বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বারবার তারিখ দিয়েও ফ্লাইটে নেই রিজেন্ট

  •    
  • ৪ মে, ২০২১ ০৮:৩৭

বেবিচক ও এনবিআরের কাছে প্রতিষ্ঠানটির দেনা ছাড়িয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। বন্ধ হওয়ার আগে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা টিকিটের টাকাও ফেরত দেয়নি কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সরকারি ফি বাবদ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এয়ারলাইনসটির কাছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা পায়।

বারবার তারিখ নির্ধারণ করেও ফ্লাইটে ফিরতে পারছে না এক বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকা রিজেন্ট এয়ার। বেসরকারি এই এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা পরিস্থিতির কারণেই এ অবস্থা।

দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর প্রেক্ষাপটে গত বছরের মার্চ থেকে সব ধরনের ফ্লাইট চলাচল সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করে বেসরকারি এয়ারলাইনসটি। সেই থেকে পাইলট ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আছেন অবৈতনিক ছুটিতে।

এরই মধ্যে বেবিচক ও এনবিআরের কাছে প্রতিষ্ঠানটির দেনা ছাড়িয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। বন্ধ হওয়ার আগে যাত্রীদের কাছে বিক্রি করা টিকিটের টাকাও ফেরত দেয়নি কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সরকারি ফি বাবদ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এয়ারলাইনসটির কাছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা পায়।

এ ছাড়া তাদের কাছে এনবিআরের পাওনার পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি টাকা। ফ্লাইটে ফিরতে বেবিচককে ধীরে ধীরে পাওনা পরিশোধের কথা বলা হলেও কয়েক মাস ধরে কোনো টাকাই দিচ্ছে না রিজেন্ট।

এই এক বছরে বেশ কয়েকবারই ফ্লাইটে ফেরার ঘোষণা দিয়েছিল রিজেন্ট কর্তৃপক্ষ। সবশেষ চলতি বছরের মার্চে ফ্লাইট শুরুর কথা জানালেও বাস্তবায়ন হয়নি সে উদ্যোগও।

এয়ারলাইনসটির বহরে বর্তমানে রয়েছে দুটি বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন ও একটি ড্যাশ এইট মডেলের উড়োজাহাজ। কোনো উড়োজাহাজই বর্তমানে ওড়ার মতো অবস্থায় নেই। এর মধ্যে গত বছরের ডিসেম্বরে একটি বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন উড়োজাহাজের পরীক্ষামূলক উড়াল সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি দুটির ইঞ্জিন এখনও দেশে আসেনি।

এই এক বছরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো বেতনও দেয়নি এয়ারলাইনসটি। পাইলটদের অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করার ছাড়পত্রও দেয়া হয়নি। রিজেন্টে কর্মরত রয়েছেন ২০ জন পাইলট। এদের মধ্যে ১১ জন ক্যাপ্টেন আর ৯ জন ফার্স্ট অফিসার। গত এক বছরে একেকজন পাইলটের বেতন জমেছে গড়ে ১ কোটি টাকারও বেশি। আর একেকজন ফার্স্ট অফিসারের অর্ধ কোটির বেশি।

শুধু বকেয়া বেতনই নয়, বন্ধ হওয়ার পর পাইলটদের সক্রিয় রাখতে বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণগুলোও শেষ করেনি রিজেন্ট। আন্তর্জাতিক বেসমারিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিয়মানুসারে প্রত্যেক পাইলটকে নির্দিষ্ট সময় পরপর বাধ্যতামূলকভাবে সিম্যুলেটরে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হয়।

রিজেন্ট এয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশিষ রায় চৌধুরী নিউজবাংলাকে জানান, ফ্লাইটে ফিরতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘রিজেন্টের ব্যাপারে আমরা অলরেডি পার্টস নিয়ে এসেছি। ইঞ্জিন এলেই আমরা এটা স্টার্ট করে দেব। ইঞ্জিনও আমাদের রেডি আছে, অলরেডি ইমপোর্টের জন্য দিয়েছি।

‘এখন থাকবে তিনটা এয়ারক্রাফট। তিনটা সেভেন থ্রি সেভেন আর একটি ড্যাশ। এগুলো দিয়েই প্রাথমিকভাবে ফ্লাইট শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। শুরুতে অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে এবং পরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হবে।’

তবে কবে নাগাদ ফ্লাইট শুরু হবে তার কোনো দিনক্ষণ বলতে পারেননি তিনি।

অবশ্য বেবিচক বলছে, রিজেন্টের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। আকাশপথের নিয়ন্ত্রক এ সংস্থার চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রিজেন্টের সাথে এখনও কথাবার্তা হচ্ছে। তাদের বিভিন্ন রকম সহায়তা দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছি। তারা আসতে চায়, কিন্তু কংক্রিট কোনো এভিডেন্স এখনও দেখিনি ফিরে আসার মতো।

‘তারা এয়ারক্রাফট সার্ভিসিং করাচ্ছে। এয়ারক্রাফট রেডি করছে বলে জানিয়েছে, কিন্তু আসলে বাস্তবে তাদের অগ্রগতিতে আমি সন্তুষ্ট না।’

রিজেন্টের কাছে বেবিচকের পাওনা টাকাও শোধ করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, পাওনা এখনও রয়ে গেছে। তারা অনেক দিন ধরে কোনো টাকা শোধ করছে না।

রিজেন্ট এয়ার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ২০১০ সালের ১০ নভেম্বর। এক দশক যেতে না যেতেই জোর ধাক্কা খেল এয়ারলাইনসটি। বন্ধ হওয়ার আগে দেশের ভেতরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং আন্তর্জাতিক গন্তব্য কলকাতা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, মাসকট ও দোহায় ফ্লাইট চালাচ্ছিল এয়ারলাইনসটি।

প্রায় দুই যুগে দেশে ১০টি বেসরকারি এয়ারলাইনস যাত্রা শুরু করলেও এখন টিকে আছে মাত্র দুটি। এ সময়ের মধ্যে একে একে পাখা গুটিয়েছে অ্যারো বেঙ্গল, এয়ার পারাবত, রয়্যাল বেঙ্গল, এয়ার বাংলাদেশ, জিএমজি এয়ারলাইন্স, বেস্ট এয়ার ও ইউনাইটেড এয়ার। এর মধ্যে শুধু জিএমজি ও ইউনাইটেড আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালাত।

এ বিভাগের আরো খবর