২০১০ সালের মহাধসের পর সাড়ে ১০ বছরে সর্বোচ্চ লেনদেনে পরপর দুই দিনে রেকর্ড হলো ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে।
২০১০ সালে মহাধসের আগে ৫ জানুয়ারি লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৭১০ কোটি টাকা।
এর সাড়ে ১০ বছর পর গত রোববার লেনদেন হয় ২ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা।
বুধবার ইতিহাসের সর্বোচ্চ সেই লেনদেন ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা তৈরি হলেও শেষ ঘণ্টায় গতি কিছুটা কমে হয় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। যা সর্বকালের সর্বোচ্চ লেনদেনের চেয়ে মাত্র ১০ কোটি টাকা কম।
এদিন দাম বেড়েছে ২০৮টি কোম্পানির, কমেছে ১২৪টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৭টির। বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বৃদ্ধির দিন সূচকও বেড়েছে ৩১ পয়েন্ট, যদিও দিনের শুরুতে এর চেয়ে বেশি বৃদ্ধির ইঙ্গিত ছিল।
সকালে লেনদেনের শুরুতেই উত্থান ঘটা পুঁজিবাজারে একপর্যায়ে সূচক ৭৩ পয়েন্ট বেড়েছিল। তবে শেষ দেড় ঘণ্টায় ৩১ পয়েন্ট ও শেষ আধা ঘণ্টায় ১৮ পয়েন্ট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত সূচক দাঁড়ায় ৬০৫৫ পয়েন্টে।
২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির পর সূচকের এটি সর্বোচ্চ অবস্থান। সেদিন সূচক ছিল ৬ হাজার ৫০ পয়েন্ট।
গত রোববারের মতোই লেনদেন সাড়ে ১০ বছরের মধ্যে নতুন উচ্চতায় পৌঁছার দিন পুঁজিবাজারে উচ্ছ্বাস আর হতাশার মিশ্র অনুভূতি দেখা গেছে।
টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো ব্যাংক খাত দর হারাচ্ছে। দুই সপ্তাহে দুই দিন ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েও পরের দিন আবার দর হারিয়েছে বাজার।
রোববার সূচক পড়ে যাওয়ায় দেখা দেয় উৎকণ্ঠা। কারণ, বাজার সংশোধনের দিন বিক্রয় চাপ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নেতিবাচকতার ইঙ্গিত বলে ধারণা করা হয়।
পরের দুই দিনে বাজারে বড় ধরনের পতন হয়। সেই সঙ্গে কমে আসে লেনদেন। তবে সূচক পড়ার দিন লেনদেন কমা আবার ইতিবাচকতার ইঙ্গিত বহন করে বাজারে। এটা বোঝা যায় যে, শেয়ারধারীরা এই দামে শেয়ার বিক্রি করতে রাজি না।
সোমবার ১৫ পয়েন্ট আর পরদিন সূচক পড়ে ৬২ পয়েন্ট। তবে লেনদেন থাকে ২ হাজার কোটি টাকার ওপরেই।
বুধবার সকাল থেকেই শেয়ার কেনায় বিপুল আগ্রহ দেখান বিনিয়োগকারীরা
তবে তৃতীয় দিন মঙ্গলবারে এসে ঘুড়ে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। সেদিন উত্থান ঘটে ৪৭ পয়েন্ট। আর লেনদেন আরও কিছুটা কমে। তবে সেদিনও তা থাকে ২ হাজার কোটির ঘরে।
বুধবার সকাল থেকেই লেনদেনে রেকর্ডের ইঙ্গিত ছিল। প্রথম এক ঘণ্টা ১০ মিনিটেই লেনদেন ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। পরের সোয়া এক ঘণ্টায় লেনদেনের গতি কিছুটা কমলেও ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় চার ঘণ্টাতেই। শেষ বেলাতে টান টান উত্তেজনাতেও একটুর জন্য রেকর্ডের আগেই থেমে যায় পুঁজিবাজার।
শুরু থেকেই বাজারে ছিল ঊর্ধ্বগতি। ব্যাংক, বিমা, বস্ত্র, প্রকৌশল, খাদ্যসহ প্রধান খাতগুলোর শেয়ার মূল্য বাড়তে থাকে। তবে শেষ আধা ঘণ্টায় আবার এসব শেয়ারের কিছুটা দরপতন ঘটে। বিশেষ করে ব্যাংকের শেয়ার আবার দর হারানোর পরিপ্রেক্ষিতে সূচকের উত্থান অনেকটাই কমে যায়।
ব্যাংকের দর পতনের দিন অবশ্য শেয়ারের দাম বেড়েছে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতে। এই খাতেরও একটি কোম্পানি দর বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।
বিমা খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। কিছু কোম্পানির শেয়ার মূল্য বেশ ভালো পরিমাণে বাড়লেও কিছু কোম্পানির আবার দর পতন হয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
তবে গত টানা দুই সপ্তাহের মতো লেনদেনের রাজা থাকে এই খাতই।
এদিন বাজারে ব্যাপকভাবে দর বেড়েছে বস্ত্র খাতের। এই খাতের পাঁচটি কোম্পানির দাম বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততই।
