বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে ‘অনেক বড় আইন’

  •    
  • ৩১ মে, ২০২১ ১৯:২৮

“নন ব্যাংকিং ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউটগুলোকে অ্যাট্রাক্ট করে লোকজনকে বলে ১৫-১৬ শতাংশ ইন্টারেস্ট দেব। অনেকে এত সচেতন না। অনেকে ওই ডিক্লারেশনের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ জমা রাখে। আপনাদের হয়ত ‘যুবক’-এর কথা খেয়াল আছে। অনেকে সর্বস্ব হারিয়েছে।”

যুবক, ইউনিপেটু, ডেসটিনির মতো প্রতিষ্ঠানগুলো প্রলোভন দেখিয়ে যাতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করতে না পারে সেজন্য কঠোর হচ্ছে সরকার। তৈরি করা হচ্ছে নতুন আইন।

একে অনেক বড় আইন বলছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

বাংলাদেশে ব্যাংক থেকে ‘ফাইন্যান্স কোম্পানি লাইসেন্স’ ছাড়া কোনো ব্যক্তি দেশে কোনো অর্থায়ন, ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না, এমন বিধান রেখে এই আইনটি করতে যাচ্ছে সরকার।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে আনা ‘ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২১’-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক খসড়ায় এই অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা ছিলেন সচিবালয়ে।

সচিবালয়ে বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এটা অনেক বড় আইন। অনেক আলাপ আলোচনা হয়েছে এটা নিয়ে। আমার মনে হয় এক ঘণ্টার মতো দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।’

এই আইনটি করার গুরুত্ব তুলে ধরে সচিব বলেন, ‘১৯৯৩ সালে ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যাক্ট ছিল একটা। সেটাকে চেঞ্জ করে ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২১ হিসেবে খসড়া নিয়ে আসা হয়েছে।

‘বাংলাদেশে কার্যত নন-ব্যাংকিং যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলো ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যাক্ট ১৯৯৩ দিয়ে পরিচালিত হয়। সেক্ষেত্রে দেখা গেল যে, ওই আইনটা এগুলোর জন্য পুরোপুরি কার্যকর না। সে জন্য এই আইন করা হয়েছে।’

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ছাড়া জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহে বিধি নিষেধ থাকলেও প্রায়ই মাল্টিপারপার্স প্রতিষ্ঠান বা আরও নানা নামে বিভিন্ন সংগঠন অবিশ্বাস্য হারে মুনাফা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ উত্তোলন করে। পরে সেগুলো উধাও হয়ে গেছে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে লগ্নিকারকরা।

আইনটিকে ৭১টি ধারা রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এখানে যেটা মেনশন করা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশে ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ফাইন্যান্স কোম্পানি লাইসেন্স ছাড়া বাংলাদেশে কোনো অর্থায়ন, ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘নন ব্যাংকিং ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউটগুলোকে অ্যাট্রাক্ট করে লোকজনকে বলে ১৫-১৬ শতাংশ ইন্টারেস্ট দেব। অনেকে এত সচেতন না। অনেকে ওই ডিক্লারেশনের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ জমা রাখে। আপনাদের হয়ত যুবকের কথা খেয়াল আছে। অনেকে সর্বস্ব হারিয়েছে।’

সাধারণ মানুষ যাতে প্রতারণার শিকার না হয়ে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান সচিব।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেই তুলেছেন, যে এগুলোকে ক্যাপ করে দেয়া যায় কি-না। সর্বোচ্চ এত টাকা জমা রাখতে পারবেন, আর রেট অব ইন্টারেস্ট ফিক্সড করে দেয়া হয়। আমাদের যে সঞ্চয়ী, পেনশন ডিপোজিট, পেনশন স্কিম যে রকম ডিফাইন করে দেয়া, যাতে মানুষ বুঝতে পারে।’

ঋণ খেলাপির বিষয়ে আইনে বিশদভাবে বলা হয়েছে বলেও জানান খন্দকার আনোয়ারুল। তিনি বলেন, ‘কারা কারা খেলাপি হবে, ইচ্ছাকৃত বা অবহেলাজনিত কারণে বা কারো সঙ্গে যোগসূত্রের মাধ্যমে- যেভাবেই হোক সে জিনিসগুলো পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে।’

সচিব বলেন, আইনটি প্রণয়নের মধ্য দিয়ে যে প্রতিষ্ঠানগুলো আগে ইনস্টিটিউট ছিল, সেগুলো কোম্পানি হিসেবে বিবেচিত হবে।

‘কিন্তু তার জন্য তাদের নতুন করে কোনো রেজিস্ট্রেশন করতে হবে না। তাদের মেমোরান্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশনেও কোনো পরিবর্তন আনতে হবে না। যারা ব্যবসা বা অর্থায়ন করবে এবং ‍ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতেও তারা যদি করতে চায় সবক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পারমিশন নিতে হবে।’

কোনো প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে গেলে, গ্রাহকরা যাতে ক্ষতির মুখে না পড়ে সেজন্য আইনে বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে।

সচিব বলেন, ‘একটা সিস্টেম করা হয়েছে, যদি কেউ দেউলিয়া হয়ে যায়, তাহলে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহক যারা আছে তাদের টাকা পয়সা কীভাবে পেমেন্ট করবে, তার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে একটা ডিপোজিট ব্যবস্থা থাকবে।’

কোনো প্রতিষ্ঠান নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করতে চাইলে আইন অনুযায়ী হাইকোর্টে যেতে হয় জানিয়ে সচিব বলেন, এ বিষয়টিকে আরও সহজে নিষ্পতি করতে একটা পর্যবেক্ষণ দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

তিনি বলেন, ‘ক্যাবিনেট আজকে একটা অবজারভেশন দিয়েছে যে, দেউলিয়া করার বিষয়টি আউটসাইড দ্য কোর্ট ফয়সালা করা যায় কি-না কোনো অথরিটির মাধ্যমে। তাহলে সময় বা কমপ্লেক্সিটি কমে যাবে। কোর্টে গিয়ে সেখানে দীর্ঘদিন মামলা চলবে, তারপর ধরেন আবার আপিল বিভাগে যাবে, সেখানে আবার রিভিউ করতে পারবে। এগুলো অনেক সময় নিয়ে ফেলে। এটা একটা যুগান্তকারী দিক হবে, যদি আদার দেন কোর্ট দেউলিয়ার বিষয়টি যদি বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোনো অথিরিটির মাধ্যমে সলভড করা যায়।’

শাস্তির বিধান সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘৫০ থেকে ৫৫ ধারা পর্যন্ত ব্যাপক জরিমানার কথা বলা হয়েছে। আপনাদের খেয়াল আছে কী-না? কদিন আগে যে আমরা ব্যাংকিং আইনটা প্রেজেন্ট করলাম। এগুলো হলো অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পানিশমেন্ট। কিন্তু এগুলো কোনো ব্যক্তিকে তার ক্রিমিনাল অফেন্সের লাইয়াবেলিটি থেকে মুক্তি দেবে না। যদি কেউ পেনাল কোডের ৪৬৭/৪৬৮ বা ৪০৬ বা ৪২০-তে পড়ে এই জরিমানার পরেও ওগুলো যথারীতি চলবে।’

সচিব বলেন, সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান থাকছে এই আইনে।

এ বিভাগের আরো খবর