বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এলডিসির সুবিধা আরও ১২ বছর ধরে রাখার চেষ্টা

  •    
  • ২৯ মে, ২০২১ ২১:৩১

‘এই উত্তরণ প্রক্রিয়ায় দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে দেশের উদ্যোক্তাদের যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে না হয়, তার জন্য বিশ্ব থেকে পাওয়া চলমান বাণিজ্য সুবিধা আরও ১২ বছর অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে সরকার।’

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পরও বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে পাওয়া সুবিধাগুলো আরও ১২ বছর অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে সরকার।

শনিবার রাজধানীতে এক ওয়েবিনারে এই তথ্য দিয়েছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত এই ওয়েবিনারের বিষয় ছিল ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অগ্রযাত্রা’।

২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হবে। এটি বাংলাদেশের জন্য মর্যাদার বিষয় হলেও একই সঙ্গে আবার দুশ্চিন্তারও।

কারণ, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বেশ কিছু বাণিজ্য ও কর সুবিধা পায় বাংলাদেশ, যেটি এই উত্তরণের পর বন্ধ হয়ে যাবে। আর নতুন পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, ‘এই উত্তরণ প্রক্রিয়ায় দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে দেশের উদ্যোক্তাদের যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে না হয়, তার জন্য বিশ্ব থেকে পাওয়া চলমান বাণিজ্য সুবিধা আরও ১২ বছর অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে সরকার।’

এজন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সঙ্গে সরকার আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

একই সঙ্গে বিশ্বের ১১টি দেশের সঙ্গে প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যগ্রিমেন্ট -পিটিএ এবং ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট -এফটিএ চুক্তি করার জন্যও সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব জানান, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় বেসরকারি খাতের অবদান থাকবে প্রায় ৮১ শতাংশ। এ অবস্থায় এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশীয় উদ্যোক্তাদের এখনই প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ রাখেন তিনি।

ফাতিমা আমিন বলেন, ‘বাংলাদেশের হাতে আরও পাঁচ বছর সময় রয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই দেশের মানব সম্পদ উন্নয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা গ্রহণের জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণেও উদ্যোক্তাদের প্রতি আরও বেশি হারে মনোনিবেশ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের বিষয়টি নিয়ে ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এতে পণ্য উৎপাদন ব্যয়ও খুব বেশি বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই। তবে আমাদেরকে প্রতিযোগী সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। নাগরিকদের আরও ভালো সেবা প্রদান করতে হবে।’

তিনি এন, চীন উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্ত্বেও সারা পৃথিবীতে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছে। বাংলাদেশেরও নিজস্ব একটি বৃহৎ বাজার রয়েছে। এর চাহিদা মেটাতে আমাদের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি এশিয় ও আঞ্চলিক দেশগুলোর বাজারের প্রতিও মনোনিবেশ করতে হবে।

এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবার সহযোগিতা নিশ্চিতকল্পে ইতোমধ্যে একটি উচ্চক্ষমতার স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গঠিত কমিটি ভবিষ্যতে সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রদানে সক্ষম হবে বলেও আশা করেন কায়কাউস।

এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন সরকার ঘোষিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলে, নিটওয়্যার ও ওভেন শিল্পে আরও ভ্যালু অ্যাডিশন করা গেলে দেশে এ খাতের বিনিয়োগ বাড়বে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেগোশিয়েশনের দক্ষতা বৃদ্ধি, রপ্তানিমুখী পণ্যের বহুমুখীকরণ, মানবসম্পদ ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা উন্নয়ন, কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রয়োজনীয় সংষ্কার জরুরি।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা গ্রহণ, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা এবং সর্বোপরি সরকারি ও বেসরকারিখাত একযোগে কাজ করলে এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকবিলা সহজ হবে বলেও মনে করেন তিনি।

ডব্লিউটিও-এর এলডিসি ইউনিট অফ দি ডেভেলপমেন্ট ডিভিশন-এর প্রধান তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘গত এক দশকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করা এবং গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারণ, রপ্তানিমুখী পণ্যকে সহায়তা দিয়ে যেতে হবে।’

এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবীর বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণ আমাদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ। তবে এর জন্য আমাদেরকে প্রস্তুতি নিতে হবে।’

তিনি ডাটাবেইজ তৈরি, ডাটা বিশ্লেষণ সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা উন্নয়ন এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রস্তুতি নেয়ার তাগিদ দেন।

বাণিজ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অধীনে চিফ নেগোশিয়েটর নিয়োগ করারও প্রস্তাব করেন তিনি।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে আমাদেরকে দুর্নীতি হ্রাস এবং বিদেশে পুঁজি পাচার রোধ করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

রপ্তানিমুখী পণ্যের জন্য সহায়ক নীতিমালা প্রদানের পাশাপাশি বাংলাদেশের নতুন সমুদ্রসীমায় গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম বাড়ানোর প্রস্তাবও করেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর