বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিমায় বুঁদ পুঁজিবাজারে হঠাৎ জ্বালানি খাতে আগ্রহ

  •    
  • ১৭ জুন, ২০২১ ১৫:১৬

গোটা খাতের ২২টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টির দাম বেড়েছে। যে আটটির দাম কমেছে, তার মধ্যে চারটির দাম গত কয়েক দিনে বেশ বেড়েছিল। সেখান থেকে সংশোধন হয়েছে। চারটির দাম দীর্ঘদিন ধরে একটি বৃত্তে ওঠানামা করছে। আর লোকসানি একটি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর থেকে প্রায় প্রতিদিন ২ শতাংশ করে কমছে।

বিমা খাত ও একক কোম্পানি বেক্সিমকোতে বুঁদ হয়ে থাকা পুঁজিবাজারে হঠাৎ করেই জ্বালানি খাতে আগ্রহ দেখা গেছে। শতকরা হিসাবে খুব একটা বেশি না হলেও বিশেষ করে সাতটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের শেয়ার আগের দিনের চেয়ে বেশি দামে কিনেছেন বিনিয়োগকারীরা।

গত এক বছর ধরে বিমা খাতে অস্বাভাবিক উত্থানের মধ্যে যেসব খাত পুরোপুরি ঘুমিয়েছিল, তার একটি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। করোনাকালেও যেসব খাতের ব্যবসার ক্ষতি হয়নি, তার মধ্যে অন্যতম এই খাতের বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস সামগ্রিকভাবে পুঁজিবাজার গতি হারালেও এই খাত আশা দেখাচ্ছে শেয়ারধারীদের।

গোটা খাতের ২২টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টির দাম বেড়েছে। যে আটটির দাম কমেছে, তার মধ্যে চারটির দাম গত কয়েক দিনে বেশ বেড়েছিল। সেখান থেকে সংশোধন হয়েছে। তিনটির দাম দীর্ঘদিন ধরে একটি বৃত্তে ওঠানামা করছে। আর লোকসানি একটি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর থেকে প্রায় প্রতিদিন ২ শতাংশ করে কমছে।

যে কারণে এতদিন অনাগ্রহ

একাধিক কোম্পানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া বা শেষ হতে চলা, কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হলেও সেগুলো ঝুলিয়ে রাখা, গণমাধ্যমে মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্তের সংবাদ প্রকাশ হলেও কোম্পানি বা সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না আসাসহ নানা কারণেই এ অবস্থা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

কেপিসিএলের তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি বন্ধ হয়ে গেছে ২০১৮ সালেই। বাকি দুটি কেন্দ্র মে মাস শেষে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে চেষ্টা চলছে। আর বিএসইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘নো ইলেকট্রিসি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে মেয়াদ বাড়তে পারে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ না কিনলে আগের মতো কেন্দ্র বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ দেবে না সরকার।

এর বাইরে সামিট পাওয়ারের ১০২ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র বন্ধ হয়েছে গত ৩১ মার্চ। আরও দুটি কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বছরের শেষে। তবে এই দুটি একেবারেই ছোট কেন্দ্র। একটি সাড়ে ১৩ মেগাওয়াটের, একটি ২৪ দশমিক ৩০ মেগাওয়াটের।

এ ছাড়া ওরিয়ন ইনফিউশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ১০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র বন্ধ হচ্ছে আগামী ২০ জুলাই। ফলে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে উৎকণ্ঠায় আছেন বিনিয়োগকারীরা।

তবে সম্প্রতি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সচিব সাইফুল ইসলাম আজাদ সোমবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শেয়ার বাজারের তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।’

বিদ্যুতের কোন কোম্পানির দাম কত বাড়ল

পাওয়ারগ্রিডের শেয়ার প্রতি দর বেড়েছে ৬.২৭ শতাংশ। কোম্পানির শেয়ার ৪৪ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৭ টাকা ৪০ পয়সা।

ডরিন পাওয়ার লিমিটেডের দর বেড়েছে ৫.১৯ শতাংশ। ৬৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছে ৬৬ টাকা ৮০ পয়সায়।

