বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্যাংকে পতনের মধ্যে রূপালী ব্যাংকের উল্টো দৌড়

  •    
  • ১৩ জুন, ২০২১ ২১:০৮

গত বছর ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেও তা দিতে পারেনি ব্যাংকটি। এবারও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষিত নীতিমালার কারণে লভ্যাংশ দিতে পারবে না বলে একটি অনলাইন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছিল। এর পর থেকেই ব্যাংকটির শেয়ার দর হারাতে থাকে। তবে ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি অনুযায়ী তাদের লভ্যাংশ ঘোষণায় এবার কোনো বাধা নেই।

পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতে দাম যখন কমছেই, তখন ২০১৯ সালে লভ্যাংশ ঘোষণা করেও বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তিতে তা বিতরণ করতে না পারা রূপালী ব্যাংকে উল্টো চিত্র।

পর পর দুই দিন ব্যাংকটির শেয়ার মূল্য বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই। এর মধ্যে রোববার লেনদেন শুরু হওয়ার পর কেবল একটি দামেই বিক্রি হয়েছে।

আগের দিন দাম ছিল ৩০ টাকা ৭০ পয়সা। সর্বোচ্চ ৩ টাকা দাম বাড়া সম্ভব ছিল। সকালে এই দামেই শুরু হয় লেনদেন, শেষও হয় এই একটি দামেই।

এই দামে হাতবদল হয় মোট পাঁচ লাখ ২৫ হাজার ১৫০টি শেয়ার। লেনদেন ছিল এক কোটি ৭৬ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।

গত ৭ এপ্রিল ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের দিন ব্যাংকটির শেয়ার দর ছিল ২৪ টাকা ৪০ পয়সা।

৪ মে এক পর্যায়ে দাম কমে ২২ টাকা ১০ পয়সা। সেদিন থেকেই দাম বাড়তে থাকে।

তবে ২৭ মে ৩১ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হওয়ার পর ব্যাংক খাতে যে দর সংশোধন শুরু হয়, তাতে পড়ে যায় রূপালী ব্যাংক। এক পর্যায়ে ৯ জুন দাম কমে হয়ে যায় ২৮ টাকা।

১০ জুন ২ টাকা ৮০ পয়সা বাড়ার সুযোগ থাকলেও বাড়ে ২ টাকা ৭০ পয়সা। অথচ সেদিন ব্যাংক খাতের প্রায় সব কটি কোম্পানি দর হারায়।

আর রোববার ব্যাংক খাতের ৩১টি কোম্পানির দর হারানোর মধ্যে উজ্জ্বল ছিল রূপালী ব্যাংকই।

রূপালী ব্যাংককে নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হঠাৎ আগ্রহ বৃদ্ধির কারণ এর লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণা আসার সম্ভাবনা।

রূপালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়ার পর তিনি কাজে যোগদান করেছেন। খুব শিগগিরই পরিচালনা পর্ষদের সভা আহ্বান করা হবে।

গত বছর ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেও তা দিতে পারেনি ব্যাংকটি। এবারও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষিত নীতিমালার কারণে লভ্যাংশ দিতে পারবে না বলে একটি অনলাইন গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছিল। এর পর থেকেই ব্যাংকটির শেয়ার দর হারাতে থাকে।

তবে রূপালী ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি অনুযায়ী তাদের লভ্যাংশ ঘোষণায় এবার কোনো বাধা নেই।

গত ১ এপ্রিল ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মনজুর হোসেনের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর দুই মাসের মতো শূন্য ছিল পদনি। ৩০ মে নিয়োগ দেয়া হয় হাজী সানাউল হককে। তিনি কাজে যোগ দেন দুই এক দিন পর।

লভ্যাংশ ঘোষণার সময়ে চেয়ারম্যানের পদ ফাঁকা থাকার কারণেই মূলত এই বিলম্ব হয়েছে।

বছরের প্রায় অর্ধেক সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও তিনটি ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি। এর মধ্যে ট্রাস্ট ব্যাংক ঘোষণা করবে সোমবার। এরপর বাকি থাকবে রূপালী ও ন্যাশনাল ব্যাংক।

অর্থবছর শেষ হওয়ার ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করতে বাধ্য কোম্পানিগুলো। এটি সাধারণত সাড়ে চার মাসের মধ্যে হয়ে থাকে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে কোম্পানিগুলোকে আরও বাড়তি ৩০ কার্যদিবস সময় দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কী সেই শর্ত

করোনা সংকটের মধ্যে ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ ও মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী রাখতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য খরচ বাদে বাংকগুলা সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে পারবে, যার মধ্যে ১৫ শতাংশ হবে বোনাস, ১৫ শতাংশ হবে নগদ।

এভাবে কোনো ব্যাংককে সামর্থ্য অনুসারে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ, কোনো ব্যাংককে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ, কোনো ব্যাংককে ১২ শতাংশ, কোনো ব্যাংককে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ আর কোনো ব্যাংককে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণার সুযোগ দেয়া হয়।

পরে ১৬ মার্চ আরেক আদেশে লভ্যাংশের সীমা কিছুটা বাড়িয়ে সঞ্চিতি সংরক্ষণসহ অন্যান্য খরচ বাদে মূলধন সংরক্ষণ করতে পারার ওপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ লভ্যাংশের সীমা ৩৫ শতাংশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এতে বলা হয়, যেসব ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ন্যূনতম মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ১০ দশমিক ৬২৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৮৭৫ শতাংশ হবে, তারা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে।

এই প্রজ্ঞাপন আসার পর তালিকাভুক্ত ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে এখন পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত পর্ষদ বৈঠক করেছে ২৭টি। এর মধ্যে কেবল আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি।

আর সর্বনিম্ন পাঁচ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক। তবে তাদের আর্থিক সক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ন্যূনতম সীমার চেয়ে ভালো ছিল। কারণ তারা আড়াই শতাংশ স্টক লভ্যাংশের পাশাপাশি সমান সংখ্যক নগদ লভ্যাংশও দিয়েছে।

রূপালী ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ন্যূনতম মূলধন ক্যাপিটাল কনজারভেশন কত, সে বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। আর পরিচালনা পর্ষদও এখন পর্যন্ত লভ্যাংশ ঘোষণা সংক্রান্ত সভা আহ্বান করেনি।

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক লভ্যাংশের সীমা বেঁধে দিয়ে আদেশ জারির পর কয়েকটি অনলাইন দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয় যে, এবারও রূপালী ব্যাংক কোনো লভ্যাংশ দিতে পারবে না। এরপর ব্যাংকটির শেয়ারদর কমে যেতে থাকে।

বিএসইসির মুখমাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখনও সময় আছে। করোনকালীন পরিস্থিতিতে আমরা কোম্পানিগুলোকে বাড়তি সময় দিয়েছি। এর মধ্যেই সবগুলো লভ্যাংশ ঘোষণা করবে।’

এ বিভাগের আরো খবর