বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গরম মসলার বাজার ঠান্ডা

  •    
  • ৭ মে, ২০২১ ০৯:৫৯

বাজার ঘুরে দেখা গেছে বিভিন্ন মসলার দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। লকডাউনে মানুষের অনুষ্ঠান ও দাওয়াত কমে যাওয়ায় চাহিদা কমে গেছে।

ঈদের বাজার সরগরম হয়ে উঠলেও মসলার বাজারে এখনও উত্তাপ লাগেনি।

লকডাউনে প্রায় মাসখানেক ধরে দোকানপাট বন্ধ ছিল। এখন ঈদের আগে আগে বাজার খুলে গেছে। তবে ভিড় নেই গরম মসলার দোকানে।

গরম মসলার দাম বাড়েনি বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। উল্টো দাম কিছুটা কমেছে। আর তাতে ক্রেতারা সন্তুষ্ট। দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই। তাই আগেভাগে মসলা কিনতেও আগ্রহ কম তাদের।

এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, জিরা, ধনে, তেজপাতাসহ কয়েকটি মসলার সন্নিবেশ বাঙালির রান্নাঘরে গরম মসলা নামে পরিচিত এবং এটি ছাড়া সৌখিন খাবার তার মুখেই রোচে না।

মালিবাগ বাজারে কেনাকাটা করতে আসা আরাফাত হোসেন জানান, ঈদের আনন্দ মূলত আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে। করোনার কারণে এখন অতিথি আপ্যায়ন বন্ধ। এ কারণে গরম মসলার দিকে ঝোঁক কম।

বিক্রেতারা বলছেন, মসলার দাম বাড়েনি, এ কারণেও কেনায় তাড়াহুড়ো কম। পরিবারের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই সংগ্রহ করছেন ক্রেতারা।

রাজধানীতে মসলার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে। সেখানেও এখন নেই আগের মতো গরম মসলা কেনার ভিড়। বিভিন্ন এলাকার খুচরা ব্যবসায়ীরা মসলা নিচ্ছেন। কিন্ত নেই ব্যক্তি পর্যায়ে মসলা কেনার তোড়জোড়।

মৌলভীবাজারের মসলা ব্যবসায়ী এবি ট্রেডিংয়ের অমর কান্তি দাস নিউজবাংলাকে বলেন, মসলার দাম নতুন করে বাড়েনি। আগে যে দামে ছিল, এখন সে দামই আছে।

কাজুবাদামসহ নানা ধরনের মসলার পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতা। ছবি: নিউজবাংলা

ক্রেতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈদের আগে এ সময়ে অনেকে বাসায় বড় আয়োজন করতেন। ফলে প্রচুর মসলা লাগত। মৌলভীবাজারে কম দামে গরম মসলা কিনতে ভিড় হতো। এখন সেসব ক্রেতা আসছে না। তারা পাড়া-মহল্লার দোকান থেকে অল্প স্বল্প মসলা কিনছেন। করোনার কারণে কেউ কারো বাসায় যায় না। আর বড় অনুষ্ঠানেরও আয়োজন হয় না। এখন যেসব ক্রেতা আসছেন, তারা রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা বিক্রেতা।

মসলার দাম কমেছে

মৌলভীবাজার ঘুরে দেখা গেছে, জিরা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজিতে। মাস খানেক আগে যা ছিল ৩৫০ টাকা। এলাচ ২ হাজার ২শ টাকা থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা কেজি, আগে যা ছিল ২ হাজার ৮শ টাকা। দারুচিনি ৩৩০ টাকা থেকে ৩৪০ টাকা কেজি। আগে বিক্রি হয়েছে ৩৭৫ টাকা। গোলমরিচ সাদা আগে বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকায়, এখন ৮৪০ টাকা এবং কালো গোলমরিচ বিক্রি হয়েছে ৫০০ টাকায়, এখন দাম ৪৬০ টাকা কেজি। কিসমিস ২০০ টাকা কেজি। আগে ছিল ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা।

