বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ছয় হাজারের যুদ্ধে’ অস্বস্তি আরও বাড়ল পুঁজিবাজারে

  •    
  • ৭ জুন, ২০২১ ১৫:৩১

গত সপ্তাহের শুরুতে ছয় হাজার পয়েন্টে পৌঁছার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি হয়। সেখানে সূচক স্থিতিশীল না হওয়া, পাশাপাশি সংশোধনের দিন ব্যাপকভাবে লেনদেন বৃদ্ধির কারণে সেই চাপ আরও বাড়ল।

এক দশকে সর্বোচ্চ লেনদেনের দিনই যে অস্বস্তি পুঁজিবাজারে দেখা দিয়েছিল, সেটি শঙ্কায় পরিণত হলো পরের দিন। প্রায় আড়াইশ শেয়ারের দরপতনে বড় ধরনের সংশোধন হলো পুঁজিবাজারে।

এপ্রিল থেকে টানা উত্থানে থাকা পুঁজিবাজার ছয় হাজার পয়েন্টের মাইলফলক ছুঁয়ে আসার পর পথ হারানোর দশা। উঠা নামার মধ্যে তিন কার্যদিবস ছয় হাজারের ওপরে থাকার পর আবার সূচক নেমে এল ছয় হাজারের কম।

গত সপ্তাহের শুরুতে ছয় হাজার পয়েন্টে পৌঁছার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরি হয়। সেখানে সূচক স্থিতিশীল না হওয়া, পাশাপাশি সংশোধনের দিন ব্যাপকভাবে লেনদেন বৃদ্ধির কারণে সেই চাপ আরও বাড়ল।

এ কারণে ২০১০ সালের মহাধসের পর রোববারের সর্বোচ্চ লেনদেনেও বিনিযোগকারীরা খুশি হতে পারেনি। তবে সোমবারের লেনদেনের শেষ দিকে সূচক কিছুটা ফিরে পাওয়া, আর পতনের দিন লেনদেন কমে যাওয়ায় তাও কিছুটা হলেও ইতিবাচকতা খুঁজছেন তোরা।

গত জানুয়ারি মাসেও সূচক পাঁচ হাজার ৯০৯ পয়েন্ট উঠার পর একমন অস্থিরতা দেখা দেয়। আর টাকা প্রায় তিন মাসের দর সংশোধনে এক পর্যায়ে তা নেমে আসে পাঁচ হাজার ৮৮ পয়েন্টে।

পরে ৫ এপ্রিল লকডাউনের প্রথম দিন থেকে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। ৩০ মে সূচক দাঁড়ায় ছয় হাজার আট পয়েন্টে। কিন্তু পরের দুই দিন সূচক আবার ছয় হাজারের নিচে নেমে আসে।

এরপর তিন কার্যদিবস আবার ছয় হাজার পয়েন্টের ওপরে থাকার পর সোমবার এক দিনে ৬২ পয়েন্ট হারাল সূচক।

৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন শুরু হওয়ার আগে আগে বাজারে লেনদেন স্থগিত হয়ে যাবে, এমন গুজবে গত ৩ এপ্রিল এর চেয়ে বেশি দরপতন দেখেছিল পুঁজিবাজার।

রোববার পুঁজিবাজারে লেনদেন ছিল দুই হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। সেদিন সূচক পড়ে ১৫ পয়েন্ট।

সোমবার লেনদেন শুরুর পর উঠানামা করতে থাকে সূচক। তবে বেলা একটার পর থেকে কেবল পড়েছেই। এক পর্যায়ে তা ৮৪ পয়েন্ট কমে যায়। তবে শেষ বেলায় এসে সূচক ২২ পয়েন্ট ফিরে পায় পুঁজিবাজার।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সূচকের পতন হলেও পুঁজিবাজার স্বাভাবিক আছে। এ সময়ে পুঁজিবাজারে কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে স্পষ্ট করে নির্দেশনা না থাকায় অনেকে এখন আর নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, বিভিন্ন খাতের শেয়ার দল বেঁধে বাড়ছিল। এখন খাতওয়ারি দর সংশোধন হচ্ছে। এর মাধ্যম স্বাভাবিক অবস্থায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছে।

