বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে ৩১ কোটি ৪০ লাখ টাকা দিয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের হাতে গ্রামীণফোনের প্রধান মানব সম্পদ কর্মকর্তা সৈয়দ তানভির হোসেন এই টাকার চেক তুলে দেন বলে কোম্পানিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাস মহামারির এই দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় করার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তাহবিলে ৩১ কোটি ৪০ লাখ ০৪ হাজার ৪০৩ টাকা দিয়েছে গ্রামীণফোন।
অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের কল্যাণে বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী সরকার এই তহবিল গঠন করে।
তিনি বলেন, এ তহবিল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের কর্মস্থলে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুতে, আহত, দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত শ্রমিকের চিকিৎসা এবং শ্রমিকের মেধাবী সন্তানের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা দেয়া হয়। করোনার এই দুর্যোগের সময়ে এ বছর দুই হাজার শ্রমিককে এ তহবিল থেকে সোয়া ৬ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন সব সময় শ্রমিকদের কল্যাণে পাশে থাকবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
গ্রামীণফোনের প্রধান মানব সম্পদ কর্মকর্তা সৈয়দ তানভির হোসেন বলেন, ‘কোভিড-১৯-এর এই প্রতিকূল সময়ে আমরা দেশের মানুষের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
‘জাতিগতভাবে আমরা যেভাবে করোনাকে মোকাবিলা করে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছি, তা সত্যিই দৃষ্টান্তমূলক। আমরা বিশ্বাস করি, শ্রমিকদের কল্যাণে আমাদের অবদানে অন্যরা উৎসাহিত হবেন এবং শ্রমিকদের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়াবেন।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গ্রামীণফোনসহ দেশি-বিদেশি এবং বহুজাতিক মিলে ১৭৬টি প্রতিষ্ঠান তাদের লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ নিয়মিত এ তহবিলে জমা দিয়ে আসছে। লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ জমা দেয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রতি মাসে বাড়ছে।
বর্তমানে এ তহবিলে জমার পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি। গ্রামীণফোন তাদের লভ্যাংশের একটি নির্দিষ্ট অংশ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে নিয়মিতভাবে জমা দিয়ে আসছে।
এ তহবিলে সর্বোচ্চ জমাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রামীণফোন এখন পর্যন্ত ১৮৩ কোটি ৮৪ হাজার ৩৬৩ টাকা জমা দিয়েছে।
একই অনুষ্ঠানে অক্সিজেন কোম্পানি লিন্ডে বাংলাদেশের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান সাইকা মাজেদ তাদের কোম্পানির গত এক বছরের লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার চেক প্রতিমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব কে এম আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক বেগম জেবুন্নেছা করিম, ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের পরিচালক শাকিলা জেরিন আহমেদ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গৌতম কুমার, গ্রামীণফোনের পাবলিক অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স প্রধান হোসেন সাদাত, এইচআর বিজনেস পার্টনার অ্যান্ড সার্কেল এইচআর প্রধান ইয়াসির মাহমুদ খান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস প্রধান কে এম সাব্বির আহমেদ ও সদস্য আসাদুজ্জামান এবং লিন্ডে বাংলাদেশের রিওয়ার্ড অ্যান্ড সিস্টেম ম্যানেজার সুফিয়া আকতার ওহাব উপস্থিত ছিলেন।