পুঁজিবাজারে প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব আসছে বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘সিঙ্গাপুর, কানাডা, আমেরিকা থেকেও প্রবাসীরা এখন পুঁজিবাজারের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন।’
বৃহস্পতিবার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটিজ অ্যাসোসিয়েশন ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ)-এর যৌথ উদ্যোগে এক প্রাক বাজেট আলোচনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।
নতুন উদ্যোক্তাদের তহবিল দিতে বন্ড ইস্যু করার জন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটিজকে পরামর্শ দেন বিএসইসিপ্রধান।
বলেন, ‘বর্তমান কমিশন ব্যবসাবান্ধব। স্টার্টআপ উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে কমিশন একটি ভেঞ্চার কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছে। আরও দুটি আবেদন জমা আছে।’
এ খাতের এখনই সুশাসন নিশ্চিত করার তাগিদও দেন তিনি। বলেন, ‘তা না হলে গুটি কয়েক দুষ্টলোকের কারণে পুরো সেক্টরটি হুমকির মুখে পড়বে।’
স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর জন্য বিএসইসির আলাদা উদ্যোগ আছে বলেও জানান শিবলী রুবাইয়াত। বলেন, ‘তাদের জন্য আলাদা এসএমই বোর্ড গঠন করেছি। এরই মধ্যে একটি কোম্পানিকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তারা ব্যবসা বাণিজ্য করে ভালো অবস্থানে গেলে পরে মূল মার্কটে নিয়ে আসা হবে।’
আগামী এক মাসের মধ্যে আরও চার থেকে পাঁচটি কোম্পানির অনুমোদন দেয়া হবে বলেও জানান বিএসইসিপ্রধান।
বিএসইসি কমিশনার শেখ সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যেসব শহরে প্রযুক্তির সমৃদ্ধি রয়েছে, স্টার্টআপগুলোকে শুধু সেসব শহর আর উচ্চশিক্ষিত ও সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। তাদের ব্যবসায়ে ভিন্নতা আনতে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে এবং অধিকসংখ্যক মানুষের কাছে সেবা পৌঁছাতে হবে।
ভার্চুয়ালি এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, ‘আমিও চাই নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হোক। তবে উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সুযোগসুবিধা দিতে হবে। পাশাপাশি তাদের বাজেটে নীতিগত সুবিধাও দেয়া উচিত। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় আছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কাজ করছে। সবার প্রস্তাবগুলো সমন্বয় করে এগিয়ে যেতে হবে।’
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামিম আহসনের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ খান।
ভার্চুয়াল আলোচনায় পরিকল্পনামন্ত্রী, বিএসইসি চেয়ারম্যানসহ অন্যরা
তিনি বলেন, ‘আজকের স্টার্টআপগুলোই বাংলাদেশে আগামী দশকের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ সরকার প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে; তারই ধারাবাহিকতায় ক্রমবর্ধমান স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলে এশিয়ার অনাবিষ্কৃত সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য আমি সকল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও অংশীদারদের প্রতি অনুরোধ জানাই।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের বলেন, ‘স্টার্টআপ এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে বর্তমান নীতিমালার অধীনে সম্ভব সর্বোচ্চ পরিমাণ সহায়তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতিমধ্যেই ঋণসুবিধার জন্য বাজারে চাহিদা তৈরি হয়েছে এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে ব্যাংকিং খাতকে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে।’
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম- সিএমজেএফ-এর সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।