আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটকে বাণিজ্যবান্ধব উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি দাবি করেছেন, জাতীয় সংসদে এমন বাণিজ্যবান্ধব বাজেট উপস্থাপনের কারণে শিগগিরই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ভিত আরও শক্ত হবে।
ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনলাইনে চার দিনব্যাপী ‘১৫তম বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল প্লাষ্টিক, প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং ইন্ডাষ্ট্রি ফেয়ার -২০২১’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শনিবার যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ প্লাষ্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ইয়র্কার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেডের সহযোগিতায় এই ভার্চুয়াল মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিয়ে বলেন, বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে হলে দেশের উদ্যোক্তা-রপ্তানিকারকদের অবশ্যই আধুনিক টেকনোলজির ব্যবহার বাড়াতে হবে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। নতুন নতুন ডিজাইন আনতে হবে। এভাবেই বিশ্ববাজার দখল করতে হবে। কিন্তু দেশে এখনও রপ্তানিখাত তৈরি পোশাক নির্ভর। টেকসই রপ্তানি বাণিজ্যির জন্য যা, খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এখনও রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৮৪ ভাগ দখল করে আছে তৈরী পোশাক খাত।
এ সময় টিপু মুনশি জানান, সরকার দেশে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে রপ্তানিখাতকে টেকসই করার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে প্লাস্টিক খাতসহ চামড়া, কৃষি, আইসিটি এবং ফার্মাসিউটিক্যালস খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে রপ্তানি নীতি প্রনয়ন করেছে।
এর পাশাপাশি এসব খাতকে টেকনিক্যাল সাপোর্ট, প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়ার জন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় ইতিমধ্যে ১০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে এক্সপোর্ট কমপিটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নও শুরু করেছে। যেখানে স্থাপিত টেকনোলজি সেন্টারে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরী ও কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
টিপু মুনশি জানান, এর মাধ্যমে আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে ৯০ হাজার দক্ষ জনশক্তি তৈরী করা হবে। যেখানে প্লাষ্টিক খাত অন্যতম অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিবেচিত হবে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী এলডিসি গ্রাজুয়েশনের ঝুঁকি নিয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবসা-বাণিজ্যে দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই। প্রতিযোগিতা করেই বিভিন্ন উন্নতদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে টিকে থাকতে হবে। তবে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সহজ করতে সরকার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ) বা ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (এফটিএ) এর মতো বাণিজ্য চুক্তি করে বাণিজ্য সুবিধা নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইন্টারন্যাশনাল প্লাষ্টিক ফেয়ার (আইপিএফ) অনলাইন এক্সপো আগামী ৫-৮ জুলাই চলবে। এক্সপোতে ১৯টি দেশের প্রায় ৪৮৩টি প্লাষ্টিক কোম্পানি অংশ নিচ্ছে। দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, চায়না, মিশর, ইথিওপিয়া, হংকং, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, সুদান, তাইওয়ান, থাইল্যন্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ভিয়েতনাম।
দর্শনার্থীরা অনলাইনে যুক্ত হয়ে মেলায় প্রদর্শিত সব ধরনের পণ্য দেখার সুযোগ পাবেন এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্লাষ্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আহমেদ, ইয়র্কার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট জুডি ওয়াংসহ অনেকে।