গেল সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় উল্লম্ফন হয়েছে। প্রায় দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে ঠেকেছে মূল্যবান ধাতুটির দাম। এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারেও।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশীয় বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। ভরিপ্রতি বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ৩৩২ টাকা, যা কার্যকর করা হয়েছে সোমবার দুপুর থেকেই।
দাম বাড়ানোর পর দেশের বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) স্বর্ণের প্রতি ভরির দাম দাঁড়িয়েছে ৭১ হাজার ৪৪২ টাকা। গত ১০ মার্চ থেকে দেশে একই মানের স্বর্ণের ভরিপ্রতি দাম ছিল ৬৯ হাজার ১১০ টাকা।
দাম বাড়ানোর কারণ সম্পর্কে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট ও নানা জটিল সমীকরণে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ এবং আমদানি পর্যায়ে শুল্ক জটিলতার কারণে দেশীয় গোল্ড ডিলাররা চাহিদার বিপরীতে স্বর্ণবার অমদানি করতে পারছেন না। এতে দেশীয় বুলিয়ন বা পোদ্দার মার্কেটে স্বর্ণের দাম বেড়েছে।
বাজুসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার দুপুর একটা থেকেই বাংলাদেশের বাজারে স্বর্ণ ও রোপ্যর নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজুসের সভাপতি এনামুল হক খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা কোভিডের কারণে ঈদের মধ্যে স্বর্ণের বাজারে হাত দিতে চাইনি। কিন্তু উপায় ছিল না। গত মার্চ-এপ্রিলে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ক্রমাগত বেড়েছে। আমরা পর্যবেক্ষণে রাখছিলাম দাম কমে কি না। গত এক সপ্তাহ ধর সর্বোচ্চ দামে উঠে বাজার এখন স্থির রয়েছে। তাই যখন মনে হলো সহসা এ দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই তখন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। তবে এতে বেচাকেনায় কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে।’
তিনি জানান, নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ১২৫ টাকা। ভরির (১১.৬৬৪গ্রাম) মূল্য দাঁড়ায় ৭১ হাজার ৪৪২ টাকা। বেড়েছে ২৩৩২ টাকা। একই পরিমাণ দাম বেড়ে ২১ ক্যারেটের দাম দাঁড়িয়েছে ৬৮ হাজার ২৯২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ৫৯ হাজার ৫৪৪ টাকা, সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণে দাম দাঁড়িয়েছে ৪৯ হাজার ২২২ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বর্ণের দেশীয় বাজারনির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় এ বছর তিন দফায় সাড়ে ৫ হাজার টাকা কমেছিল স্বর্ণের দাম। এর মধ্যে মার্চে কমেছিল দুই দফায়। এ বছরের ১৩ জানুয়ারি, ২ মার্চ ও ১০ মার্চ দাম কমে সোমবার সকাল পর্যন্ত দেশে সর্বোচ্চ মানের স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছিল ৬৯ হাজার ১১০ টাকা। এ ছাড়া, ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬৫ হাজার ৯৬০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৫৭ হাজার ২১২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৪৬ হাজার ৮৯০ টাকা বিক্রি হয়েছিল।
আগের মতোই রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেট রুপার ভরি ১ হাজার ৫১৬ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ হাজার ৪৩৪ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ২২৪ টাকা, সনাতন পদ্ধতির রূপা প্রতি ভরি ৯৩৩ টাকায় বিক্রি হবে।