চীনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করেছিল। এবার একই পথে হাঁটলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন কয়েক ডজন প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছেন জো বাইডেন।
ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকার সময় ৩১টি প্রতিষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করে কালো তালিকাভুক্ত করেছিলেন। এবার সেই সংখ্যা বেড়ে হচ্ছে ৫৯টি।
হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাইডেনের নির্বাহী ওই আদেশ আগামী ২ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তালিকায় এখনও রয়েছে চীনের প্রযুক্তি জায়ান্ট হুয়াওয়ের নাম।
নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই চীন হোয়াইট হাউজের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করেছে।
বাইডেনের নতুন আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিনিয়োগকারী চীনের নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো পণ্য কিনতে বা বিক্রি করতে পারবেন না।
এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে চায়না জেনারেল নিউক্লিয়ার পাওয়ার করপোরেশন, চায়না মোবাইল লিমিটেড এবং কোস্টার গ্রুপ।
হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা চীনের সামরিক বাহিনীর কোনো কিছুতে বিনিয়োগ করছেন না, এটা নিশ্চিত করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা এমন উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে, যেখানে বিশ্ববাজার খুব কম ক্ষতির সম্মুখীন হয়, কিন্তু প্রভাবটা খুব বেশি পড়ে।’
হুয়াওয়ে বলছে, ২০১৯ সালে ট্রাম্প প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর থেকে বৈশ্বিক বাজারে তাদের মোবাইল ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তথ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে সামনে এনে গত জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যের ফাইভজি নেটওয়ার্ক থেকেও হুয়াওয়েকে বাদ দেয়া হয়েছে।
নতুন করে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া চীনা কোম্পানিগুলোর নাম যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়ে দেবে।
হোয়াইট হাউজ বলছে, তারা আশা করছে সামনের মাসগুলোতে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরও প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত করতে পারবে।
চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলমানদের ওপর নজরদারির বিষয়টি সামনে আসার পর বাইডেন প্রশাসন উদ্বেগ প্রকাশ করে।
চীন ঘরে-বাইরে নাগরিকদের ওপর নজরদারি করতে তাদের নানান ধরনের প্রযুক্তি ও অন্য সরঞ্জাম ব্যবহার করছে। এসব দিয়ে মার্কিন নাগরিকদেরও নজরদারি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলা হয়।
একই অভিযোগে ট্রাম্প প্রশাসন ৩১টি প্রতিষ্ঠানকে দেশটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে।
নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও বাড়াবে।
গত মাসে বাইডেন প্রশাসনের আমন্ত্রণে দুই দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের বৈঠক হয়। সেখানে দুই দেশের সম্পর্ক ‘স্পষ্ট ও বাস্তববাদী’ বলে উল্লেখ করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়ান ওয়েনবিন বলেন, ‘চীনের প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈধ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’