প্রস্তাবিত বাজেটে মাইক্রোবাসকে গণপরিবহনের স্বীকৃতি দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিকারকদের সমিতি বারভিডা।
১০ থেকে ১৫ আসনের মাইক্রোবাস আমদানির চলমান সম্পূরক শুল্ক সম্পুর্ণ প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়েছে।
বুধবার বারভিডা কার্যালয়ে বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বারভিডার প্রেসিডেন্ট আবদুল হক, সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম।
প্রস্তাবিত বাজেটকে উদ্যোক্তাবান্ধব, শিল্পবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব উল্লেখ করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘বারভিডার প্রস্তাবকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে নসিমন, লেগুনা ইত্যাদি অনিরাপদ যান চলাচল নিরুৎসাহিত করে গণপরিবহন হিসেবে মাইক্রোবাসকে স্বীকৃতি দেয়ায় আমরা খুশি।’
তবে রিকন্ডিশন্ড মোটরযান আমদানির ক্ষেত্রে তারা যে ৪৫ শতাংশ অবচয় সুবিধা এবং বছরভিত্তিক অবচয় সুবিধা চেয়েছিলেন তা প্রস্তাবিত বাজেটে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় কিছুটা নাখোশ তারা। বাজেট পাশের আগে এই সুবিধাটি সংযোজনের দাবি জানিয়েছে তারা।
বারভিডার সংবাদ সম্মেলনে নেতারা
দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় কর ছাড়সহ যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাতে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা করছে বারভিডা।
কৃষিখাতে প্রণোদনার পাশাপাশি কৃষিযন্ত্র আমদানিতে অগ্রিম কর এবং উৎপাদনে ভ্যাট তুলে দেয়ার প্রস্তাবকেও ‘সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য’ বলছে বারভিডা।
বাজেটের সঠিক বাস্তবায়নে মহামারি পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে বিনিয়োগ, উৎপাদন, কর্মসংস্থান এবং কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আহরণের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাপনায় সৃজনশীল পদক্ষেপ গ্রহণ বিশেষ জরুরি বলেও মনে করে সংগঠনটি।
বাজেট পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দক্ষতা এবং যথাযথ মনিটরিংয়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছে তারা।
‘দেশে গাড়ি উৎপাদনের সময় আসেনি’
বারভিডা নেতারা বলেন, দেশে নতুন গাড়ির শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ বাস্তবায়নে গাড়ির বাজার সম্প্রসারণ প্রয়োজন। জাপানি সাহায্য সংস্থা জাইকার একটি সমীক্ষা তুলে ধরে তারা বলেন, গাড়ির অভ্যন্তরীণ বাজার এক লাখ ইউনিট হলেই দেশে নতুন গাড়ির শিল্প প্রতিষ্ঠা যুক্তিযুক্ত হবে।
মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে এলে বাজার সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
নেতারা বলেন, নতুন ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্কায়ন মূল্যে চরম বৈষম্যের ফলে নতুন গাড়ির চেয়ে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দাম কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেশি হয়ে যাচ্ছে।
ফলে ক্রেতা কমে যাচ্ছে, আমদানি হ্রাস পাচ্ছে এবং এ খাতের ব্যবসায়ীরা আর্থিক সংকটে পড়ছেন।
২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ২০ হাজার ১৪৯ টি এবং পরের বছর ২৩ হাজার ৭৫ টি গাড়ি আমদানি হলেও ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে আমদানি হয় ১২ হাজার ৫০২ টি। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরেও আমদানি হ্রাসের ধারা অব্যহত রয়েছে।
সংগঠনের নেতারা বলেন, সরকারের নতুন গাড়ি শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ এ যেন সিকেডি আমদানির মাধ্যমে কোন ‘স্ক্রু ড্রাইভিং’ শিল্প প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা না নেয়া হয় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে।
বারভিডার ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম (সম্রাট) ও জসিম উদ্দিন মিন্টু, কোষাধ্যক্ষ আনিছুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ফরিদ আহমেদ এবং কার্যনির্বাহী সদস্য আবু হোসেন ভূইয়া (রানু), জিয়াউল ইসলাম, ইউনূছ আলী, আসলাম সেরনিয়াবাত, আনিসুর রহমান খানও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।