বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বর্ণ কেনার এখনই সময়

  •    
  • ৯ জুন, ২০২১ ১৯:৩০

খালিজ টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বর্ণের বাজার স্থিতিশীলতা ধরে রেখেছে। বিনিয়োগকারীরা লাভ করতে চাইলে এখনই কিনে রাখতে পারেন। আগামী মাসগুলোতে এর দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দর এখন কিছুটা স্থিতিশীল। তবে আগামী মাসগুলোতে মূল্যবান এই ধাতুটির দাম বাড়বে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সে বিবেচনায় বিনিয়োগকারীদের স্বর্ণ কেনার এখনই সময় বলে জানিয়েছে দুবাইভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম খালিজ টাইমস।

বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বর্ণের বাজার স্থিতিশীলতা ধরে রেখেছে। বিনিয়োগকারীরা লাভ করতে চাইলে এখনই কিনে রাখতে পারেন। আগামী মাসগুলোতে এর দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কী কারণে দাম বাড়তে পারে, তার কারণও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক (ফেড) করোনাভাইরাস মহামারির সংকট কাটিয়ে উঠতে প্রণোদনামূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে। এতে দেশটির মূল্যসূচক বেড়ে যেতে পারে। একই দিন ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠক থেকেও অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে উদ্দীপনামূলক ঘোষণা আসতে পারে।

এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে কেন্দ্র করেই আগামী মাসগুলোতে স্বর্ণের দাম বাড়তে পারে বলে প্রতিবেদনে আভাস দেয়া হয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সময় বুধবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে স্পট মার্কেটে সোনার দাম আউন্সপ্রতি দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে হয় ১ হাজার ৮৯৪ ডলার।

দুবাই গোল্ড অ্যান্ড জুয়েলারি গ্রুপের তথ্য বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বুধবার সকালে প্রতি গ্রাম সবচেয়ে ভালো মানের ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল ২২৯ দশমিক ৫ দিরহাম, ২২ ক্যারেট ২১৫ দশমিক ৫ দিরহাম, ২১ ক্যারেট ২০৫ দশমিক ৭৫ দিরহাম এবং ১৮ ক্যারেটের দাম ছিল ১৭৬ দশমিক ২৫ দিরহাম।

এসপিআই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা অংশীদার স্টিফেন ইনেস রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি যা দেখছি, এফওএমসির (ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি) বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এবং স্বর্ণের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।

‘বাজারে এমনও মতামত রয়েছে যে, ফেড একটি সম্প্রসারণমূলক পরীক্ষার দিকে যাচ্ছে এবং তাতে মূল্যস্ফীতি বাড়ার শঙ্কা রয়েছে, যা স্বর্ণের দাম বাড়ার জন্য সহায়ক হতে পারে।’

আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ফিচ সলিউশনস একটি নোটে বলেছে, ‘আমেরিকার কোষাগারে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি চাপ, দুর্বল ডলার এবং করোনার নতুন নতুন ঢেউঢের মধ্যে আগামীতে স্বর্ণের দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

বাংলাদেশের বাজারে সর্বশেষ স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয় গত ২৩ মে। সে সময় সব ধরনের স্বর্ণের দাম ভরিতে ২ হাজার ৪১ টাকা করে বাড়ানো হয়। সে অনুযায়ী, দেশে এখন প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট স্বর্ণ ৭৩ হাজার ৪৮৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ৭০ হাজার ৩৩৪ টাকায়। ১৮ ক্যারেটের দাম ৬১ হাজার ৫৮৬ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে ৫১ হাজার ২৬৩ টাকা।

তার ১২ দিন আগে ১০ মে স্বর্ণের দাম ভরিতে ২ হাজার ৩৩২ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে দাম বাড়ানো হয় বলে জানিয়েছিল বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

গত বছরের অগাস্ট মাসে দেশের বাজারে স্বর্ণের ভরি ৭৭ হাজার ২১৬ টাকায় উঠেছিল, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে স্থানীয় বাজারেও স্বর্ণের দাম উঠানামা করেছে।

স্বর্ণ বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দেশে এ খাতের শীর্ষ ব্যবসায়ী ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের স্বত্বাধিকারী এবং বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বুধবার নিউজবাংলাকে বলেন, সোনার বাজারটি অন্যসব পণ্যের মতো নয়। এখানে ভোক্তার আচরণও অস্বাভাবিক রকমের হয়। করোনার পর থেকেই গোল্ডের বাজার উঠানামা করছে।

‘সাধারণ ক্রেতারা এই বাজারে মুখ্য নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দায়িত্বশীল এজেন্ট ও বায়াররাই সোনার বাজারের মূল নিয়ন্ত্রক। বিশ্ব যখন স্থিতিশীল থাকে তখন সোনা কেনার প্রতি এদের চাহিদা কম থাকে। যখনই বিশ্ব সংকটের মুখোমুখি হয় তখন নিজ নিজ দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অনুমোদিত লোকাল এজেন্টরা ক্রেতা সেজে হাজার হাজার কেজি সোনা কিনে মজুদ রাখে। এভাবে সব দেশ যখন একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ সোনা কেনার তৎপরতা চালায়, তখন চাহিদা ও যোগানের ফর্মূলা অনুযায়ীই সোনার দাম বাড়তে থাকে।’

গত বছরের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর জুলাই-অগাস্টে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বড় ধরনের সংটের আশঙ্কায় চীনসহ বিভিন্ন দেশের বায়াররা গোল্ড কিনে মজুদ রাখতে শুরু করে। চাহিদা বাড়ায় সে সময় স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ চূড়ায় ওঠে। তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) স্পট গোল্ড ২ হাজার ৬৩ ডলার পর্যন্ত বিক্রি হয়। পরে অবশ্য তা কমে আসে।

এখন কেন স্বর্ণের দাম বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে- এ প্রশ্নের উত্তরে আগারওয়ালা বলেন, ‘কিছু দিন হলো গোল্ডের প্রাইস স্থিতিশীল আছে। করোনার ক্ষতি দ্রুত কাটিয়ে উঠতে আমেরিকা-ইউরোপসহ বড় বড় দেশ বড় বড় প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করছে। এতে বাজারে অর্থের সরবরাহ বেড়ে গেলে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়ে যাবে; বাড়বে মূল্যস্ফীতি।

‘আর মূল্যস্ফীতির সঙ্গে গোল্ডের দামের একটা সম্পর্ক আছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে সবাই এখন গোল্ড মজুদ করে রাখতে পারে। সে কারণেই দাম বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর