বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আগে পণ্য, পরে টাকা

  •    
  • ২৪ জুন, ২০২১ ১৮:০৯

ক্রেতার অর্ডার করা পণ্য হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ওই পণ্যের পেমেন্ট সংশ্লিষ্ট বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে জমা হবে না। এ জন্য পণ্য অর্ডারের বিপরীতে পরিশোধিত টাকা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং সরকার কর্তৃক অনুমোদিত মিডলম্যান প্রতিষ্ঠানের কাছে টাকা জমা থাকবে। অর্ডার করা পণ্য ক্রেতা হাতে পাওয়ার পর ডেলিভারিম্যানের কাছে দেয়া স্বাক্ষরযুক্ত রিসিভ কপি জমা দিলেই পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে টাকা ছাড় হবে। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গেটওয়ে সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে করা হবে।

বিশাল অঙ্কের ছাড় দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর পণ্য সরবরাহ করতে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটের কার্যক্রমে লাগাম টানল সরকার।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান আগেভাগে টাকা পাবে না। ছাড় বা অন্য যেভাবেই পণ্য বিক্রি করা হোক, সেটি গ্রাহককে সরবরাহ করে তবেই নিতে হবে টাকা।

ক্রেতার অর্ডার করা পণ্য হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ওই পণ্যের পেমেন্ট সংশ্লিষ্ট বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে জমা হবে না। এ জন্য পণ্য অর্ডারের বিপরীতে পরিশোধিত টাকা বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং সরকার কর্তৃক অনুমোদিত পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানের কাছে টাকা জমা থাকবে।

অর্ডার করা পণ্য ক্রেতা হাতে পাওয়ার পর ডেলিভারিম্যানের কাছে দেয়া স্বাক্ষরযুক্ত রিসিভ কপি জমা দিলেই পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে টাকা ছাড় হবে। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গেটওয়ে সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে করা হবে।

দেশে এতদিন এই নিয়ম ছিল না। পণ্য অর্ডারের বিপরীতে ক্রেতা টাকা পরিশোধ করার পর পণ্য হাতে পাওয়ার আগেই ওই টাকা মিডলম্যানের মাধ্যমে তিন-চার দিনের মধ্যে বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যেত।

এই পদক্ষেপ কার্যকরে আগামী রোববারের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আনুষ্ঠানিক চিঠি হাতে পাওয়ার পরই বাংলাদেশ ব্যাংক অনলাইনে পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে ক্রেতার পরিশোধিত টাকা হাতে পাওয়ার আগ পর্যন্ত পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেমে ধরে রাখবে।

তবে এটি একটি সাময়িক সিদ্ধান্ত মাত্র। স্থায়ীভাবে অনলাইনে পণ্য কেনার জটিলতা এড়াতে শিগগিরই এসক্রাও মেথলজিলজি সিস্টেম চালু করা হবে। প্রযুক্তিনির্ভর এই পদ্ধতিটির অধিকতর পর্যালোচনা করে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগের উদ্যোগ নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ডিজিটাল বাণিজ্য পরিচালনাসংক্রান্ত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদেরকে অস্বাভাবিক ছাড় দিয়ে পণ্য বিক্রি করে। কিন্তু পণ্য সরবরাহ করতে অস্বাভাবিক সময় নেয়। ফলে গ্রাহকরা উদ্বেগে থাকে।

এদের অফারগুলো এতটাই অস্বাভাবিক যে, সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের কার্যক্রম খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। আর এর ধারাবাহিকতায় এই বৈঠক হয়।

এই বৈঠকের আগে গত দুই দিনে তিনটি ব্যাংক ইভ্যালিসহ ১০টি ই কমার্স প্রতিষ্ঠানে কেনাকাটায় তাদের কার্ড ব্যবহার করতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথমে ব্র্যাক ব্যাংক, পরে ঢাকা ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়া। সিটি ব্যাংক ও ইউসিবিও তাদের গ্রাহকদের সতর্ক করেছে।

ঢাকা ও ব্যাংক এশিয়ার এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক জানিয়ে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, তারাও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে। সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, তার ওপর ভিত্তি করে তারাও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সেই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম শাখার মহাব্যবস্থাপক মেজবাউল হক, ই-কমার্স অফ বাংলাদেশ (ই ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার ও সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াহেদ তমালসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এনবিআর এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্রেতারা পণ্য অর্ডারের বিপরীতে যে মূল্য পরিশোধ করবেন তা সরাসরি বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের কাছে যাবে না। ওই টাকা থার্ড পার্টি বা মিডলম্যানের কাছে জমা থাকবে। এরপর ক্রেতা পণ্য হাতে পেলে মিডলম্যান প্রতিষ্ঠানের কাছে মেসেজ চলে যাবে পণ্য বুঝে পাওয়ার। তখন মিডলম্যান প্রতিষ্ঠান বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করবে। এই সিদ্ধান্তটি কার্যকরে আমরা রোববারের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেব। বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি ব্যাংকগুলোকে জানাবে।’

তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে ডিজিটাল বাণিজ্য পরিচালনায় নীতিমালা করা হচ্ছে। ব্যবসার প্রসার এবং মানুষের সুবিধার জন্যই এই নীতিমালা করা হবে। তবে প্রস্তাবিত নীতিমালায় কোনো শাস্তি বা জেল-জরিমানার সুযোগ নেই। কিন্তু ভোক্তা অধিকার আইন এবং দেশে প্রচলিত অন্যান্য আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া যাবে। নীতিমালায় প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা বন্ধ ও লাইসেন্স বাতিল করার বিধান রাখা হয়েছে। মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয় এবং পাশাপাশি এ খাতে ব্যবসার প্রসার প্রস্তাবিত নীতিমালার অন্যতম লক্ষ্য ‘

হাফিজুর রহমান জানান, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

মেজবাউল হক বলেন, ‘অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন এসক্রাও (তৃতীয় জিম্মাদার পক্ষ) সিস্টেম চালু থাকবে। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গেটওয়ে সিস্টেম কার্যকর করা হবে।’

বৈঠকে থাকা ই-ক্যাপ সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ‘ডিজিটাল বাণিজ্য পরিচালনায় কোনো আইন নেই। আমরা ই-কমার্স বাণিজ্যের প্রসার ও সুষ্ঠু পরিচালনার স্বার্থে ই-কমার্স আইন তৈরির জোর দাবি জানিয়েছি। এ বিষয়ে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠিও দিয়েছি।’

এ বিভাগের আরো খবর