কাজুবাদাম আগে বিক্রি হয়েছে ৮০০ টাকা, এখন ৭০০ টাকা কেজি। কাঠবাদাম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি। আগে ছিল ৭৫০ টাকা। লবঙ্গ কেজি ৮৫০ টাকা থেকে কমে ৭০০ টাকা হয়েছে। জয়ফল ১ হাজার ৪৫০ টাকা থেকে কমে ১৩শ টাকা কেজি হয়েছে। মিষ্টি জিরা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। এর দাম আগে এমনই ছিল।একমাত্র আলুবোখারার দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। আগে বিক্রি হতো ২৮০ টাকায়, এখন বিক্রি হচ্ছে ৪১০ টাকা কেজি।

তবে এমন দরের সঙ্গে বাড়তি খরচ যোগ হয়ে পাড়ামহল্লায় কেজি প্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে এসব মসলা।

মালিবাগ রেলগেইট বাজার, খিলগাঁও বাজার ও বাসাবো কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে সবারই একই বক্তব্য, মসলার দাম বাড়েনি। আগের দামেই স্থিতিশীল আছে।

বাসাবো কাঁচাবাজারের মাসুম স্টোরের কর্মচারী ইব্রাহিম জানান, বর্তমানে দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজিতে। এলাচের কেজি ২ হাজার ৬শ টাকা। লঙের কেজি ১ হাজার টাকা। জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। কাঠবাদাম কেজি ৭০০ টাকা। কাজুবাদামের কেজি ৮০০ টাকা। কিসমিস বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকা কেজিতে। লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি। জয়ফল ১৫০০ টাকা কেজি।

নানা ধরনের মসলার পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতা। ছবি: নিউজবাংলা

মৌলভিবাজারের সুজন স্টোরের সত্ত্বাধিকারী সুজন জানান, ঈদ সামনে রেখে নতুন করে মসলার দাম বাড়েনি। আগের দামই এখন আছে।সবশেষ কবে দাম কমেছিল, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে মসলার বাজার নিয়ন্ত্রণ করে কিছু সিন্ডিকেট। তারা মনে করে, ঈদের দুই মাস আগে সব মসলার দাম বাড়িয়ে দেবে। ঈদ আসার পর সেখানে থেকে ২০ টাকা ৩০ টাকা কমাবে। আর বলবে, মসলার দাম কমেছে। কিন্তু আগেই তো মসলার দাম যা বাড়ানোর তা বাড়ানো হয়েছে।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুম আরেফিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদ সামনে রেখে আমরা প্রতিদিনই বাজার মনিটর করছি। বুধবারও রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মনিটরিং চলছে।’

ঈদ এলেই বাজারে গরম মসলার দামে প্রভাব পড়ে। এক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকারের কোনো তদারকি আছে কি না জানতে চাইলে মাসুম আরেফিন বলেন, ‘বাজার মনিটরিংয়ের সময় আলাদা করে মসলার বাজার দেখা হয় না। বরং যে বাজারে যাওয়া হয়, সেখানকার সব ধরনের পণ্যেরই দাম মনিটরিং করা হচ্ছে। দাম কেউ অতিরঞ্জিত করলেই তাকে জরিমানা করা হচ্ছে।’

বাংলাদেশ পাইকারী গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘কে কিনবে এখন মসলা? বড় কোনো আয়োজন নেই। অনুষ্ঠান নেই। ইফতার পার্টি নেই। এ সময় মসলার দাম বাড়ে সত্য, কিন্তু গত দুই বছর বাড়েনি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।’তিনি বলেন, গত বছর রমজানের ঈদের জন্য যে মসলা আমদানি হয়েছিল সেগুলো কোরবানির ঈদে কিছু বিক্রি হয়েছে। আর এ বছর বিক্রি হচ্ছে। যারা আমদানি করেছিল তারাও বিক্রি করতে না পেরে ঋণ খেলাপি হওয়ার পথে। গুদামে মসলার প্রচুর মজুদ। ফলে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।

এ বিভাগের আরো খবর