ডেসকোর শেয়ার দর বেড়েছে ৪.৯৮ শতাংশ। কোম্পানিটির দর ৩৪ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা ৮০ পয়সা।

সামিট পাওয়ারের দর বেড়েছে ৩.৭৪ শতাংশ। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্টিবিউশন কোম্পানির দর বেড়েছে ৩.৪৭ শতাংশ।

বারাকা পাওয়ার, বিডি ওয়েলডিং, ইস্টার্ন টিউব, জিবিবি পাওয়ার, জিবিবি পাওয়ার, খুলনা পাওয়ারের দামও বেড়েছে।

লেনদেনে এগিয়ে বিমাই

বিমার শেয়ার দরের উত্থান নিয়ে নানা কথা থাকলেও বাস্তবে বিমার খাত লেনদেনের শীর্ষে। মোট লেনদেনের ২৬ শতাংশ হয়েছে এই একটি খাতেই। টাকার অংকে ৪৮১ কোটি টাকা।

তবে এদিন এই খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমেছে। মোট ৩৭টি কোম্পানি দর হারিয়েছে, একটি কোম্পানির লেনদেন স্থগিত। বেড়েছে কেবল ১২টির।

সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০টি কোম্পানির মধ্যে চারটিই ছিল বিমা খাতের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের দর। ৭.৬ শতাংশ কমে ১৩১ টাকা ৬০ পয়সার শেয়ার দাঁড়িয়েছে ১২১ টাকা ৬০ পয়সা।

প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের দর ৫.৯১ শতাংশ কমে ২০১ টাকা ১০ পয়সা থেকে কমে ১৮৯ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে।

ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের দর ৭২ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৬৭ টাকা ৮০ পয়সা।

গ্রিনডেল্টার দর ১৪৪ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৩৫ টাকা ৭০ পয়সা।

এই খাতে এদিন সবচেয়ে বেশি বেড়েছে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের দর। ১৩৫ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪৪ টাকা। শতকরা হিসেবে দাম বেড়েছে ৪.৭৪ শতাংশ।

কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের দর ৩.২৮ শতাংশ বেড়ে ৫১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে হয়েছে ৫৩ টাকা ৫০ পয়সা।

এ ছাড়া সন্ধানী ইন্স্যুরেন্সের ১.৮০ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের ১.৪০ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের দশমিক ৩৯ শতাংশ, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে দশমিক ২৯ শতাংশ।

ব্যাংকের আরও একটি নড়বড়ে দিন

সপ্তাহের শেষ দিনেও আগের দুই দিনের মতো দর পতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো। বেশ কিছু ব্যাংকের এদিন শেয়ার দর বাড়লেও বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে।

সবচেয়ে বেশি কমেছে এনআরবিসি ব্যাংকের দর। ৪.২৬ শতাংশ হারিয়ে ৩৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩৩ টাকা ৭০ পয়সা।

রূপালী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১.৮৫ শতাংশ। ৩৭ টাকা ৮০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩৭ টাকা ১০ পয়সা।

সব মিলিয়ে কমেছে ১১টি ব্যাংকের দর। আর বেড়েছে মোট ১০টির দর।

সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ট্রাস্ট ব্যাংকের। ১.৭ শতাংশ। ৩৫ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা ৬০ পয়সা। বাকি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ডাচবাংলার ৮০ পয়সা, ইসলামী ৩০ ও পূবালীর ৩০ পয়সা, মার্কেন্টাইল ২০ পয়সা এবং ঢাকা, ইবিএল, আইসিবি ইসলামী ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের দর বেড়েছে ১০ পয়সা করে।

সূচক ও লেনদেন

ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১ দশমিক ০১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫২ পয়েন্টে।

শরিয়াহ ভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ২ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯০ পয়েন্টে।

বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১৩ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে।

ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ২৩৭টির। দর পাল্টায়নি ২৮টির। লেনদেন হয়েছে মোট ১ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে আড়াইশ কোটি টাকার মতো কম।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের তুলনায় ৪০ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৭০ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে মোট ১০৪ কোটি টাকা।

এ বিভাগের আরো খবর