‘চলমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতিশীলতা এবং বেসরকারি খাতের গতিধারা স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সব ধরনের ব্যবসা বাণিজ্য ও শিল্প খাতের ঋণ শ্রেণিকরণ প্রক্রিয়ার সময়সীমা বিনাশর্তে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’
বৈঠকে এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট এম এ মোমেন, আমীন হেলালী এবং সাবেক পরিচালক মঞ্জুর আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।