বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুঁজিবাজারে থাকছে না ওটিসি মার্কেট

  •    
  • ৪ জুন, ২০২১ ১৯:১৮

ওটিসি বলে কিছু রাখা যাবে না। এটা হলে কোম্পানির গভর্নেন্স থাকে না। ইচ্ছামতো চালায়, বিক্রি করে দেয়। জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পুঁজিবাজারে লোকসানি ও বন্ধ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটে (ওটিসি) থাকছে না কোনো কোম্পানি।

বর্তমানে এই মার্কেটে তালিকাভুক্ত ৬৪টি কোম্পানির মধ্যে ৫০টিরও বেশি স্থানান্তর করা হবে ডিএসইর মূল মার্কেট, এসএমই বোর্ড ও অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড- এটিবিতে। আর ১৩টি কোম্পানি তালিকাচ্যুতির আবেদন করেছে। এর মধ্যে চারটির তালিকাচ্যুতির কাজ এগিয়ে চলছে।

নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সংস্থাটির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘ওটিসি বলে কিছু রাখা যাবে না। এটা হলে কোম্পানির গভর্নেন্স থাকে না। ইচ্ছামতো চালায়, বিক্রি করে দেয়। জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

উৎপাদনে না থাকা, নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করা, কাগজের শেয়ার রাখা, নিয়ম অনুযায়ী বিএসইসিতে আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেয়া, লভ্যাংশ প্রদান ও সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন না করা প্রায় ৬৫টি বেশি কোম্পানিকে মূল মার্কেট থেকে সরিয়ে ওটিসি মার্কেটে নিয়ে যাওয়া হয়।

এমন কোম্পানিগুলোকে নিয়ে ২০০৯ সালে এই ওটিসি মার্কেট গঠন করা হয়।

ওটিসিতে সবশেষ স্থানান্তর করা হয়েছে ইউনাইটেড এয়ার। দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানির কার্যক্রম না থাকার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

ওটিসিতে পাঠানোর পর ইলেকট্রনিক শেয়ারে রূপান্তর, কোম্পানিকে মুনাফায় ফিরিয়ে লভ্যাংশ বিতরণ করে মূল মার্কেটে ফিরেছে ইউসিবিএল ব্যাংক, ওয়াটা ক্যামিকেল, সোনালি পেপার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ।

বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওটিসি মার্কেটে যে কোম্পানিগুলো আছে, সবগুলোকেই আমরা নজরদারি করছি। কোন কোম্পানি কী করছে সেগুলো দেখা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এখানে যে কোম্পানিগুলো আছে, সেগুলোর একেকটির একক ধরনের সমস্যা। কোনোটির ব্যবস্থাপনায় জটিলতা, কিছু কোম্পানি পরিস্থিতির শিকার। কিছু কোম্পানি আছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। সে কোম্পানিগুলোকে আমরা চিহ্নিত করছি। তাদের পুঁজিবাজার থেকে এক্সিট বা তালিকাচ্যুত করারও পরিকল্পনা আছে।’

বিএসইসি চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা

যে চার কোম্পানির ফেরা সময়ের অপেক্ষা

বিএসইসি চেয়ারম্যান জানান তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানি লিমিটেড, পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড এবং মুন্নু ফেব্রিক্স লিমিটেডের ওটিসি থেকে মূল মার্কেটে ফেরা কেবল ঘোষণার অপেক্ষা।

গত অর্থবছরে মুনাফায় ফিরেছে মুন্নু ফেব্রিক্স। ২০১৯-২০ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয়-ইপিএস বেড়েছে ৬ পয়সা। এ সময়ে কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ১১ পয়সা। আগের অর্থবছরের ইপিএস ছিল ৫ পয়সা।

মুন্নু ফেব্রিক্স লিমিটেড পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯৬ সালে।

২০১৮ সালে ‘বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড’ ও ‘পেপার প্রসেস অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড’ বিনিয়োগকারীদের ২০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির অনুমোদন না পাওয়ায় তা বণ্টন করা যায়নি।

তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস ২০১৬ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এই কোম্পানিটিও নিয়মিত উৎপাদনে ফিরেছে।

এসএমই ও এটিবি বোর্ড কী

বিএসইসি চেয়ারম্যান জানান, ওটিসি মার্কেটের কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৫টি যাচ্ছে এসএমই বোর্ড বা স্বল্প মূলধনী কোম্পানি জন্য তৈরি করা বোর্ডে। ৩০টি কোম্পানি যাচ্ছে এটিবিতে।

এসএমই বোর্ড ও এটিবিতে যেসব কোম্পানি থাকবে, সেগুলো প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে টাকা তুলতে পারবে না। সেগুলো টাকা তুলতে পারবে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের থেকে।

যদি কোম্পানিগুলো ভালো করতে পারে, পরে সেগুলো আইপিওর মাধ্যমে টাকা তুলতে পারবে।

তালিকাচ্যুতির আবেদন ১৩টির

বিএসইসি চেয়ারম্যান জানান, ১৩টি কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হতে আবেদন করেছে।

তিনি বলেন, ‘চারটির অলরেডি কাজ শুরু হয়ে গেছে। কোর্টের একটা অর্ডার পেন্ডিং আছে। দুটিকে আমরা একটু ডেকে দেখছি কী হয়।’

এসব কোম্পানি কোনগুলো সেগুলো অবশ্য জানাননি বিএসইসি চেয়ারম্যান।

এসব কোম্পানি জনগণের কাছ থেকে টাকা তুলে এর বিনিময়ে কিছু দেয়নি। এখন তাদের মালিকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা হবে? এমন প্রশ্নে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা টাকা উঠিয়ে চলে গেছে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করব।’

বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কোনো কোম্পানিকে তালিকাচ্যুত করা হলেও সেটি একসঙ্গে হবে না। পুঁজিবাজারের অবস্থা বিবেচনায় সময় সময় তা বাস্তবায়ন করা হবে।’

কোম্পানিকে তালিকাচ্যুতের সুযোগ

এর আগে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটের ২১ কোম্পানির কাছে ১১ তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠায় বিএসইসি। যেখানে কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) ও কোম্পানির সচিবকে বিএসইসিতে তলব করা হবে।

জানতে চাওয়া ১১টি বিষয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কোম্পানির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, বর্তমান আর্থিক অবস্থার প্রতিবেদন, সব সম্পত্তির বর্তমান অবস্থা, উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের বর্তমান শেয়ার ধারণের অবস্থা।

এরপর ৩০ ডিসেম্বর বিএসইসির ওটিসি মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে সাত শর্তে পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়।

এ জন্য কোম্পানির দুই বছরের বেশি সময় বাণিজ্যিক উৎপাদন না থাকলে, পরিশোধিত মূলধন থেকে পুঞ্জীভূত লোকসান বেশি হলে ও তিন বছর ধরে লোকসান থাকলে তালিকাচ্যুত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কোম্পানি।

একই সঙ্গে নগদ লভ্যাংশ দিতে টানা তিন বছর ব্যর্থ হলে, টানা দুই বছর বার্ষিক সাধারণ সভা করতে না পারলে, ডেবট সিকিউরিটিজের বিপরীতে টানা তিন কিস্তি সুদ বা কুপন বা মুনাফা দিতে না পারলে, ডেবট সিকিউরিটিজের দুই কিস্তি দিতে ব্যর্থ হলেও এই নির্দেশনায় অন্তর্ভুক্ত হবে কোম্পানিগুলো।

এ বিভাগের আরো খবর