বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বৈষম্য আরও বেড়েছে: ক্যাব

  •    
  • ৯ জুন, ২০২১ ২০:২৩

‘উন্নয়ন এবং অসমতায় ভোক্তা অধিকার’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণ করতে হলে এবং তাদের যথাযথ সেবা দিতে হলে উন্নয়ন ও অসমতা দূর করতে হবে। এ জন্য ভোক্তাবান্ধব সমাজ, অর্থনীতি, একই সঙ্গে রাজনীতিও দরকার। রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগকে আরও আন্তরিক হতে হবে।

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশের আয়বৈষম্য এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসমতা আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। ভোক্তাস্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠনটি বলছে, একদিকে দরিদ্রের সংখ্যা বাড়ছে, অপরদিকে ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে।

বুধবার ক্যাব আয়োজিত ‘উন্নয়ন এবং অসমতায় ভোক্তা অধিকার’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক, বাসদ নেতা রাজেকউজ্জামান রতন, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়াসহ আরও অনেকে।

গোলাম রহমান বলেন, করোনার এই সময় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে। অপরদিকে নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বেড়েছে। তারপরও সম্প্রতি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান যে তথ্য দিলেন তাতে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে ২২০০ ডলার ছাড়িয়েছে। বেশির ভাগ মানুষের আয় কমার পরও মাথাপিছু আয় বাড়ল। এর অর্থ একদিকে দেশের দরিদ্ররা আরও দরিদ্র হচ্ছে, অপরদিকে বিত্তশালীরা আরও বিওশালী হচ্ছে।

ক্যাব সভাপতি বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির দুটি প্রধান বিষয় রয়েছে, একটি প্রফিট, অন্যটি রেগুলেশন। কিন্তু এ দেশে প্রফিটের চাকা খুব জোরে জোরে ঘুরছে। অথচ রেগুলেশনের চাকা একেবারেই ঘুরছে না। এখনও দুই ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই ঢাকা পানির নিচে চলে যায়, চট্টগ্রামের অবস্থা তো আরও ত্রাহি ত্রাহি।

এ জন্য দুটি বিষয়ে নজর দেয়ার আহ্বান জানান গোলাম রহমান। প্রথমত, পরিবেশকে তার মতো করে ছেড়ে দিতে হবে। আর দ্বিতীয়ত, ভোক্তা অধিকারের আন্দোলন ও ভোক্তাদের সচেতনতা তৃণমূলেও নিয়ে যেতে হবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণ করতে হলে এবং তাদের যথাযথ সেবা দিতে হলে উন্নয়ন ও অসমতা দূর করতে হবে। এ জন্য ভোক্তাবান্ধব সমাজ, অর্থনীতি, একই সঙ্গে রাজনীতিও দরকার। রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগকে আরও আন্তরিক হতে হবে। তা না হলে ভোক্তাদের বিচার বিভাগের দ্বারস্থ হতে হবে। এই তিন বিভাগ আন্তরিক হলেই ভোক্তারা তার ন্যায্য অধিকার পাবে।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দারিদ্র্যের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে বিশ্বমান অনুসারে দারিদ্র্য রেখার ঊর্ধ্বে প্রকৃত দৈনিক আয় নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান মান অনুসারে একজন মানুষের দৈনিক ব্যয় দেড় ডলার, বাংলাদেশি টাকায় ১০০ টাকার ওপরে হতে হবে। তাহলে কোনো পরিবারের সদস্য সংখ্যা চারজন হলে পরিবারের মাসিক আয় কমপক্ষে ১২ হাজার টাকা হতে হবে।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম জানান, যেকোনো সেবার উৎপাদন মূল্যের চার গুণ দামে ভোক্তার কাছে যাচ্ছে। অকারণে নানাভাবে এসবের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়। তাই সরকার যে বরাদ্দ দিচ্ছে তা ভোক্তাদের জন্য খরচ হচ্ছে কি না, সেটা তাদেরই নিশ্চিত করতে হব। এ ক্ষেত্রে ভোক্তাদের আরও সচেতন হতে হবে। নজরদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর যে নিষ্ক্রিয়তা সেটা দূর করতে হবে।

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, সরকার আইনের মধ্যে থেকেই ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় অনেকগুলো রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান গঠন করে দিয়েছে কিন্তু সেগুলো তাদের দায়িত্ব পালন করছে না, তার একটি হচ্ছে বিইআরসি (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন)।

‘বিদ্যুৎ খাতের ভূতুড়ে বিল নিয়ে ভোক্তাদের প্রচুর অভিযোগ থাকলেও এই সংস্থাটি তাদের কোনো পদক্ষেপ নেয় না। শেষ পর্যন্ত তারা আদালতে দোষ স্বীকারও করছে। কিন্তু তার পরের ঘটনাগুলোতেও আবার একই কাজ করছে। এখনো ভোক্তারা রাষ্ট্রের কাছে তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না।’

আলোচকরা ভোক্তা অধিকার এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের অসমতা তুলে ধরে এর প্রতিকারের জন্য ক্যাবকে কার্যকরী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

এ বিভাগের আরো খবর