টানা তিন দিন পড়ল ব্যাংকের দর

গত সপ্তাহে কেবল বুধবার ছাড়া ব্যাংকের পতন হয় প্রতিদিন। চলতি রোরবার পতনের মাত্রা ছিল আরও বেশি। পরের দিন মাত্রা কিছুটা কমলেও সেই বৃত্ত থেকে বের হতে পারেনি এই খাত।

একদিন ছাড়া পুরোটাই পুরোটাই শেষ কর্মদিবসে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ঢালাওভাবে কমে ছিল তালিকাভুক্ত ব্যাংকের শেয়ার দর। সোমবারও কমেছে বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দর।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ব্যাংকের শেয়ার লেনদেনের চিত্র

লেনদেনে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। এক দিনে ১০ শতাংশের বেশি কমার সুযোগ না থাকলেও এটি এত কমেছে লভ্যাংশ সমন্বয়ের কারণে। চলতি বছর কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা নগদ আর ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল।

রোববার রেকর্ড ডেটে শেয়ার দাম ছিল ১২ টাকা। দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ৫ পয়সা।

একই কারণে ১১ দশমিক ৭১ শতাংশ দর হারিয়েছে এক্সিম ব্যাংকের। সোমবার ব্যাংকটির শেয়ার দর ১২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১১ টাকা ৩০ পয়সা।

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক দর হারিয়েছে ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ। শেয়ার দর ৯ টাকা ৬০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৮ টাকা ৯০ পয়সা।

এনসিসি ব্যাংকের দর কমেছে ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ। লেনদেনে শেয়ার দর ১৫ টাকা ১০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৪ টাকা ৬০ পয়সা।

ওয়ান ব্যাংকের দর কমেছে ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ১৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৩ টাকা।

ট্রাস্ট ব্যাংকের দর কমেছে ২ দশমিক ৬৬ পয়সা। লেনদেনে শেয়ার দর ৩৩ টাকা ৮০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩২ টাকা ৯০ পয়সা।

পূবালী ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ২৪ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ২৩ টাকা ৯০ পয়সা।

দর কমেছে প্রিমিয়ার ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংক, স্যোশাল ইসলামী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংকের।

বিমাতেও পতন

দ্বিতীয় দিনের মতো কমেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের শেয়ারের দর। লেনদেনে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৫০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে একটির। দর পাল্টায়নি তিনটির। দর কমেছে ৩৬টির।

এদিন সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স; ৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। শেয়ার দর ১৯৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১৮৪ টাকা ২০ পয়সা।

পদ্মা লাইফের শেয়ার দর কমেছে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। শেয়ার প্রতি দর ৩৩ টাকা ৬০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩২ টাকা।

ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। দাম ৪১ টাকা ৪০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৩৯ টাকা ৫০ পয়সা।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বিমা খাতের লেনদেনের চিত্র

রূপালী ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ। শেয়ার দর ৪৯ টাকা ৬০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৪৭ টাকা ৫০ পয়সা।

নর্দান ইন্স্যুরেন্স দর হারিয়েছে ৪ দশমিক ০৬ শতাংশ। শেয়ার দর ৬৩ টাকা ৯০ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৬১ টাকা ৩০ পয়সা।

ডেল্টা লাইফের দর কমেছে ৪ দশমিক ০২ শতাংশ। ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স দর হারিয়েছে ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ। ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স দর হারিয়েছে ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ।

আগের দিন উত্থান হওয়া বস্ত্র ও প্রকৌশল খাতও দর ধরে রাখতে পারেনি।

সূচক ও লেনদেন

সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬২ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৭৫ পয়েন্টে।

শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৯ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৮৯ পয়েন্টে।

বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ২৭ দশমিক ৪২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৫ পয়েন্টে।

লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৮৩ কোটি টাকা যা আগের দিনের চেয়ে ৫৮৬ কোটি টাকা কম।

বড় দরপতনে পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক যেভাবে আবার ছয় হাজারের নিচে

লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৮টির, দর কমেছে ২৪২টির। দর পাল্টায়নি ২৭টির।

চট্টগ্রাস স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১৮৯ দশমিক ৮০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৩১৭ পয়েন্টে। হয়েছে মোট ৯০ কোটি টাকা।

এই এক্সচেঞ্জে দাম বেড়েছে ৮৬টির, কমেছে ১৯১টির। পাল্টায়নি ২৩টির।

এ বিভাগের আরো খবর