দীর্ঘদিন ধরে ঘুমিয়ে থাকা প্রকৌশল খাতও অনেকটাই জেগে উঠেছে। এই খাতেরও দুটি কোম্পানির দর বেড়েছে এক দিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই। আরও দুটি কোম্পানি দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমার কাছাকাছি লেনদেন হয়।
উত্থান হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ওষুধ ও রসায়ন খাতও আড়মোড়া ভাঙার ইঙ্গিত দিয়েছে।
ব্যাংক খাত পতনেই
এই খাতে লেনদেন হয়েছে ২০২ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে নয়টির। দর কমেছে ১৭টির। পাল্টায়নি পাঁচটির।
সবচেয়ে বেশি দর কমছে লভ্যাংশ ঘোষণা করা ইউসিবিএলের দর। ব্যাংকটি ২০২০ সালের জন্য শেয়ারধারীদের ৫০ পয়সা নগদ ও প্রতি ২০টি শেয়ারে একটি বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার পর শেয়ারের দাম কমেছে ৭০ পয়সা বা ৪.০৫ শতাংশ।
শেয়ার দর ১৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৬ টাকা ৬০ পয়সা।
ব্যাংকের দাম পড়তে থাকায় এই খাতের শেয়ারধারীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন
এবি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। শেয়ার দর ১৪ টাকা ৬০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৪ টাকা ১০ পয়সা।
প্রাইম ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। শেয়ার দর ২২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ২২ টাকা ১০ পয়সা।
ওয়ান ব্যাংকের দর ১৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ১৩ টাকা।
ঢাকা ব্যাংকের দর কমেছে ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়ার কমেছে ২ দশমিক ১৭ শতাংশ।
যমুনা ব্যাংকের দর কমেছে ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গত ৩০ মে ব্যাংকটির শেয়ারের এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ দর ওঠে ২৩ টাকা ৪০ পয়সা। এরপর পাঁচ কার্যদিবস টানা পতনে নেমে আসে ২০ টাকা ৮০ পয়সায়।
বস্ত্র খাতে আগ্রহ
বুধবার বস্ত্র খাতের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। এর আগে ঈদের ছুটির আগের দুদিন ও ঈদের ছুটির পর প্রথম এক দিন লেনদেনে বস্ত্র খাতের ঢালাও উত্থান দেখছিল পুঁজিবাজার। তারপরও অনেকটাই নেতিয়ে ছিল এ খাত।
বুধবার সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে আবারও জানান দিল বস্ত্র খাত। এদিন বস্ত্র খাতের মোট লেনদেন হয়েছে ৩২৩ কোটি টাকা।
বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর অর্থবছর শেষ হচ্ছে জুনে। ফলে আগামী দুই থেকে তিন মাস পর কোম্পানিগুলো তাদের ২০২১ সালের জন্য শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ ঘোষণা করবে।
বাজেটের পর থেকে বস্ত্র খাতে লেনদেন ও শেয়ারমূল্য-দুটোই বাড়ছে
এই খাতের ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের শেয়ার দর বেড়েছে ১০ শতাংশ। লেনদেনে ২৬ টাকা শেয়ার দিন শেষে হয়েছে ২৮ টাকা ৬০ পয়সা।
এসকোয়ার টিট কোম্পানির দর ৯.৮২ শতাংশ বেড়ে ২৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে হয়েছে ৩১ টাকা ৩০ পয়সা।
রিং শাইনের দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ; ৯ টাকা ২০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ টাকা ১০ পয়সা।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের দরও বেড়েছে ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। ২৫ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৮ টাকা ৩০ পয়সা।
নুরানী ডায়িংয়ের দরও ৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা ১০ পয়সা। এর চেয়ে বেশি এক দিনে বাড়া সম্ভব ছিল না। শতকরা হিসেবে দর বেড়েছে ৯.৪৫ শতাংশ।
বিমা খাতে দুই চিত্রই আছে
বুধবার একক খাত হিসেবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এই খাতেই। হাতবদল হয়েছে ৬৩৬ কোটি টাকার শেয়ার।
এই খাতের মোট ৫০টি কোম্পানির মধ্যে ২১টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। একটির দর পাল্টায়নি। বাকি ২৮টির দর কমেছে।
