ছয় হাজার পরিবারের ওপর গবেষণা করে আড়াই কোটি মানুষের দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাওয়ার যে দাবি করেছে দুটি সংস্থা, তাকে অযৌক্তিক বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বলেছেন, এই পরিসংখ্যান তিনি স্বীকার করেন না।
অর্থনৈতিক ও ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। বৈঠকে ১১টি দরপ্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘যারা এসব কথা বলেছে, তারা কোথায় এ তথ্য পেয়েছেন আমার জানা নেই। তবে বিভিন্ন সংস্থা যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তা আমি স্বীকার করি না।’
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) গত ২০ এপ্রিল একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে দাবি করে, করোনায় প্রায় আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। ফলে দেশে এখন দারিদ্র্যের সংখ্যা ৪০ শতাংশ।
তবে এই গবেষণার সীমাবদ্ধতা হচ্ছে এর নমুনার আকার আর জরিপ পদ্ধতি।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে চলতি ২০২১ সালের মার্চের মধ্যে তিন পর্বে টেলিফোনে কেবল ছয় হাজার মানুষের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে এসেছে সংস্থা দুটি।
সরকার অবশ্য দাবি করেছে, দেশে দারিদ্র্যের হার এখন ২০ শতাংশের কিছু বেশি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘করোনায় নতুন গরিবদের নিয়ে সরকারি সংস্থা বিআইডিএস ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কাজ করছে। এসব সংস্থার কাজ শেষে জানা যাবে সঠিক তথ্য। এর বাইরে অন্য সংস্থাগুলোর দেয়া তথ্য আমি গ্রহণ করতে পারি না।’
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যেসব তথ্য-উপাত্ত দেয়া হয়, তাতে বস্তুনিষ্ঠতার ঘাটতি আছে বলে একটি প্রতিষ্ঠানের মন্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কোথায় তথ্যের ঘাটতি আছে, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে লিখিত দেন। তারপর আমি জানাব।’
অর্থমন্ত্রী মনে করেন, এবার তিনি যে বাজেটটি প্রস্তাব করেন, তা বাস্তবায়িত হলে নতুন গরিবরা বেশি উপকৃত হবেন। তাদের সহায়তায় এ বাজেট দেয়া হয়েছে।
‘গরিবদের অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসতে পারলে আমরা আরও এগিয়ে যাব’- বলেন মন্ত্রী।
আপনার মতে প্রস্তাবিত বাজেটের দুর্বলতা কী- এ প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো দুবর্লতা নেই। বরং এ বাজেট শক্তিমত্তায় ভরপুর।’
বিশ্বব্যাংক মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) হবে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। তবে সরকার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক জিডিপির হিসাব নিয়ে যে প্রক্ষেপণ করেছে, তা সঠিক নয়। আমি আশা করছি, বছর শেষে এটি অর্জিত হবে এবং এটি হবে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি।’
অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, চীনের টিকা কেনার বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য তার কাছে নেই। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।