গত তিন কার্যদিবসে ৩১ শতাংশ দর বৃদ্ধির মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়াত্ব একমাত্র ব্যাংক রূপালীর লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত সভার তারিখ জানানো হলো।
গত ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে আগামী সোমবার লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত সভা করবে ব্যাংকটি।
এখন কেবল ন্যাশনাল ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত বাকি আছে।
এরই মধ্যে ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে ২৮টি ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে একটি কেবল বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আরও একটি ব্যাংক আজ রাতেই সভা করবে বলে জানানো হয়েছে।
ডিসেম্বর ক্লোজিং বা আর্থবছর শেষে ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে বোর্ড সভার করার নিয়ম থাকলেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে তা আরও এক মাস বাড়তি সময় দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
ফলে নিয়ম অনুযায়ী জুনের মধ্যে ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ের কোম্পানিগুলোর অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে বোর্ড সভায় লভ্যাংশ ঘোষণা করতে হবে।
ব্যাংকটির ২০১৯ সালে লভ্যাংশ ঘোষণা করেও বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তিতে তা এখনও বিতরণ করতে পারেনি। তারপরও দর বৃদ্ধি থেমে নেই ব্যাংকটির। পর পর তিন দিন ব্যাংকটির শেয়ার মূল্য বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই। সোমবার ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি দর দাঁড়িয়েছে ৩৭ টাকা।
এই দামে হাতবদল হয় মোট চার লাখ ৭ হাজার ৫১টি শেয়ার। লেনদেন ছিল এক কোটি ৫০ লাখ ১০ হাজার টাকা।
গত ৭ এপ্রিল ফ্লোর প্রাইস বা শেয়ারের প্রান্ত সীমা প্রত্যাহারের দিন ব্যাংকটির শেয়ার দর ছিল ২৪ টাকা ৪০ পয়সা।
৪ মে এক পর্যায়ে দাম কমে ২২ টাকা ১০ পয়সা। সেদিন থেকেই দাম বাড়তে থাকে।
তবে ২৭ মে ৩১ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হওয়ার পর ব্যাংক খাতে যে দর সংশোধন শুরু হয়, তাতে পড়ে যায় রূপালী ব্যাংক। এক পর্যায়ে ৯ জুন দাম কমে হয়ে যায় ২৮ টাকা।
১০ জুন ২ টাকা ৮০ পয়সা বাড়ার সুযোগ থাকলেও বাড়ে ২ টাকা ৭০ পয়সা। অথচ সেদিন ব্যাংক খাতের প্রায় সব কটি কোম্পানি দর হারায়।
গত তিন কার্যদিবসে রূপালী ব্যাংকের শেয়ার মূল্য বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি
আর রোববার ব্যাংক খাতের ৩১টি কোম্পানির দর হারানোর মধ্যে উজ্জ্বল ছিল রূপালী ব্যাংকই। আর সোমবার এ খাতের ২০টি ব্যাংকের শেয়ারের দর বাড়লেও রূপালী ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।
সেদিনও কেবল একটি দাম ৩৩ টাকা ৭০ পয়সায় পাঁচ লাখেরও বেশি শেয়ার হাতবদল হয়।
ব্যাংকটিতে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়ার পর তিনি ইতোমধ্যে কাজে যোগদান করেছেন। যোগদান করেই বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করেছেন। রূপালী ব্যাংককে নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হঠাৎ আগ্রহ বৃদ্ধির কারণ চেয়ারম্যান যোগদান করার পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণা আসার সম্ভাবনা।
গত বছর ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেও তা দিতে পারেনি ব্যাংকটি। এবারও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষিত নীতিমালার কারণে লভ্যাংশ দিতে পারবে না বলে একটি অনলাইন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছিল। এর পর থেকেই ব্যাংকটির শেয়ার দর হারাতে থাকে।
তবে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি অনুযায়ী তাদের লভ্যাংশ ঘোষণায় এবার কোনো বাধা নেই।
গত ১ এপ্রিল ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মনজুর হোসেনের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর দুই মাসের মতো শূন্য ছিল পদনি। ৩০ মে নিয়োগ দেয়া হয় হাজী সানাউল হককে। তিনি কাজে যোগ দেন দুই এক দিন পর। লভ্যাংশ ঘোষণার সময়ে চেয়ারম্যানের পদ ফাঁকা থাকার কারণেই মূলত এই বিলম্ব হয়েছে।