বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভাটার টান বিমায়, দামের সঙ্গে কমছে লেনদেন

  •    
  • ২২ জুন, ২০২১ ১০:১০

৩ জুন বিমা খাতে লেনদেন হয়েছিল ৭৩৪ কোটি টাকা। সেদিন মোট লেনদেনের ৩২ শতাংশের বেশি ছিল এই একটি খাতের। বাজেট ঘোষণার পরের কার্যদিবস ৬ জুন লেনদেন হয় আরও বেশি। সেদিন এই খাতে লেনদেন ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়; যা এই খাতে মোট লেনদেনের ৩৪ শতাংশের বেশি ছিল। অন্যদিকে সোমবার এই খাতে লেনদেন হয়েছে ২৬৪ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ১৭ শতাংশ।

এক বছর ধরে দাম বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। সেই সঙ্গে কোনো দিন লেনদেনের এক চতুর্থাংশ, কোনো দিন এক তৃতীয়াংশের বেশি এক খাতেই।

তবে বিমা খাতে হুমড়ি খেয়ে শেয়ার কেনার প্রবণতায় অবশেষে ভাটা দেখা যাচ্ছে। দামের সঙ্গে সঙ্গে কমতে শুরু করেছে লেনদেনও।

পুঁজিবাজারে বিমা খাতে অস্বাভাবিক আগ্রহ নিয়ে কথা হচ্ছে বারবার। এই সময়ে এই খাত নিয়ে অনেক উচ্চাশার কথা বলাবলি হয়েছে। নানা পরিবর্তনে আয় বাড়বে ব্যাপকভাবে, এমন কথা হয়েছে অসংখ্যবার। আর আয় বাড়া মানে লভ্যাংশ বাড়ার সম্ভাবনায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে বিনিয়োগকারীরা।

তবে আয় বাড়ার এই পূর্বাভাস সত্য প্রমাণ হয়নি। বেশির ভাগ কোম্পানির আয় বেড়েছে অল্পই। হাতে গোনা দুই-একটি কোম্পানিই কেবল ভালো করেছে। আর প্রত্যাশিত লভ্যাংশও পাওয়া সেভাবে।

গত সপ্তাহ থেকেই বিমা খাতে সংশোধন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। আর শেয়ার দর যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল, সেভাবে না কমলেও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।

তবে দাম বাড়ার সময় যেভাবে শেয়ার কেনায় আগ্রহ তৈরি হয়েছিল, কমার সময় আর সেটা দেখা যাচ্ছে না। ফলে কমে আসছে এ খাতের লেনদেন।

গত এক মাসে সোনারবাংলা ইনস্যুরেন্সের শেয়ার দরের চিত্র।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, লেনদেন কমে আসার পেছনে দুটি কারণ থাকতে পারে। দাম আবার বাড়বে, এই আশায় শেয়ার বিক্রি কমিয়ে দিতে পারেন কেউ কেউ। আবার শেয়ার দর অতিমূল্যায়িত মনে করে এই খাতে নতুন করে বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে না-ও চাইতে পারেন তারা। এ কারণে শেয়ার বিক্রি কমে যেতে পারে।

চলতি মাসে ৩ জুন বিমা খাতে লেনদেন হয়েছিল ৭৩৪ কোটি টাকা। সেদিন মোট লেনদেনের ৩২ শতাংশের বেশি ছিল এই একটি খাতের। সেদিন বাজেট ঘোষণার পরের কার্যদিবস ৬ জুন লেনদেন হয় আরও বেশি। সেদিন এই খাতে লেনদেন ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। সেদিন মোট লেনদেনের ৩৪ শতাংশের বেশি ছিল এই খাতে।

অন্যদিকে সোমবার এই খাতে লেনদেন হয়েছে ২৬৪ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া খাতের মধ্যে দ্বিতীয় হলেও এটি সাম্প্রতিককালের মধ্যে সবচেয়ে কম।

আগের দিনও এই খাতে হাতবদল হয়েছিল মোট লেনদেনের ২৭ শতাংশ বা প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এক দিনেই লেনদেন কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে গেল।

বিমার কদর হারানোর মধ্যে আগ্রহ তৈরি করেছে বস্ত্র ও প্রকৌশল খাত। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো সোমবার বস্ত্র খাতে হাতবদল হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এদিন মোট ৩৭৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

লেনদেন চিত্র

৩ জুন বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে মোট লেনদেন ছিল ২ হাজার ২৮২ কোটি টাকা, যার মধ্যে বিমার খাতের লেনদেন ছিল ৭৩৪ কোটি টাকা।

৬ জুন লেনদেন হয় দুই হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা, যার মধ্যে বিমা খাতের অবদান ছিল ৯০৭ কোটি টাকা যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ। সেদিন লেনদেনের ৩৪ শতাংশ ছিল এই একটি খাতের।

উড়তে থাকা প্রভাতী ইনস্যুরেন্সের শেয়ার দর এখন ওঠানামা করে কমতির দিকে

৮ জুন ২০৬৫ কোটি টাকা লেনদেনের দিন বিমা খাতের অংশগ্রহণ ছিল চার ভাগের এক ভাগ বা ৬১২ কোটি টাকা।

৯ জুন বিমার লেনদেন আরও বেড়ে হয় ৬৩৬ কোটি টাকা। সেদিন পুঁজিবাজারে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

১০ জুন পুঁজিবাজারে মোট লেনদেন ছিল ২ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা, এর মধ্যে বিমা খাতে হাতবদল হয় ৫৬০ কোটি টাকা।

দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি শেষে ১৩ জুন মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৬৯ কোটি টাকা, এর মধ্যে বিমা খাতের অবদান ছিল ৩৭৮ কোটি টাকা।

১৪ জুন পুঁজিবাজারে মোট লেনদেন ছিল ১ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা, এর মধ্যে বিমা খাতের ছিল ৪১১ কোটি টাকা।

১৬ জুন লেনদেন হয় ২ হাজার ১০৯ কোটি টাকা, এর মধ্যে বিমার খাতে ছিল ৬১৪ কোটি টাকা।

১৭ জুন মোট লেনদেন হয় ১ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা, এর মধ্যে বিমা খাতের ছিল ৪৮১ কোটি টাকা।

চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার মোট লেনদেন হয় ১ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে বিমার ছিল ৪২২ কোটি টাকা।

পরের দিন তা কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়।

শেয়ারের হিস্যা নিয়ে গুজব ধরা পড়ার পর থেকে ঢাকা ইনস্যুরেন্সের শেয়ার দর কমছে

কেন কমছে লেনদেন

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রুত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিমা খাতের শেয়ার নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরেই আলোচনায়। এই আলোচনার মধ্যেই এই খাতের শেয়ারের দর অনেক বেড়েছে। তবে দর বাড়ার পেছনে কিছু কারণ ছিল। যে কারণগুলো ছিল সে কারণে শেয়ার দর যেহারে বেড়েছে ততটা বাড়া উচিত ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘এখন লেনদেন কমে আসার কারণ হচ্ছে, অতিমূল্যায়িত শেয়ার কেউ কিনতে চাচ্ছে না। ফলে বিক্রি করতে চাইলেও ক্রেতা থাকছে না। ফলে দর কমছে। এখন বিমার বিনিয়োগ যাচ্ছে অন্যান্য খাতে। ব্যাংকের শেয়ার দর বাড়ছে। জুন ক্লোজিং হিসেবে বস্ত্র খাতের প্রতিও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। আল্টিমেটলি বিমা থেকে বিনিয়োগ অন্য খাতে প্রবাহিত হচ্ছে।’

দামও কমেছে

বিমা খাতের তুমুল আলোচিত কয়েকটি কোম্পানির দামের চিত্র দেখলেই এই খাতে দরপতনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠে।

গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার মূল্য গত ১৬ জুনও ছিল ২০১ টাকা ১০ পয়সা। সেটি এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৮৭ টাকা ৫০ পয়সা।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমছে মে মাসের মাঝামাঝি থেকেই

পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর গত ১৪ জুন ছিল ২০৮ টাকা ৯০ পয়সা। সেটি কমে সোমবার দাঁড়িয়েছে ১৮৭ টাকা ১০ পয়সা।

ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর গত ৮ জুন ছিল ১১২ টাকা ৫০ পয়সা। সেটি সোমবার কমে দাঁড়িয়েছে ৯২ টাকা ৫০ পয়সায়।

রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর গত ১৬ জুন ছিল ১৩১ টাকা ৬০ পয়সা। সেটি সোমবার কমে হয়েছে ১১০ টাকা ৮০ পয়সা।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমছে গত ১৬ মে থেকেই। সেদিন দর ছিল ১৪৯ টাকা ৩০ পয়সা। সেটি সোমবার নেমে আসে ১২০ টাকায়।

সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের দর গত ৯ জুন ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা। সেটি কমে সোমবার দাঁড়িয়েছে ৯৬ টাকা ৫০ পয়সা।

এ বিভাগের আরো খবর