তবে দিনের সর্বোচ্চ দর বৃদ্ধি পাওয়া কয়েকটি কোম্পানি ছিল বিমা খাতের। তবে বেশির ভাগ কোম্পানি ছিল দর পতনের তালিকায়।
বুধবার এ খাতের সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানি ছিল পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৭ শতাংশ। তারপরেই ছিল রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, যার শেয়ারের দরও বেড়েছে একই হারে। পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৫৯ শতাংশ।
সবচেয়ে বেশি উত্থান ও পতন, দুই তালিকাতেই ছিল বিমা খাতের কোম্পানি
সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৮.৭৫ শতাংশ। লেনদেনে ১১২ টাকার শেয়ার বেড়ে হয়েছে ১২১ টাকা ৮০ পয়সা। মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৮.৪৩ শতাংশ।
দিনের সর্বোচ্চ দরপতন হওয়া কোম্পানি তালিকায়ও ছিল বিমা।
ফেডারেল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের দর কমেছে ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। লেনদেনে ৪৮ টাকা ৭০ পয়সার শেয়ার কমে হয়েছে ৪৫ টাকা ১০ পয়সা।
ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৪.৯৪ শতাংশ, ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের ৪.৭০ শতাংশ, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, জনতা ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৪ শতাংশ পর্যন্ত।
সবচেয়ে বেড়েছে তথ্যপ্রযুক্তি
এই খাতে ১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০টির। গত কয়েক মাসে এমন চিত্র দেখা যায়নি। সবচেয়ে বেশি দর বাড়া ১০টি কোম্পানির দুটি এই খাতের।
এর মধ্যে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পর পতনমুখী ডেফোডিলস কম্পিউটারের দাম ৯.৯৪৫ শতাংশ আর জেনেক্সিলের দাম বেড়েছে ৯.৯৪১ শতাংশ।
বুধবার তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোর দাম বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকা।
প্রকৌশল খাতে আগ্রহ বৃদ্ধি
বাজেটে করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করার পর থেকে এই খাতের শেয়ারেও বেড়েছে আগ্রহ।
তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩১১ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে এই খাতে।
সবচেয়ে বেশি দাম বাড়া ২০টি কোম্পানির মধ্যে এই খাতের আছে দুটি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার পর পতনমুখী ন্যাশনাল পলিমার। ৯.৯২ শতাংশ বেড়ে ৫৮ টাকা ৭০ পয়সা দাঁড়িয়েছে দাম।
গোল্ডেনসনের দাম ৯.২৫ শতাংশ বেড়ে ১৭ টাকা ৭০ পয়সা দাঁড়িয়েছে। আগের দিন জেড ক্যাটাগরির শেয়ারটির দাম ছিল ১৬ টাকা ২০ পয়সা।
এর বাইরে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে ১৩টি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২২টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টি, আর্থিক খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১৫টির, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩১টির মধ্যে ১৬টির দাম বেড়েছে।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩১ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫৫ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৫ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৯৬ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০২ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে বুধবার দর বেড়েছে ২০৮টির, কমেছে ১২৪টির। দর পাল্টায়নি ৩৭টির।
বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র
লেনদনে হয়েছে মোট ২ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৬৫ কোটি টাকা। এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ৬৪০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের চেয়ে ৮৪ দশমিক ৩৬ পয়ন্টে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫১৫ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে মোট ৭৬ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮২ টির, কমেছে ৯৬টির। দর পাল্টায়নি ৩১টির।