বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকপণ্যে কর বাড়ানোর দাবি

  •    
  • ১০ মে, ২০২১ ০০:০১

বিশ্বে সর্বোচ্চ তামাক ব্যবহারকারী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম প্রথম দিকে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত রোগে প্রাণ হারায় এবং অনেকে অকালে পঙ্গু হয়ে যান। সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুল প্রভৃতি তামাকজাত পণ্য সহজলভ্য হওয়ায় এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না।’

২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী দেশকে তামাকমুক্ত করতে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

জাতীয় বাজেটকে সামনে রেখে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সিগারেটসহ সকল তামাক পণ্যে কর বাড়ানোর দাবিতে বেসরকারি মানবাধিকার ও গবেষণা সংস্থা ভয়েস আয়োজিত এক অনলাইন মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে মন্ত্রী এ অঙ্গীকার করেন।

তামাক পণ্যে কর বাড়ানোর সপক্ষে নিজের জোরালো অবস্থান জানিয়ে এর বিরুদ্ধে সবাইকে সংঘবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘তামাক যে ক্ষতিকর পণ্য তা নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। যেহেতু আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজে ঘোষণা দিয়েছেন যে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করবেন তখন এটাই সুবর্ণ সুযোগ তামাকের ওপর কর বৃদ্ধি করার।’

তামাক পণ্যের ওপর সুনির্দিষ্ট কর আরোপ করে দাম বাড়ানোর মাধ্যমে সকল তামাকজাত পণ্যকে জনগণের ক্রয়সীমার বাইরে নিয়ে যাওয়া স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য জরুরি বলে মন্তব্য করেন আয়োজনে অংশ নেয়া বিশিষ্টজনেরা।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, এক শতাংশ স্বাস্থ্য সারচার্জের পাশাপাশি এক শতাংশ সারচার্জ যদি সচেতনতা বাড়াতে নেয়া যায় তা হলে ভালো হবে।

‘প্রধানমন্ত্রী তামাকমুক্ত দেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু সব কাজ উনি একা করতে পারবেন না। যারা কাজ করতে পারবেন তাদের এ বিষয়ে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।’

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভয়েসের প্রকল্প সমন্বয়ক জায়েদ সিদ্দিকী।

মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রচলিত তামাক কর ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল। যেখানে বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন মাত্রার কর আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া অতীতে তামাকের ওপর কর আরোপ করে ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করা হলেও মানুষের আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তামাকের দাম বৃদ্ধি না পাওয়ায় পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হয়নি বলে জানা গেছে।’

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে ২০১৫-১৬ সালের তুলনায় ২০১৭-১৮ সালে মাথাপিছু জাতীয় আয় (নমিন্যাল) বেড়েছে ২৫.৪ শতাংশ। কিন্তু এ সময়ে বেশির ভাগ সিগারেটের দাম প্রায় অপরিবর্তিত থেকেছে বা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও উঠে আসে মূল প্রবন্ধে।

ভয়েসের প্রকল্প সমন্বয়ক জায়েদ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিশেষ করে নিম্নমানের সিগারেটে কর বাড়ানোর মাত্রা নগণ্য হওয়ায় তামাকপণ্য থেকে গেছে সহজলভ্য। এর ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে বিড়ি সিগারেটের মতো ক্ষতিকর পণ্যের ব্যবহার কমানো সম্ভব হয়নি।’

বিশ্বে সর্বোচ্চ তামাক ব্যবহারকারী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম প্রথম দিকে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত রোগে প্রাণ হারায় এবং অনেকে অকালে পঙ্গু হয়ে যান। সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুল প্রভৃতি তামাকজাত পণ্য সহজলভ্য হওয়ায় এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না।’

আর এসব বিবেচনায় নিয়ে, নিম্নমানের সিগারেটে ৫৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও বাকিগুলোর ওপর ৬৫ শতাংশ শুল্কের পরিবর্তে সকল মানের সিগারেটের ওপর সমভাবে কর বৃদ্ধির প্রস্তাব রাখে প্রতিষ্ঠানটি।

সব ধরনের সিগারেটের ওপর সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক ঘোষিত খুচরা মূল্যের ৬৫ শতাংশ করার পাশাপাশি ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখারও দাবি জানানো হয়।

ফিল্টারবিহীন বিড়ির ওপর সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক প্রস্তাব ঘোষিত খুচরা মূল্যের ৪৫ শতাংশ করা এবং গুল ও জর্দার ওপরে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক খুচরা মূল্যের ৬৬ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখে ভয়েস।

আলোচনায় বলা হয়, যদি এ কর ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা যায়, তবে ১১ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহী হবে এবং ৮ লাখেরও বেশি তরুণ ধূমপানে নিরুৎসাহিত হবে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে ৩ লাখ ৯০ হাজার বর্তমান ধূমপায়ী এবং ৪ লাখ তরুণের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।

সংসদ সদস্য শিরিন আখতার বলেন, ‘যা ক্ষতিকর সেটাকে ক্ষতিকর বিবেচনা করে শক্ত হাতে এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সংসদকে ধূমপানমুক্ত করতে হবে। শুধু সংসদে নয়, স্থানীয় পর্যায়ে, উপজেলা পর্যায়ে, ইউনিয়নের মেম্বারদের এ বিষয়ে কথা বলতে হবে।’

রাজনৈতিক দলগুলোকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তামাক বিষয়ে আগামীতে নীতিমালা করতে হবে, এই বিষয়ে রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর