বাংলাদেশের সঙ্গে ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলারের বাণিজ্য হয় জানিয়ে ঢাকায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, এ অঙ্কটা আগামী এক বছরে দ্বিগুণ করতে চায় দুই মহাদেশ বিস্তৃত দেশটি।
নগর ভবনে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় তুরস্কের এ অবস্থানের কথা জানান রাষ্ট্রদূত।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী, তুরস্কে ৪৫ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ; আমদানি করেছে ২৩ কোটি ৩৫ লাখ ডলার মূল্যের পণ্য।
এমন বাস্তবতায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার বর্তমান বাণিজ্যের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলার থেকে আগামী এক বছরে দ্বিগুণে উন্নীত করার লক্ষ্যে দুই দেশই কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় তুরস্ক বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।’
ডিএসসিসি এলাকায় আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত। এ কথা শুনে মেয়র তাপস রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, হাসপাতালের নির্মাণকাজ এগিয়ে নিতে ডিএসসিসিতে নবসংযুক্ত এলাকা কামরাঙ্গীরচরে প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দ দেয়া হবে।
স্থাপনায় বিনিয়োগ করতে পারে তুরস্ক
শেখ তাপস বলেন, ‘করপোরেশনে নবসংযুক্ত কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে নান্দনিক পরিবেশে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ৫০ তলাবিশিষ্ট একটি আন্তর্জাতিক মানের সম্মেলন কেন্দ্র নির্মাণ এবং সেখানে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল (সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট) গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। সেখানে তুরস্ক বিনিয়োগ করতে পারে।
‘এ ছাড়াও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ৩০টি কম্পেক্টর কেনার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। সেখানেও তুরস্ক অংশ নিতে পারে।’
ডিএসসিসির উত্তরাঞ্চলে একটি পরিকল্পিত আবাসিক উপশহর (এক্সক্লুসিভ রেসিডেন্সিয়াল টাউনশিপ) গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘সেখানেও চাইলে তুরস্ক বিনিয়োগ করতে পারে।’
ডিএসসিসি মেয়র ও তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং তুরস্কের উল্লেখযোগ্য যেকোনো একটি শহরের সঙ্গে ডিএসসিসির ‘সিস্টার সিটি রিলেশনশিপ’ প্রতিষ্ঠাসহ নানা বিষয়ে একযোগে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূতকে তার সহকর্মীদের নিয়ে শীতকালের শুরুতে ডিএসসিসির আওতাধীন ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান মেয়র। তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে বাংলাদেশে টার্কিশ কো-অপারেশন অ্যান্ড কোর্ডিনেশন এজেন্সির (টিকা) সমন্বয়ক ড. ইসমাইল গুনদোগদু ও ঢাকা দক্ষিণের সচিব আকরামুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।